২২শে মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
গরম-শীতে শীর্ষে যশোর
গরম-শীতে শীর্ষে যশোর

তহীদ মনি : দেশে সবচেয়ে বেশি দিন গরম ও শীত অনুভুত হচ্ছে যশোরে। বিগত কয়েক বছরের আবহাওয়া চিত্রে এমন তথ্য উঠে আসছে। স্মরণকালে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের রেকর্ড হয় যশোরে। ২০১৩ সালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড ৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তাও যশোরে। গ্রীষ্মে চরমাভাপন্ন ও শীতে চরমশীতল পরিবেশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যশোরের আবহাওয়া। ফলে এ অঞ্চলের জলবায়ুতে আসছে আমুল পরিবর্তন। গবেষকরা বলছেন, নদ নদী শুকিয়ে যাওয়া ও গ্রীন হাউস ইফেক্টের কারণে এ অবস্থা হচ্ছে।


চলতি মওসুমে শীতে দেশ কেঁপেছে জানুয়ারির ৬দিন। এর মধ্যে তিনদিন দেশের সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ছিল যশোরে। বাকি দিনগুলোতে একই ধারায় শীত উপলব্ধি হচ্ছে। আবহাওয়া তথ্য বলছে, স্মরণকালে দেশের সবচেয়ে শীতল মৌসুম ছিল ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাস। তাপমাত্রার পারদ নেমেছিল ৪দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ রেকর্ডটি যশোরের।


আবার গ্রীষ্মে যশোরের গড় তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ তাপ উপলব্ধিত হয়েছে যশোরে ১৯৯৫ সালে। গত দুই যুগে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস উঠেছিল যশোরে। ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিল যশোরের তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠে। ওই সময় পুরো এক সপ্তাহ ধরে যশোরের তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করে। ২০২১ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, যশোর দেশের ‘চরম আবহাওয়া’প্রবণ জেলা। রাজশাহীতে বছরে ১৫৫ দিন শীত অথবা গরম বেশি ছিল। যশোরে তা ছিল ১৫৩ দিন। এর পরে রয়েছে ঈশ্বরদী ১৪৫ দিন। দেশের ৯টি জেলার ৩৭ বছরের তাপমাত্রা পরিস্থিতি বিশ্লেষণে তৈরি এ গবেষণা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বছরে গরম বেশি থাকা ৬টি জেলার মধ্যে শীর্ষে যশোর। বছরে গরম বেশি ছিল ৪৮ দিন। এরপর ছিল পাবনা (৪২ দিন), মৌলভীবাজার (৩৬ দিন) ও রাজশাহী (৩৪ দিন)।


যশোর জেলায় বছরে গড়ে ৭৫ দিন উষ্ণ ছিল, রাজশাহীতে ছিল ৬৭ দিন ও ঈশ্বরদীতে ৫৮ দিন।
অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডার ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যালগেরি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একদল গবেষকের প্রকাশ করা এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানাগেছে, দেশের মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের তুলনায় উপকূলীয় জেলাগুলোয় তাপমাত্রা দ্রত বাড়ছে। তারা গরম বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বঙ্গোপসাগরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, মৌসুমি বায়ু ক্রমশ শুষ্ক হয়ে ওঠা, নদী-জলাশয় শুকিয়ে যাওয়া ও বনভূমি কমে যাওয়াকে দায়ী করেছেন।


আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদদের মতে, দেশে মার্চ-এপ্রিলে গরম বাতাসের একটি প্রবাহ প্রবেশ করে। আগে এর মূল কেন্দ্রটি পাবনার ঈশ্বরদী এলাকা দিয়ে ঢুকে রাজশাহী বিভাগে বেশি দিন অবস্থান করত। সাম্প্রতিককালে তা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ হয়ে যশোর-চুয়াডাঙ্গা দিয়ে দেশে প্রবেশ করছে। সে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে উষ্ণ বায়ুপ্রবাহের প্রবেশের পথ কিছুটা বদলে যাচ্ছে।
পরিবেশ গবেষক আতিক আহসান বলেন, শুধু আবহাওয়াগত কারণেই যশোর অঞ্চলের আবহাওয়া চরম হয়ে উঠছে, তা নয়। এর সঙ্গে নদী শুকিয়ে যাওয়া ও গাছপালা কমে যাওয়াও অন্যতম কারণ। বিশাল এলাকাজুড়ে একসময় সুন্দরবন বি¯ত্মৃত ছিল। নদী ও পানি প্রবাহ বেশি ছিল। এখন গাছ উজাড় হয়েছে এবং নদীতে পানিপ্রবাহ কমে গেছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram