খুলনা প্রতিনিধি : খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারনার জোর ততই বাড়ছে। প্রচন্ড তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্থ হলেও থেমে নেই প্রার্থীরা। এসি বাড়ি-গাড়ি ব্যবহার করা অনেক বিত্তশালী প্রার্থী তীব্র গরম উপেক্ষা করে ছুটছেন ভোটারের দ্বারে দ্বারে। গোটা নগর জুড়ে বইছে এই নির্বাচনী হাওয়া।
আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচ জন, ৩১টি ওয়ার্ডের মধ্যে দু’টি ওয়ার্ডে দু’জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় বাকী ২৯টি ওয়ার্ডে ২৩৪ জন ও সংরক্ষিত ১০ ওয়ার্ডে ৩৯ জন নারী প্রার্থী ভোট যুদ্ধে লড়ছেন। প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারনার পাশাপাশি ও পোষ্টারে পোস্টারে ঢেকে গেছে গোটা মহানগর।
এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচ জন প্রার্থী লড়লেও শক্ত অবস্থানে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক। তবে তিনি শুধু বিজয় নয়, ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার প্রত্যাশা করছেন বলে দলীয় সূত্রে জানাগেছে। এলক্ষ্যে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরাও মাঠে নেমেছেন।
মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী অপর চার প্রার্থী হলেন জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন (গোলাপ ফুল), জাতীয় পার্টির শফিকুল ইসলাম মধু (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে এর হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল (হাতপাখা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম শফিকুর রহমান মুশফিক (টেবিল ঘড়ি)।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মেয়র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, অপপ্রচার আর ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করা যাবে না। যারা আমার কথাকে নানাভাবে অডিও এবং ভিডিও পাইরেসি করে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপতৎপরতায় মেতে উঠেছে, তাদের এই ষড়যন্ত্র সফল হবে না। খুলনার মানুষ জানে আমি কোন ধরনের মানুষ।
১২ জুন ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে এসব ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। ৩ জুন দুপুরে ২৬নং ওয়ার্ডের বানরগাতি বাজার, পুরাতন গল্লামারী রোড, কোবা মসজিদ, আন্দিরপুকুর, পশ্চিম বানিয়া খামার মেইন রোড, বিহারী কলোণি, বাঁশতলা, বসুপাড়া, আমতলা এবং ২৫ নং ওয়ার্ডের ইসলাম কমিশনারের মোড়, সোহরাওয়ার্দ্দী কলেজ রোড, শান্তিবাগ, বসুপাড়া এতিমখানা, সিদ্দিকীয় মহল্লাসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ, পথসভা ও জেলা আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে নারী উদ্যোক্তা, পূজা উদযাপন পরিষদ, খুলনা ভিশন, শিক্ষক, বরিশাল কল্যাণ সমিতি, ধর্মসভা মন্দিরে গণসংযোগ শেষে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি কাজি আমিনুল হক, সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আলী আকবর টিপু, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মো. শাহাজাদা, দপ্তর সম্পাদক মো. মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলাম, খুলনা ভিশনের এমডি ফকির মো. সাইফুল ইসলাম, সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তসলিম আহমেদ আশা, অধ্যাপক রুনু ইকবাল বিথার, এস এম আকিল উদ্দিন, হায়দার আলী খোকন, শামীমা রহমান শীলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুন্সি আইয়ুব আলী, শেখ মো. রুহুল আমিন, সরদার আব্দুল হালিম, মো. সফিকুর রহমান পলাশ, গোলাম মওলা সানু, মহানগর পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল হালদার, জেলা পূজা পরিষদের সভাপতি কৃষ্ণপদ দাস, মহানগর সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুন্ডু, জেলা সাধারণ সম্পাদক সুজিত সাহা, বিমান সাহা, মনোয়ারা বেগম, কবিতা আহমেদ, মো. শওকাত হোসেন, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, আইরিন চৌধুরী নীপা, চিশতী মুস্তারী বানু, মনোয়ারা খাতুন শিউলি, তারানা তাবাসুম শোভা, শামসুন্নাহার শিমুল ও আঁখি আক্তার।
নির্বাচনে নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে পাঁচ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে নারী ভোটার দুই লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন ও পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন। আগামী ১২ জুন দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে ২৮৯টি কেন্দ্র ও এক হাজার ৭৩২টি ভোটকক্ষের সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।