নেংগুড়াহাট (মণিরামপুর) প্রতিনিধি : যশোরের মণিরামপুর উপজেলা নেংগুড়াহাট অঞ্চলে হরিশপুর রসুলপুর মাঠে অসময়ে শিম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। আলিপট্টি—১জাতের গ্রীষ্মকালীন আগাম ফলন দেয়া শিম গাছ লাগিয়ে তারা ভালো মুনাফা অর্জন করেছেন। এ বছর গ্রামের প্রায় ৬০থেকে ৭০জন কৃষক হরিশপুর রসুলপুর মাঠে ৭০বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ করেছেন। তাদের আশা এক থেকে দেড় কোটি টাকা আয় হবে।
উপশহকারী কৃষি কর্মকর্তা মারুফুল হক ও হাবিবুর রহমান বলেন, হরিশপুর রসুলপুর গ্রামে প্রথম উফশী হাইব্রিড আলিফটটি জাতের শিম চাষ শুরু করেন হান্নান ও রাকিব। তাদের দেখা দেখি এখন অনেকে চাষ করছেন।
গত বছর একবিঘা জমিতে এই শিম চাষে খরচ হয়েছিল ১৮হাজার টাকা, সেখান থেকে প্রায় ৩লাখ টাকার শিম বিক্রি করেছিল তারা।
কৃষক রাকিব হোসেন বলেন, এ বছরের আমি ১বিঘা ১০কাটা জমিতে শিমের চাষ করেছি, ৩৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
এ পর্যন্ত ১লাখ ২০হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছি আরও প্রায় ২লাখ টাকার শিম বিক্রয় করা যাবে। কথা হয় আরেক কৃষক আসাদুল হক ও মুফি রহমানের সাথে। তারা বলেন, গ্রামের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কৃষক এই জাতের শিম চাষ করছেন, প্রতি কেজি শিম বর্তমান বিক্রি হচ্ছে ৩০থেকে ৪০টাকা কেজি দরে।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেকেই তাদের কাছ থেকে শিমের বীজ কিনছেন। একই গ্রামের শিম চাষী খোকন বলেন, আমি এবার শিমের চাষ করছি। আমার বাড়ির পাশের কালাম চাচা প্রথম দিকে এই শিমের চাষ শুরু করেন। তার কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে আমি নিজেও চাষাবাদ শুরু করি।
এটি খুবই লাভজনক ফসল। শিমের খেতে কাজ করতে আসা ইনামুল, জলিল, সোবাহান বলেন, আমরা শিমের খেতে দৈনিক কাজ করি ৩৫০টাকা মজুরিতে। এ দিয়ে আমাদের সংসার চলে ভালো মতন, আমার মতো অনেকেই ভালো আছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারহানা ফেরদৌস বলেন, আলিফটি ১জাতের এই শিমের ফলন গ্রীষ্মকালেই বেশি হয়। একটি গাছ লাগানোর ৪০দিনে ফুল ও ফল আসে, ৫০দিন থেকে বিক্রির উপযোগী হয়।
একটি গাছ প্রায় দেড় বছর পর্যন্ত বাঁচে, এই শিম গাছ থেকে সহজে বীজ সংগ্রহ করা যায়। কৃষি কর্মকর্তা মারুফুল হক ও ফারহানা ফেরদৌস বলেন, আমরা গ্রীষ্মকালীন শিমের আলিফটি।
জাতটির বীজ সংগ্রহ করে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করেছি। কৃষকদের এই গ্রীষ্মকালীন শিম চাষের ওপরে প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য উপকরণও সরবরাহ করা হয়েছে। হরিশপুর, রসুলপুরে মাঠে প্রায় ৬০বিঘা জমিতে এই গ্রীষ্মকালীন শিমের চাষাবাদ হয়েছে। বাজারে এই সময়ে শিম না থাকায় কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন।
আশা করা যায় মাত্র ১৫হেক্টর জমি থেকে কৃষকরা এক কোটি ৫০লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবেন। অনেক কৃষকরা আগে শিম বীজ সংগ্রহ করেছেন, তারা এখন নিজের জমিতে আবাদ করছেন।