১৮ই মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য তথ্য অধিকার আইন
116 বার পঠিত

মো. রেজাউল করিম : গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের ৭(১) অনুচ্ছেদে জনগণকে দেশের মালিক হিসেবে ঘোষণা করে মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত তৃতীয় অধ্যায়ের ৩৯ অনুচ্ছেদে প্রত্যেক নাগরিকের চিন্তা, বিবেক ও বাক—স্বাধীনতা অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে।

তাছাড়া, জাতিসংঘ মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের ১৯ ধারা এবং নাগরিক রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির ১৮ ধারায় প্রত্যেক নাগরিকের চিন্তা, বিবেক ও বাক—স্বাধীনতার অধিকার প্রদান করা হয়েছে। তথ্য প্রাপ্তির অধিকার চিন্তা, বিবেক ও বাক—স্বাধীনতার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে সঠিক তথ্য প্রাপ্তির মাধ্যমে দেশের মালিক হিসেবে সাধারণ নাগরিকের ক্ষমতায়ন ঘটে। সঠিক তথ্য প্রাপ্তির অধিকার কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমে সরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং সরকারি ও বিদেশি অর্থায়নে গঠিত বা পরিচালিত বেসরকারি সংস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। ফলে দুর্নীতি হ্রাস ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।

তথ্য অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বহু রাষ্ট্রে ‘তথ্য অধিকার আইন’ আছে। জনগণের তথ্য অধিকার, সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, দুর্নীতি হ্রাস ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যেসংবিধানের মৌলিক অধিকাররূপে স্বীকৃত চিন্তা, বিবেক ও বাক—স্বাধীনতা অধিকারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে তথ্য প্রাপ্তির অধিকারকে সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে তথ্যের অবাধ প্রবাহ ও জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করার নিমিত্তে সরকার ২০০৯ সালে তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করে, যা একই বছর ৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে ৬ এপ্রিল গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

তথ্য অধিকার আইন নাগরিকের ক্ষমতায়নের সঙ্গে জড়িত এবং নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র এবং এর অঙ্গসংগঠন, রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব, প্রশাসন ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করে। ওই আইনের ধারা ৪ এ উলে¬খ আছে, ‘প্রত্যেক নাগারিকের কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে তথ্য পাওয়ার অধিকার রয়েছে এবং কর্তৃপক্ষেও একজন নাগরিককে তথ্য প্রদানে বাধ্য থাকিবে’। সুতরাং এই আইন ক্ষমতাবানদের উপর তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে। আবেদনকারীর আইনগত ভিত্তি (ধারা—৯) হচ্ছে তথ্য প্রদানে অনীহা আইনের লঙ্ঘন এবং তথ্য প্রার্থী আইনি প্রতিকার নিতে পারে। এই বক্তব্য তুলে ধরে যে, তথ্য জনগণের, সরকারের নয়। বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। জনগণের রায়ে সরকার নির্বাচিত হয় এবং জনগণের প্রদত্ত করের টাকায় সরকার চলে। তাই জনগণের চাহিদাকৃত তথ্য দিতে সরকার বাধ্য।

তথ্য অধিকার আইনে ‘তথ্য’ কি?
তথ্য অধিকার আইনে তথ্য বলতে কোন কর্তৃপক্ষের গঠন, কাঠামো ও দাপ্তরিক কর্মকান্ড সংক্রান্ত যে কোন স্মারক, বই, নকশা, মানচিত্র, চুক্তি, তথ্য—উপাত্ত, লগ বহি, আদেশ, বিজ্ঞপ্তি, দলিল, নমুনা, পত্র, প্রতিবেদন, হিসাব বিবরণী, প্রকল্প প্রস্তাব, আলোকচিত্র, অডিও, ভিডিও, অঙ্কিতচিত্র, ফিল্ম, ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়ায় প্রস্তুতকৃত যে কোন ইনস্ট্রুমেন্ট, যান্ত্রিকভাবে পাঠযোগ্য দলিলাদি এবং ভৌতিক গঠন ও বৈশিষ্ট্য নির্বিশেষে অন্য যে কোন তথ্যবহ বস্তু বা এদের প্রতিলিপি অন্তর্ভুক্ত হবেঃ তবে শর্ত থাকে যে, দাপ্তরিক নোট সিট বা নোট সিটের প্রতিলিপি এর অন্তর্ভুক্ত হবে না (ধারা—২ এর চ )।

কে তথ্য পেতে পারে :
তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর ধারা ৪ অনুসারে কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে প্রত্যেক নাগরিকের তথ্য লাভের অধিকার রয়েছে এবং কোন নাগরিকের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ তাকে তথ্য সরবরাহ করতে বাধ্য।

কি কি তথ্য পাওয়া যায় :
তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ এর ৬ ধারা অনুযায়ী নিম্নলিখিত তথ্যসমূহ পাওয়া যায় : প্রত্যেক কর্তৃপক্ষের গৃহীত সিদ্ধান্ত,কার্যক্রম কিংবা সম্পাদিত বা প্রস্তাবিত কর্মকান্ডের সকল তথ্য; কর্তৃপক্ষের সাংগঠনিক কাঠামোর বিবরণ, কার্যক্রম, কর্মকর্তা—কর্মচারীদের দায়িত্ব এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার বিবরণ বা পদ্ধতি; কর্তৃপক্ষের সকল নিয়মকানুন, আইন, অধ্যাদেশ, বিধিমালা, প্রবিধানমালা, প্রজ্ঞাপন, নির্দেশনা, ম্যানুয়াল, ইত্যাদির তালিকাসহ তার নিকট রক্ষিত তথ্যসমূহের শ্রেণী বিন্যাস; কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে কোন ব্যক্তি যে সকল শর্তে লাইসেন্স, পারমিট, অনুদান, বরাদ্দ, সম্মতি, অনুমোদন বা অন্য কোন প্রকার সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন তার বিবরণ এবং উক্তরূপ শর্তের কারণে তার সাথে কোন প্রকার লেনদেন বা চুক্তি সম্পাদনের প্রয়োজন হলে সে সকল শর্তের বিবরণ; কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ কোন নীতি প্রণয়ন বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে ওই সকল নীতি ও সিদ্ধান্তসমূহ।

কি কি তথ্য পাওয়া যায় না:
তথ্য অধিকার আইনের ৭ ধারা অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ কোন নাগরিককে নিম্নলিখিত তথ্যসমূহ প্রদান করতে বাধ্য নয়:
কোন তথ্য প্রকাশের ফলে বাংলাদেশের নিরাপত্তা,অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হতে পারে এরূপ তথ্য; পররাষ্ট্রনীতির কোন বিষয় যার দ্বারা বিদেশি রাষ্ট্রের অথবা আন্তর্জাতিক কোন সংস্থা বা আঞ্চলিক কোন জোট বা সংগঠনের সাথে বিদ্যমান সম্পর্ক ক্ষুণ্ণ হতে পারে এরূপ তথ্য; কোন বিদেশি সরকারের নিকট থেকে প্রাপ্ত কোন গোপনীয় তথ্য; কোন তথ্য প্রকাশের ফলে কোন তৃতীয় পক্ষের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এরূপ বাণিজ্যিক বা ব্যবসায়িক অন্তর্নিহিত গোপনীয়তা বিষয়ক, কপিরাইট বা বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ সম্পর্কিত তথ্য।

কোন তথ্য প্রকাশের ফলে কোন বিশেষ ব্যক্তি বা সংস্থাকে লাভবান বা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এরূপ নিম্নোক্ত তথ্য :
আয়কর, শুল্ক, ভ্যাট ও আবগারি আইন, বাজেট বা করহার পরিবর্তন সংক্রান্ত কোন আগাম তথ্য; মুদ্রার বিনিময় ও সুদের হার পরিবর্তনজনিত কোন আগাম তথ্য; ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালনা ও তদারকি সংক্রান্ত কোন আগাম তথ্য; কোন তথ্য প্রকাশের ফলে প্রচলিত আইনের প্রয়োগ বাঁধাগ্রস্ত হতে পারে বা অপরাধ বৃদ্ধি পেতে পারে এইরূপ তথ্য; কোন তথ্য প্রকাশের ফলে জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বা বিচারাধীন মামলার সুষ্ঠু বিচার কার্য ব্যাহত হতে পারে এরূপ তথ্য; কোন তথ্য প্রকাশের ফলে কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত জীবনের গোপনীয়তা ক্ষুন্ন হতে পারে এরূপ তথ্য; কোন তথ্য প্রকাশের ফলে কোন ব্যক্তির জীবন বা শারীরিক নিরাপত্তা বিপদাপন্ন হতে পারে এরূপ তথ্য; আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তার জন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক গোপনে প্রদত্ত কোন তথ্য; আদালতে বিচারাধীন কোন বিষয় এবং যা প্রকাশে আদালত বা ট্রাইব্যুনালের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে অথবা যার প্রকাশ আদালত অবমাননার শামিল এরূপ তথ্য; তদন্তাধীন কোন বিষয় যার প্রকাশ তদন্ত কাজে বিঘ্ন ঘটাতে পারে এরূপ তথ্য; কোন অপরাধের তদন্ত প্রক্রিয়া এবং অপরাধীর গ্রেফতার ও শাস্তিকে প্রভাবিত করতে পারে এরূপ তথ্য; আইন অনুসারে কেবল একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রকাশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে এরূপ তথ্য; কৌশলগত ও বাণিজ্যিক কারণে গোপন রাখা বাঞ্ছনীয় এরূপ কারিগরি বা বৈজ্ঞানিক গবেষণালব্ধ কোন তথ্য; কোন ক্রয় কার্যক্রম সম্পূর্ণ হবার পূর্বে বা উক্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে সংশি¬ষ্ট ক্রয় বা তার কার্যক্রম সংক্রান্ত কোন তথ্য; জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিকারহানির কারণ হতে পারে এরূপ তথ্য; কোন ব্যক্তির আইন দ্বারা সংরক্ষিত গোপনীয় তথ্য; পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বা পরীক্ষায় প্রদত্ত নম্বর সম্পর্কিত আগাম তথ্য।

মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে উপস্থাপনীয় সারসংক্ষেপসহ আনুষঙ্গিক দলিলাদি এবং উক্ত বৈঠকের আলোচনা ও সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত কোন তথ্য। তবে শর্ত থাকে যে, মন্ত্রিপরিষদ কর্তৃক কোন সিদ্ধান্ত গৃহীত হবার পর অনুরূপ সিদ্ধান্তের কারণ এবং যে সকল বিষয়ের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়েছে তা প্রকাশ করা যাবে। তবে এই ধারার অধীন তথ্য প্রদান স্থগিত রাখবার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তথ্য কমিশনের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করতে হবে।

তথ্য চাওয়ার পদ্ধতি:
তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর ৮ ধারা অনুযায়ী যে কোন ব্যক্তি তথ্য প্রাপ্তির জন্য সংশি¬ষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট নিম্নলিখিত তথ্য সন্নিবেশিত করে লিখিতভাবে বা ইলেক্ট্রনিক মাধ্যম বা ই—মেইলে অনুরোধ করতে পারবেন: এখানে আবেদনকারীর নাম, ঠিকানা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, ফ্যাক্সের নম্বর এবং ই—মেইল ঠিকানা; যে তথ্যের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে তার নির্ভুল এবং স্পষ্ট বর্ণনা; অনুরোধকৃত তথ্যের অবস্থান নির্ণয়ের সুবিধার্থে অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্রাসঙ্গিক তথ্যাবলী; এবং কোন পদ্ধতিতে তথ্য পেতে আগ্রহী তার বর্ণনা অর্থাৎ পরিদর্শন করা, অনুলিপি নেওয়া, নোট নেওয়া বা অন্য কোন অনুমোদিত পদ্ধতি।

তথ্য প্রদানের সময়সীমা:
তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর এর ৯ অনুসারে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তথ্য প্রদানের অনুরোধ প্রাপ্তির তারিখ থেকে অনধিক ২০ (বিশ) কার্য দিবসের মধ্যে অনুরোধকৃত তথ্য সরবরাহ করবে;
তবে অনুরোধকৃত তথ্যের সাথে একাধিক তথ্য প্রদান ইউনিট বা কর্তৃপক্ষের সংশি¬ষ্টতা থাকলে অনধিক ৩০ (ত্রিশ) কার্য দিবসের মধ্যে উক্ত অনুরোধকৃত তথ্য সরবরাহ করবেন। তবে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কোন কারণে তথ্য প্রদানে অপারগ হলে অপারগতার কারণ উল্লেখ করে আবেদন প্রাপ্তির ১০ (দশ) কার্য দিবসের মধ্যে তিনি তা অনুরোধকারীকে অবহিত করবেন। তবে,অনুরোধকৃত তথ্য কোন ব্যক্তির জীবন—মৃত্যু, গ্রেফতার এবং কারাগার হইতে মুক্তি সম্পর্কিত হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনুরোধ প্রাপ্তির ২৪ (চব্বিশ) ঘন্টার মধ্যে উক্ত বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য সরবরাহ করবেন।

নির্ধারিত সময়ে তথ্য প্রদান না করলে প্রতিকার :
নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তথ্য প্রদানে ব্যর্থ হলে ধারা ২৪ অনুযায়ী তথ্য প্রদানের সময়সীমা অতিক্রান্ত হবার পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে আপিল কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধকারী আপিল করতে পারবেন।

আপিল আবেদন প্রাপ্তির পরবর্তী ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে আপিল কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীকে অনুরোধকৃত তথ্য সরবরাহের জন্য সংশি¬ষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করবেন অথবা গ্রহণ যোগ্য না হলে আপিল আবেদনটি খারিজ করে দিবেন। আপিল কর্তৃপক্ষের আদেশে আবেদনকারী সংক্ষুব্ধ হলে ধারা ২৫ অনুসারে পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে তথ্য কমিশনে অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। তথ্য কমিশন অভিযোগটির সাথে সংশি¬ষ্ট সকল পক্ষকে শুনানির সুযোগ দিয়ে ৪৫ (পাঁচচল্লিশ) দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রদান করবে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে সাক্ষীর জবানবন্দির গ্রহণ এবং তদন্ত সম্পাদন করার কারণে অভিযোগ নিষ্পত্তির সময়সীমা বর্ধিত করা যেতে পারে। তবে বর্ধিত সময়সহ মোট সময় কোনক্রমেই ৭৫ (পঁচাত্তর) দিনের অধিক হবে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার জরিমানা করাসহ বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ প্রদান করতে পারবেন।

ভুল বা মিথ্যা তথ্য প্রদান করলে প্রতিকার: তথ্য অধিকার আইন,২০০৯ এর ১৩ (ঙ) অনুসারে বিভ্রান্তমূলক তথ্য প্রদান করার জন্য সংশি¬ষ্ট কর্মকর্তাকে ধারা ২৭ (ঘ) ও (ঙ) অনুযায়ী তথ্য কমিশন জরিমানা ছাড়াও ধারা ২৭ (৩) বলে অসদাচারণ গণ্য করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর সুপারিশ প্রদান করতে পারে।

২০০৯ সালে তথ্য অধিকার আইন প্রণীত হলেও প্রচারণা আর গণসচেতনতার অভাবে অধিকাংশ জনগণ অর্থাৎ যাদের তথ্য প্রাপ্তি সহজতর করার জন্য এ আইন প্রণীত হয়েছিল তারা এ আইন সম্পর্কে সার্বিকভাবে জ্ঞাত নয়। এমন কি যাদের জন্য তথ্য প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে তারাও বহুলাংশে এ আইন সম্পর্কে অজ্ঞ। তাছাড়া যারা এ আইনের আওতায় তথ্য পেতে আগ্রহী তারা অনেক সময় তথ্য চাইতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। ফলে এ আইনের সুফল ভোগ থেকে জনগণ বঞ্চিত হয়। ফলশ্রম্নতিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হয়ে আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যসহ যেসকল উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সরকার তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ প্রণয়ন করেছিল তা বহুলাংশে ব্যর্থতায় পর্যবেশিত হয়েছে।

তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর কার্যকর প্রয়োগের জন্য এ আইনের বিধানাবলী সম্পর্কে জনঅবহিতকরণ ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাছাড়া, সমন্বিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সরকারি/আধা—সরকারি/স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষিত করে তথ্য অধিকার সহায়ক মনোভাবাপন্ন করে গড়ে তুলতে হবে। ইতিবাচকমনোভাব নিয়ে ব্যাপক প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের আপামর জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর কার্যকর প্রয়োগ ও সুফল পাওয়া সম্ভব।
লেখক : সিনিয়র তথ্য অফিসার, জেলা তথ্য অফিস, যশোর

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram