মনিরুজ্জামান মনির : রূপদিয়া গ্রামের এক গৃহবধূর প্রসব বেদনা উঠলে খবর দেয়া হয় অ্যাম্বুলেন্স। যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের কেশবের মোড় থেকে রূপদিয়া বাজারের রাস্তায় ঢুকতেই উল্টে যায় অ্যাম্বুলেন্সটি। সাথে সাথে আরও একটি অ্যাম্বুলেন্স খবর দেয়া হয়। ভাঙ্গাচুরা রাস্তা ধরে অ্যাম্বুলেন্সটি পৌঁছানোর আগেই প্রসব হয়ে যায় গৃহবধূর। ঘটনাটি দিন দশেক আগের। ২৩ বছরের পুরোনো হেরিং রাস্তাটি রূপদিয়া গ্রামকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন জনপদে পরিণত করেছে। এবড়ো থেবড়ো রাস্তায় পারতো পক্ষে কোনো যানবাহন যেতে চায় না। এমনকি সাইকেল ভ্যান চলাচলও দুষ্কর।
চাঁচড়ার রূপদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোর্শারফ হোসেন জানান, এ রাস্তার কারণে আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেন। ২০০০ সালে এ রাস্তার হেরিংয়ের কাজ হয়। ২৩ বছরের মধ্যে কোনো সংস্কার হয়নি।
রূপদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আ. ছালাম জানান, গ্রামের রাস্তা এতো খারাপ যে বৃষ্টির সময় বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল চলারও কোনো গতি থাকে না। মনে হয় একটা বিচ্ছিন্ন জনপদে আমাদের বাস। শুধু রাস্তার কারণে শিক্ষার্থীরা ঠিকমত মাদ্রাসায় আসতে পারে না। আমার মনে হয় বাংলাদেশের কথাও এমন খারাপ রাস্তা নেই।
রূপদিয়া গ্রামের চাষি সিরাজুল ইসলাম জানান, রাস্তার কারণে উৎপাদিত ফসল সময়মত বাজারজাত করতে পারি না, বাইরের ক্রেতারাও আসে না। ইটের রাস্তা ভেঙ্গে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। ভ্যান পর্যন্ত চলাচল করতে পারে না।
চাঁচড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান মনির জানান, আমাদের রূপদিয়া গ্রামটি অবহেলিত গ্রাম। কেশবের বাজার মোড় থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ।
এ রাস্তা দিয়ে চলাচলের কোনো উপায় নেই। জরুরি প্রয়োজনে যানবাহন মেলে না। এমনকি জরুরি রোগী হাসপাতালে নেয়াও যায় না
ইজিবাইকচালক আজিজুল ইসলাম জানান, এ রাস্তায় গাড়ি চালানো যায় না। প্রতিটা জায়গায় ভেঙ্গে উচু নিচু হয়ে গেছে। আমার গাড়ি কয়েকবার উল্টে গেছে। তারপর মানুষের বিপদে আসতে হয়। বৃষ্টি হলে তাও সম্ভব হয় না।
চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শামিম রেজা বলেন, ‘এ রাস্তার জন্য এলাকার মানুষ ব্যাপক সমস্যায় আছে। আগেই রাস্তাটি পাকা করার কথা ছিল। কিন্তু হয়নি। রাস্তার সব কাগজপত্র এলজিইডি অফিসে জমা দেওয়া আছে। কী হবে বলতে পারছি না। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য।