সমাজের কথা ডেস্ক : দাড়ি—গোঁফ কেটে নিজেকে ইহুদি দাবি করেছেন হক গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদম তমিজি হক। ফেসবুক লাইভে এসে এ দাবি জানিয়ে নিজেকে দ্রুত বাংলাদেশ থেকে উদ্ধারের জন্য ইসরায়েল সরকারের সহযোগিতা চান তিনি।
তমিজি হক বলেন, ‘আমার মা আধা পোলিশ। আমি জন্মসূত্রে ইহুদি। আমি নিজেকে ইহুদি ধর্মাবলম্বী হিসেবে দাবি করতে চাইছি। একই সঙ্গে ইসরায়েলি নাগরিকত্ব দাবি করতে চাইছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ইসরায়েলের কাছে অভিযোগ জানাতে চাই। আমি বর্তমানে বাংলাদেশে। গত তিন দিন ধরে আমার বাসার পানি ও বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ঘরে খাবারও নেই, আমার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। দ্রুত আমাদের উদ্ধার করা দরকার।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে আদম তমিজি হকের গুলশানের বাড়িতে যান র্যাব সদস্যরা। তবে এই শিল্পপতি আত্মহত্যা ও স্ত্রীকে খুনের হুমকি দেওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার না করে ফিরে আসে র্যাব। এখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওই এলাকা ছাড়েনি। তারা ওই বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে আছে। পরের দিন শুক্রবার ফেসবুকে লাইভে এসে তিনি ইসরায়েল সরকারের সহযোগিতা চান।
সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা ও একটি সার্চ ওয়ারেন্ট থাকায় ব্যবসায়ী আদম তমিজি হককে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হবে জানিয়েছে র্যাব। শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আদম তমিজির নামে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও মামলা রয়েছে, তার বাসায় অভিযানের সার্চ ওয়ারেন্টও রয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে সব নিয়ম মেনেই আমরা তাকে আইনের আওতায় আনতে তার বাসায় যাই। বৃহস্পতিবার র্যাব কর্মকর্তারা নিয়ম মেনেই ম্যাজিস্ট্রেট, ডাক্তারসহ সেখানে অভিযানে যান। তার বাসায় একজন ইউকে (যুক্তরাজ্য) নাগরিক ছিলেন, চতুর্থ স্ত্রী ছিলেন।
সব নিয়ম মেনেই আমরা গ্রেপ্তার করতে চেষ্টা করি। কিন্তু একপর্যায়ে তিনি ছুরি নিয়ে সুইসাইড করার হুমকি দেন, জানালার গ্লাস ভেঙে ফেলেন, এক পা বাইরে দিয়ে লাফ দেওয়ার হুমকি দেন। এমনকি তার স্ত্রীকেও বাসার ওপর থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন। পরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে গ্রেপ্তার করা হয়নি, কিন্তু আমাদের অভিযান চলমান আছে। পরিস্থিতি অনুকূলে এলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।’
সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ নভেম্বর বাংলাদেশে আসেন আদম তমিজি হক। তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দ্বৈত নাগরিক।