নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরে প্রায় একমাস টানা তাপপ্রবাহের পর অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টির দেখা মিলেছে। সোমবার বিকেল থেকে রাত অবধি মাঝারি ধরণের বৃষ্টির দেখা মিলেছে। তবে বৃষ্টির আগে ঝড়ো হাওয়ায় তাপপ্রবাহের লাগামে যেনো ফাঁস পড়ে। সোমবার রাত ৯টা পর্যšত্ম যশোরে ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। যদিও এদিনও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসও রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত প্রায় এক মাস ধরেই যশোরে তীব্র ও অতি তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে গত প্রায় দশদিন ধরে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করেছে। আর গত মঙ্গলবার দুপুরে (৩০ এপ্রিল) যশোরে এই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।
যশোরে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে গোটা প্রাণ-প্রকৃতি দগ্ধ এবং জনজীবন বিপর্য¯ত্ম হয়ে পড়ে। রা¯ত্মা, ঘাট, ফসলের ড়্গেেত ছিল মরম্নর উত্তাপ। ঘরের বাইরে বের হলেই আগুনের হল্কা গায়ে লাগছিল। শ্রমজীবী মানুষ ছিলেন চরম ভোগাšিত্মতে। সূর্যের তাপ এতই বেশি ছিল যে, খোলা আকাশের নিচে হাঁটলেও গরম বাতাস শরীর ঝলসে যাচ্ছিল। পুরো এপ্রিল মাসজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে যশোরসহ সারাদেশের মানুষজন বৃষ্টির জন্য প্রার্থনাও করেন।
এরই মাঝে সোমবার যশোরে তাপমাত্রা ছিল কিছুটা কম। তীব্র ও অতি তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে তাপমাত্রা নেমে আসে মৃদু তাপপ্রবাহে। আকাশে ছিল মেঘের আনাগোনা। বিকেলে শুরম্ন হয় ঝড়ো হাওয়া। এরপর নামে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। সন্ধ্যা পর্যšত্ম গুড়িগুড়ি বৃষ্টির পর রাতে মাঝারি ধরণের বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যšত্ম যশোরে ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস আরও জানায়, এই বৃষ্টিতে স্ব¯িত্ম ফিরলেও সোমবারও যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করেছে। এদিন যশোরে ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা মৃদু তাপপ্রবাহের মধ্যে পড়ে।
যদিও এই বৃষ্টিতে কমেছে তাপপ্রবাহের উত্তাপ। জনজীবনে ফিরেছে কিছুটা স্ব¯িত্ম। বৃষ্টির দেখা পেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জুড়েও যেনো ঝড় তুলেছে নেটিজেনরা। সবার টাইমলাইনে বৃষ্টি আর মেঘের ঘনঘটা ছবি।
যশোর শহরের দড়াটানায় কথা হয় কলেজ শিক্ষার্থী তাহমিদের সাথে। তিনি জানান, তীব্র গরমের মধ্যে কয়েকদিন ধরে পরীক্ষা চলছে। আজ সারাদিন রোদ ও আকাশে মেঘ ছিলো। বিকেলের পর বৃষ্টির দেখা মিলেছে। এই বৃষ্টিতে কিছুটা স্ব¯িত্ম ফিরেছে।
শহরের রিকশাচালক শফিয়ার রহমান বলেন, অনেকদিন ধরে বৃষ্টির অপেক্ষায় ছিলাম। তীব্র গরমের পর অল্প বৃষ্টি হলেও সবাই স্ব¯িত্ম পেয়েছে।
আরেক রিকশাচালক আব্দুল আজিজ বলেন, এই কদিনে যে গরম পড়েছে, রিকশার প্যাডেল ঘুরালে মনে হয় জানটা বেরিয়ে যাবে। আজ স্ব¯িত্মর বৃষ্টি হচ্ছে। কী-যে ভালো লাগছে বলে বুঝাতে পারবো না।
এদিকে, মাঝারি এই বৃষ্টিতে গাছসহ সবজি জাতীয় ফসলের উপকার হয়েছে বলেও জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সুশাšত্ম কুমার তরফদার বলেন, যশোর জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহের পর বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ বৃষ্টিতে তিল, পাটসহ সবজি জাতীয় ফসলের উপকার হয়েছে। তবে এ বৃষ্টিতে ধানের তেমন ড়্গতি হয়নি। যশোর জেলায় মোট ৭৫ শতাংশ ধান কৃষকের ঘরে উঠে গেছে।