ইমরান হোসেন পিংকু : চলতে চলতে হঠাৎ বন্ধ বিদ্যুৎ। আশপাশের সবার থাকলেও সমস্যা একজনের। তিনি ইলেকট্রিশিয়ানকে খবর দিলেন। ইলেকট্রিশিয়ান পরীক্ষা করে দেখলেন সব ঠিকই আছে। বললেন বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করতে। অফিসে বিষয়টি জানাতেই বলা হলো ‘আপনার লোড ক্যাপাসিটি বাড়াতে হবে।’ এই শুরু বিড়ম্বনা। অতিরিক্ত ফি জমা দেয়া, প্রতিমাসে বাড়তি সেবাকর প্রদানের ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে গ্রাহকদের। গ্রাহকদের অভিযোগ, পূর্বে নোটিশ না দিয়েই লোড ক্যাপাসিটি বাড়ানোর নামে বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে।
গ্রাহকরা জানিয়েছেন, ৪০৩ টাকা জমা দিয়ে ব্যবহার সক্ষমতা বা লোড ক্যাপাসিটি বাড়াতে হচ্ছে। ক্যাপাসিটি বাড়ানোর সাথে সাথে প্রতি কিলো ওয়াট বিদ্যুতের জন্য প্রতি মাসে বাড়তি আরও ৩৫ টাকা হিসেবে সেবা কর দিতে হচ্ছে।
গ্রাহক এসএম ইউসুফ শাহিদ বলেন, প্রি—পেইড মিটার গ্রাহকদের স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির গ্যঁাড়াকলে ফেলে বিদ্যুৎ বিভাগ ঠিকই ডিমান্ড চার্জ আদায় করছে। কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎ ব্যবহার কারীরা এখনও এনালগ মিটার চালু আছে। তাদের ক্ষেত্রে ডিমান্ড চার্জ আদায়ের এমন বাধ্যবাধকতা নেই। এটা বিদ্যুৎ বিভাগের গ্রাহকদের প্রতি একটা চরম বৈষম্যমূলক আচরণ।
তিনি আরও বলেন, আমার বাড়িতে দুই কিলো ওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহারের অনুমোদন নেওয়া আছে। কিন্তু বিদ্যুৎ ব্যবহার ঠিক মতো না করলেও বিদ্যুৎ একটু পর পর চলে যাচ্ছে। ফলে বিদ্যুৎ অফিসে কথা বললে বিভিন্ন ধরণে তালবাহানা করেন। পরে স্ব শরীরে যেয়ে বিদ্যুৎ অফিসে কথা বলি। তারা ৪০৩ টাকা জমা দিয়ে ব্যবহার সক্ষমতা বা লোড ক্যাপাসিটি বাড়াতে আবেদন করতে বলে। লোড ক্যাপাসিটি বাড়ানো পরে যেয়ে এখন ঠিক হয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগ আগে যদি নোটিশ দিতো তাহলে এ সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো না। আমার মতো শত শত লোক বিদ্যুৎ বিভাগের কারসাজিতে ভুগছেন।
মারুফ হোসেন নামে আর এক গ্রাহক বলেন, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) গ্রাহকের ঘরে স্থাপিত প্রি—পেইড মিটার এখন যশোরে হাজারো গ্রাহকের গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে বাসা বাড়িতে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ অফিসকে সমস্যার কথা জানাই তখন তারা বলছে, আপনি লোড ক্যাপাসিটির চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন বলেই এই সমস্যা হচ্ছে; এর সমাধান করতে চাইলে আরও ৪০৩ টাকা জমা দিয়ে ব্যবহার সক্ষমতা বা লোড ক্যাপাসিটি বাড়াতে হবে। লোড ক্যাপাসিটার বাড়ানোর কথা আগে বললে, এতো ঝুড় ঝামেলা পোহাতে হতো না। দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ অফিসে বসে থাকতে হচ্ছে।
ওজোপাডিকো যশোর ডিভিশন—১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ওজোপাডিকো লিমিটেডের গ্রাহকের নিরবচ্ছিন্ন মানসম্মত বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করতে সব রকম পরিকল্পনার বাস্তবায়নে কাজ করছে। এর ফলশ্রম্নতিতে বিদ্যুৎ লোড ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করা হচ্ছে। গরম আসছে, এজন্য দ্রুত যার যেটুকু প্রয়োজন গ্রাহকদের লোড ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করে নিতে শহরে মাইকিং এবং পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছিল। গরম আসতে আসতে আবারও সর্তক করতে মাইকিং করা হবে।’