৩০শে এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তাপদাহে পুড়ছে যশোর
তাপদাহে পুড়ছে যশোর

নিজস্ব প্রতিবেদক : দুপুর দুইটা। শহরের ধর্মতলা মোড়ে রিকশার হ্যান্ডেল ধরে গরমে হাঁসফাঁস করছিলেন পঞ্চাশোর্ধ্ব আনিসুর রহমান। মাথায় গামছা বাঁধা এই রিকশাচালক দাবদাহে দর দর করে ঘামছেন। পড়েন থাকা লুঙ্গী ও শার্ট ভিজে একাকার। তার পরে যাত্রী দেখলেই গন্তব্যের কথা জিজ্ঞেস করছেন। উত্তর না পেয়ে চোখ ঘুরিয়ে লম্বা দৃষ্টি রাখছেন সড়কে হেঁটে আসা অন্য মানুষগুলোর দিকে।

আনিসুর রহমান বলেন, ১৫ বছর ধরে এই শহরে প্যাডেল মেরে রিকশা চালাই। তবে চৈত্র-বৈশাখ মাসে এমন গরম পড়তে জীবনে দেখেনি। সকাল থেকেই বেলা ডোবা না পর্যন্ত রোদের তেজ খুব। একদিকে ওপর থেকে মাথায় রোদ পড়ছে, অন্যদিকে নিচে থেকে পিচের তাপ মুখে লেগে যেন ঝলসে যাচ্ছে সব।’

বৃষ্টি না হওয়ায় তীব্র দাবদাহে পুড়ছে যশোর। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এখানকার জনজীবন। সূর্যের প্রখর তাপে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। প্রচণ্ড রোদে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না শ্রমিক ও দিনমজুরসহ খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। এসব খেটে খাওয়া মানুষ সামান্য স্বস্তি ও শরীর শীতল করতে ছুটছেন গাছের ছায়াতলে। অতিরিক্ত গরমে যারা রোজা থাকছেন না তারা ছুটছেন বিভিন্ন শরবত ও পানিয়ের দোকানে। কোথাও কোথাও পুকুরে নেমে প্রশান্তির সন্ধান করছেন অনেকে। প্রতিদিন তীব্র তাপদাহ থাকার পরেও ঈদ আসন্ন হওয়ায় ইচ্ছা না থাকলেও অনেকেই কাজের সন্ধানে বাইরে বের হচ্ছেন। অনেকে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়েও প্রিয়জনের জন্য করছেন ঈদের কেনাকাটা। আবার রাতে তাপমাত্রা কিছুট কমায় অনেকেই রাতেই সেরে নিচ্ছেন ঈদের কেনাকাটা।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ছিল ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ। বাতাসে আদ্রতা বেশি থাকায় গরমও অনুভূত হয়েছে বেশি। এদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দড়াটানায় রিকশাচালক সুমন, জুনাঈদ ও খলিল বলেন, এই গরমে রিকশা চালানো যাচ্ছে না। কিন্তু গরমের ভয়ে বসে থাকলে তো জীবন চলে না। দাবদাহ আর তীব্র গরমে তাই ঘামে ভিজে রিকশা চালিয়ে যাচ্ছি। তারা আরও বলেন, বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাস আসেনি, এরপরেও এখনই এই গরম। বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাস আসলে কি হবে আলস্নাই জানেন।

যশোর সদর উপজেলার সতিঘাটা গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান জানান, ভাই শহরে আসছি কিছু টুকটাক কাজ করতে। তবে যে রোদ এতে ভয় হচ্ছে বাইরে যেতে। তাই ছায়া দেখে দাঁড়িয়ে আছি। আসলে শহর বলেন আর গ্রাম বলেন বর্তমানে গাছের পরিমাণ খুব কম। কোথাও আরাম নেই।

ফুলবাড়ী গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস জানান, শীতভাব যেতে না যেতেই গরম একেবারে কাবু করে দিচ্ছে। কোনভাবেই রোদে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। মাঠে কাজ করা একেবারে অসম্ভব। অপর কৃষক লালন মিয়া জানান, এ বছর শুরম্ন থেকে খরা পড়া শুরম্ন করেছে। সামনের অবস্থা মনে হয় আরো ভয়াবহ হবে। আজ যে গরম, এ গরমে মাঠে কোন ভাবে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। আর রোজা থেকে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram