১৯শে মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
খাদ্যপণ্যে ভেজাল রোধে চাই সচেতনতা
42 বার পঠিত

মানুষের প্রথম ও প্রধান মৌলিক চাহিদা হলো খাদ্য। যা বাঁচিয়ে রাখে মানুষকে। তবে বর্তমানে এসে আমরা যেসব খাবার খাচ্ছি তা দেহের জন্য কতটা নিরাপদ! প্রধান খাদ্য ভাতের চাল, ডাল, সবজি, ফলমূল, প্যাকেটজাতসহ এহেন খাদ্যদ্রব্য নেই, যা ভেজাল বা মিশ্রণের অন্তর্ভুক্ত নয়। দেশের ব্যবসায়ীদের নৈতিক অবক্ষয় এর মূল কারণ। তারা অধিক মুনাফার লোভে মানুষের জীবন হুমকির মুখে ফেলতে একটুও ভাবে না।

অধিকাংশ মধ্যম আয়ের পরিবারে ভাতের জন্য মিনিকেট চালের ব্যবহার হয়। এর অধিকাংশই মোটা চাল মেশিনে কেটে তৈরি করা হয়। সবজি বা মাছ দীর্ঘদিন ভালো রাখার জন্য ব্যবহার করা হয় ফরমালিন। এটি একটি বর্ণহীন তীব্র গন্ধযুক্ত রাসায়নিক পদার্থ, যা টেক্সটাইল, কাগজ, রঞ্জক, অবকাঠামো শিল্প এবং মানুষের মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

এটি পানিতে দ্রবীভূত ফরমালডিহাইড ও গ্যাস থেকে সৃষ্ট। এটা মাছ, ফল, বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণে ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। ফরমালিনের ব্যবহার নাক ও শ্বাসনালির জ্বালাপোড়া ছাড়াও সর্দি, গলার ঘা, স্বরযন্ত্রের প্রদাহ, ব্রংকাইটিস ও নিউমোনিয়া রোগের জন্য দায়ী। শুঁটকিতে ব্যবহৃত হয় ডিডিটি। যা ৪৯টি দেশে নিষিদ্ধ হলেও আমাদের দেশে এর যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে। এর ব্যবহারে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার যেমন— স্তন ক্যান্সার, যকৃৎ ক্যান্সার, অগ্নাশয়ের ক্যান্সার হতে পারে।

খাবারকে আকর্ষণীয় করে তুলতে খাবারে অতি মাত্রায় রঙের ব্যবহার তো রয়েছেই। টেক্সটাইল শিল্পে ব্যবহৃত রং খাদ্যে ব্যবহৃত হয়। মিষ্টি বিপণিতে মিষ্টির রং উজ্জ্বল করতে হয় কৃত্রিম রঙের ব্যবহার। বাংলাদেশের মানুষ মিষ্টি খেতে ভালোবাসে এবং বিভিন্ন উৎসবে মিষ্টি একটি অপরিহার্য উপাদান। এছাড়াও বেগুনি, পেঁয়াজু, চপ প্রভৃতি ইফতার সামগ্রীতে কৃত্রিম রং ব্যবহার করা হয়। রং সমৃদ্ধ খাদ্য সামগ্রী চুলকানি, জন্ডিস, প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।

মুড়ি সাদা করতে ব্যবহার করা হয় ইউরিয়া। টিনের কৌটাজাত দুধ, বিশেষ করে শিশুদের খাদ্যতেও বিভিন্ন ফ্লেভার, আলুর পেস্ট ইত্যাদি মেশানো হয়। একদল অসাধু ব্যবসায়ী খাদ্যদ্রব্য নকল উপাদানে তৈরি করে বিদেশী বিভিন্ন নামি কোম্পানির নামের লেবেল লাগিয়েও বাজারজাত করে। সেগুলো দেশের অনেক বড় বড় শপিং সেন্টার বা দোকানগুলোতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে। এত ভালোভাবে এর প্যাকেজিং করে যে, অনেক সময় নিয়মিত ব্যবহারকারীরাও আসল—নকল প্রভেদ করতে পারেন না।

এসব অনিয়ম দমন করতে সর্বাগ্রে ভোক্তাদের সচেতন হতে হবে। নিজের এবং পরিবারের জন্য যা কেনা হচ্ছে, সেটি কতটা নিরাপদ তা যাচাই—বাছাই করে নিতে হবে। যদিও বর্তমানে আমাদের দেশের ভোক্তা অধিকার সংস্থা ও আইন বেশ সক্রিয়। তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাহায্যে প্রায়ই অভিযান চালিয়ে দোকান, শপিং মল, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদিতে ভেজাল পণ্যদ্রব্য জব্দ করছে। জরিমানাসহ শাস্তির ব্যবস্থাও করছে। সরকারের এসব উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে। ভোক্তা নিজের অবস্থান থেকে সচেতন হলে এবং সরকার তার উদ্যোগে কঠোরতা অবলম্বন করলেই দেশে খাদ্যে ভেজাল বন্ধ হতে পারে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram