২৮শে এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
কাউন্সিলর ‘টাক মিলন’কে যুবলীগ থেকে বহিস্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোর পৌরসভার কাউন্সিলর ও জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলনকে ‘মদ্যপ’ অবস্থায় গ্রেপ্তারের ঘটনায় সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল এমপি’ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বুধবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে এই বিজ্ঞপ্তিটি ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয় রাজনীতির গ্রুপিংয়ের জন্য সংগঠনটির জেলার সভাপতি—সম্পাদক এই বিষয়ে কোন মন্তব্য না করলেও বহিস্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগী) শামীম আল সাইফুল সোহাগ। জাহিদ হোসেন মিলন যশোর পৌরসভার ৪ নাম্বার ওয়ার্ড কাউন্সিলর। তার বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিক মামলা আছে।

কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন। এই সংগঠনের ভাবমূর্তি বজায় রাখার দায়িত্ব সবার। জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জাহিদ হোসেন মিলনের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ও শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকান্ডের প্রমাণ রয়েছে। যা সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষণ্ণ ও শৃঙ্খলা বিনষ্ট করেছে।

অতএব গঠনতন্ত্রের ২২ (ক) ধারা মোতাবেক যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ এর নির্দেশে জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক থেকে জাহিদ হোসেন মিলনকে সংগঠন থেকে সাময়িক অব্যহতি প্রদান করা হলো। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ও শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকান্ডের জন্য বহিস্কার করা হলোও সুুনির্দিষ্টভাবে কোন অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয়নি।

এই বিষয়ে জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরি ও সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি। তবে যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগী) শামীম আল সাইফুল সোহাগ বলেন, ‘সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে যশোর জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক পদ থেকে জাহিদ হোসেন মিলনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল সাময়িক বহিষ্কারের ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।’

স্থানীয় যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বুধবার রাতে যশোর শহরের পালবাড়ি মোড়ে তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকে জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলনসহ চারজনকে ‘মদ্যপ’ অবস্থায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ঘটনার দিন রাতেই যশোর কোতোয়ালি থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলার পর আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে তারা যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারেই রয়েছেন। গ্রেপ্তার অপর তিনজন হলেন শহরের টালিখোলা এলাকার শেখ দস্তগীর হোসেন (৪৪), কদমতলা এলাকার শফিকুল ইসলাম (৩৭) ও টালিখোলা এলাকার মারুফুজ্জামান (৩৯)। তাঁরা কাউন্সিলর জাহিদ হোসেন মিলনের সহযোগী।

জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার রাতে রাত পৌনে আটটার দিকে স্থানীয় জনগণের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে যে যশোর শহরের পালবাড়ি এলাকার একটি ভবনের কক্ষে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি মদ্যপ অবস্থায় নিজেদের মধ্যে গোলযোগ করছেন। এরপর পুলিশ সেখানে হাজির হয়ে পৌর কাউন্সিলর জাহিদ হোসেনসহ তাঁর ওই তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে।

জাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ আছে। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হলে দুবাই চলে যান তিনি। নাগালের বাইরে থাকায় তখন গ্রেপ্তার করতে পারেনি যশোরের পুলিশ। দুবাই থেকে দেশে ফেরার পথে জাহিদকে হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ইমিগ্রেশন পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।

২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে শহরের পুরাতন কসবা কাজীপাড়া এলাকার যুবলীগ কর্মী শরিফুল ইসলাম ওরফে সোহাগকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। অভিযোগ রয়েছে, ওই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন জাহিদ হোসেন। ওই মামলায় আটক এক আসামির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে মিলনের নাম উঠে আসে। এছাড়াও একাধিক মামলা আছে তার বিরুদ্ধে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram