এস হাসমী সাজু : যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে অনুদানের কিট দিয়ে ডেঙ্গু রোগীদের প্লাজমা পরীক্ষা করা হচ্ছে। বুধবার হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে ৫০জনের এনএস-১ কিটের মাধ্যমে রোগীদের প্লাজমা পরীক্ষা করে ৫জনের শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস পাওয়া গেছে। বাকি ৪৫ জনের নেগেটিভ ফল পাওয়া গেছে।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে এডিশনাল এসপি বেলাল হোসেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে ৩শটি এনএস-১ ডেঙ্গু কিট প্রদান করেন। কিট সরবরাহ না পাওয়ায় অনুদানের কিট দিয়ে ডেঙ্গু রোগীদের প্লাজমা পরীক্ষা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশিদ।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় আরও ২১জনের শরীরের নতুন করে ডেঙ্গুর উপসর্গ পাওয়া গেছে। এ সময় যশোর ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ১০জনের শরীরের নতুন করে ডেঙ্গুর উপসর্গ পাওয়া গেছে। এসময় সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন ১০জনসহ জেলায় ১৪জন।
হাসপাতালের ডেঙ্গু কর্নারের ইনর্চাজ হাসি আরা বেগম জানান, হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় (অর্থাৎ মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুরোগে আক্রান্ত হয়ে মহিলাসহ ১০জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে পুরুষ ৬জন, মহিলা ৩জন এবং শিশু রয়েছে ১জন। বর্তমানে হাসপাতালে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ৩১জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে যশোর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় গত ২৪ঘণ্টায় (অর্থাৎ মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুরোগে নতুন করে মহিলাসহ ২১জন আক্রান্ত হয়ে। এর মধ্যে জেনারেল হাসপাতালে ১০জন, অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২জন, ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪জন, শার্শ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২জন এবং কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অপরদিকে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের ২৫তারিখ সকাল ৮টা পর্যন্ত জেলায় মোট ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ২৪৪জন। এর মধ্যে ২জনের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৮৫জন। বর্তমানে জেলায় ৫৭জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাসপাতালের প্যাথলজিস্ট পারভেজ মোশারফ জানান, বর্তমানে হাসপাতালে রোগী প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগে ডেঙ্গু রোগী ছিল না বলে কিটের প্রয়োজন হয়নি। কিন্ত গত মাস থেকে রোগী বাড়ছে তাই পরীক্ষার জন্য কিটের প্রয়োজন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে অনুদানের কিট দিয়ে রোগীর প্লাজমা পরীক্ষা করা হচ্ছে। বুধবার হাসপাতালে ৫০জনের পরীক্ষা করে ৫জনের ডেঙ্গুর ভাইরাস পাওয়া গেছে।
এদিকে স্টোরকিপার সাইফুল ইসলাম বলেন, মোট ২হাজার টিকের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। দ্রুত কিট হাতে পাওয়া যাবে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশিদ জানান, হাসপাতালে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের প্লাজমা পরীক্ষা করা কিট সরবরাহ নেই। কিটের চাহিদা দেওয়া হয়েছে দ্রুত সরবরাহ পাবেন বলে আশা করছেন।
তিনি আরও জানান ডেঙ্গুর পরীক্ষার কিট সংকট থাকায় বুধবার যশোর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এডিশনাল এসপি বেলাল হোসেন ৩শটি এনএস-১ কিট হস্তান্তর করেছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাক্তার নাজমুস সাদিক রাসেল। এর আগে জেলা আওয়ামী লীগ ও ওষুধ কোম্পানি এবং নিজের অর্থে কিট কিনে প্যাথলজিতে সরবরাহ করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডাক্তার বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন,‘ ‘যশোরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য জেলায় মাইকিং উপজেলায় নিয়মিত অবহিতকরণ সভা করা হচ্ছে।’ হাসপাতালে যাতে দ্রুত ডেঙ্গু কিট সরকারি ভাবে সরবরাহ করা যায় সে বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করবেন বলে তিনি জানান।