ঝিকরগাছা (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান আমিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) চেয়ারম্যানের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইউনিয়নের ১২ জনের মধ্যে ১০জন সদস্য (মেম্বার)। ফলে গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
<<আরও পড়তে পারেন>> ঝিকরগাছায় পরকীয়ার জেরে বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউনিয়নে ৭ হাজার হোল্ডিং প্লেট বিতরণ করে ৭ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়েছে। সেই টাকা পরিষদে জমা না দিয়ে চেয়ারম্যান আত্মসাত করেছেন। তিন অর্থবছরে আনুমানিক ২৩ লক্ষ টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ আদায় করলেও চেয়ারম্যান সেই টাকা ইচ্ছামত খরচ করেছেন।
মেম্বাররা টাকার হিসাব চাইলে তিনি গালিগালাজ করেন। পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে হতদরিদ্র পরিবারের জন্য বরাদ্দ চাল থেকে চেয়ারম্যান ১১ বস্তা চাল আত্মসাৎ করেন। পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসন সেই চাল উদ্ধার করে একটি আড়ৎ সিলগালা করেন। বিভিন্ন সময়ে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতার কার্ড বিতরণ, প্রতিস্থাপন, ট্রেডলাইসেন্স ও পরিষদের অন্যান্য আয় সম্পর্কে মেম্বারদের অবহিত করা হয় না। জানতে চাইলে চেয়ারম্যান গালিগালাজ করেন।
অভিযোগে বলা হয়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে থেকেই চেয়ারম্যান পরিষদে আসেন না। ফলে সেবাগ্রহীতারা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এমনকি চেয়ারম্যানের অফিস বন্ধ থাকায় মেম্বাররাও অফিসে বসতে পারেন না। বিভিন্ন সময়ে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হলেও কোন প্রতিকার মেলেনি।
চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ইউপি সদস্যরা (মেম্বার) হলেন তালিমুল ইসলাম, সহিদুল ইসলাম, মামুন হোসেন, আশরাফুল, শফিকুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, আসাদুল ইসলাম, সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য এলিজা শিরিন, তানিয়া সুলতানা ও রাজিয়া সুলতানা।
অভিযুক্ত গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান আমিন জানান, তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক।
ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল জানান, এর আগেও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, সেটা তদন্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, নতুন করে অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে ডিসি এবং ডিডিএলজির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাবো। তারা সিদ্ধান্ত নেবে। ইউএনও আরও জানান, ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত হয়েছে খুব দ্রুতই ডিডিএলজি গঙ্গানন্দপুরে ইউনিয়নে পরিদর্শন করবেন।