ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে নিয়মিত সেবার পাশাপাশি নতুন করে শুরু হওয়া চার সেবায় খুশি রোগী ও তাদের স্বজনেরা। সম্প্রতি নতুন জনবল নিয়োগ হওয়ায় কম খরচে সরকারি মূল্যে সেবা পাওয়ায় বেড়েছে রোগীর সংখ্যা।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকালে ফকিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আকলিমা বেগম, জোছনা বেগম, মালতি রানী দাস, মিঠুন বৈরাগীসহ একাধিক রোগীর সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। এদের মধ্যে মালতি রানী বুকে ব্যাথা নিয়ে জরুরি বিভাগে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ইসিজি করতে বলেন।
মাত্র ৮০ টাকায় তিনি তৎক্ষনাত হাসপাতালে ইসিজি করে ডাক্তার দেখাতে সক্ষম হন। পেশায় ইজিবাইক চালক মিঠুন বৈরাগী বুকে ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে এসে ডাক্তরের পরামর্শে এক্স—রে করেন। দীর্ঘদিন ধরে অত্যাধুনিক ৪০০এমএ অ্যালেন্ডার্স এক্স—রে মেশিন থাকলেও তা অপরেটরের অভাবে বন্ধ ছিল।
আরও পড়তে পারেন : যশোর হাসপাতালে ৯৫০ টাকায় ডোপ টেস্ট
সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং বিষয়ের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সুদেব হালদার জানান, হাসপাতালের মধ্যেই সরকারি মূল্যে এক্স—রে করতে পেরে রোগীদের ভোগান্তি কম হচ্ছে। প্রাইভেট ক্লিনিকের চেয়ে কয়েক ভাগ কমে তারা উন্নত সেবা পাচ্ছেন। দিন দিন রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। ক্রমবর্ধমান রোগীর সেবা দিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এক্স—রে মেশিনে সংযুক্ত করার জন্য একটি সিআর মেশিনের চাহিদা দিয়েছে বলে তিনি জানান।
হাসপাতালের বহিঃবিভাগে নতুন করে চালু হয়েছে ডেন্টাল সেবা। অত্যাধুনিক ডেন্টাল ইউনিট এক্সেসরিস সেটাপের অপেক্ষায় আছে বিভাগটি। ডেন্টাল টেকনোলজিস্টের কাছে চিকিৎসা নিয়ে খুশি আমেনা বেগম। মাত্র ৩টাকার টিকিট কেটে সংক্রমিত দাঁত তুলেছেন তিনি। বিনামূল্যে দামী ওষুধও পেয়েছেন হাসপাতাল থেকে।
উপজেলার ৫০ শয্যার একমাত্র সরকারি হাসপাতালটির ল্যাবে প্রায় ২২ ধরণের পরীক্ষার ব্যবস্থান আছে সরকারি মূল্যে। লোকবল সংকটে ইতোপূর্বে বাইরের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে কয়েক গুণ বেশি মূল্যে মানুষের পরীক্ষা করাতে হতো। নতুন ল্যাব টেকনোলজিস্ট নিয়োগ হওয়ায় এখন হাসপাতালেই পাচ্ছেন এই সেবা।
ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এএসএম মফিদুল ইসলাম বলেন, সীমিত সম্পদের দ্বারা সর্বোচ্চ সেবা দিতে সর্বদা চেষ্টা করছি আমরা। আশে পাশের উপজেলা থেকেও এখানে রোগী আসেন চিকিৎসা নিতে।
হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বপন দাশ বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের অসম্ভব কর্মতৎপরতায় ফকিরহাট করোনাভাইরাসের টিকা প্রদানে বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম হয়েছিল। শেখ হেলাল উদ্দীনের চেষ্টায় হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উপনিত হয়েছে। আমরা এখানে নতুন নতুন সেবা যোগ করার চেষ্টা করছি।