নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোর শহরে অপ্রতিরোধ্য চাকু চক্র। প্রতিনিয়ত চাকুবাজদের হামলার শিকার হচ্ছে কেউ না কেউ। গত ২০ ঘণ্টায় আরো ৯জন চাকুবাজদের আক্রমনের শিকার হয়েছে। এ সময় ২ চালককে চাকু মেরে ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে গেছে চক্রের সদস্যরা। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ৯জন চাকুর শিকার হয়েছিলেন। প্রতিটি ঘটনা শহর ও শহরের আশপাশের।
মঙ্গলবার ২০ঘণ্টা শহরে নতুন করে আরও ৪জন ছুরিকাঘাতে জখম হয়েছে। তাদেরকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও ৪/৫ জন হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জরুরি বিভাগ থেকে জানা গিয়েছে।
<<আরও পড়তে পারেন>> চাকুবাজরা অপ্রতিরোধ্য : একদিনে ৯জন ছুরিকাহত
হাসপাতালে ভর্তি আছেন, শহরের বারান্দীপাড়া এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম(৬০), চাঁচড়া এলাকার আজিজুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ টিপু সুলতান(৩০), সিটি কলেজ পাড়া এলাকার মৃত বিভুতী ভুষন সরকারের ছেলে সুধাংশ সরকার(৪৫) এবং সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামের মৃত নোয়াব আলী মোল্ল্যার ছেলে একলাছুর মোল্ল্যা(৪৮)।
হাসপাতালে ভর্তি রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সোমবার দিনগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিটি কলেজ মোড়ে বিকাশের দোকানে একই এলাকার বাধনসহ অজ্ঞাত নামা আরো ২জনের সাথে টাকা লেনদেন নিয়ে বাকবিতন্ডা হয়। এর একপর্যায়ে বাধন চাকু দিয়ে তার বুকের বাম পাশে আঘাত করে ক্যাশ থেকে টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে প্রতিবেশি দোকানিরা তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এদিকে সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের চাচড়া শিব মন্দির এলাকায় চালক টিপুকে ছুরিকাঘাত করে ইজিবাইক নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। পরে পথচারিরা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইজিবাইক চালক সুধাংশ সরকার জানান, প্রতিদিনের মত ইজিবাইক নিয়ে বের হন। মঙ্গলবার বিকেলে শহরের ঢাকা রোড বিসিএমসি কলেজের পাশের বিসমিল্লাহ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে পৌছালে অজ্ঞাতনামা মুখোশধারি ৪/৫জন গতিরোধ করে চাকু দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে আঘাত করে রাস্তায় ফেলে দিয়ে ইজিবাইকটি নিয়ে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল ভর্তি করেন।
এছাড়া মঙ্গলবার দুপুরে আপন ভাইপোর কোদালের কোপে চাচা একলাছুর মোল্ল্যা রক্তাক্ত জখম হন। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
অপরদিকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ মিলন ডালি জানান, প্রতিনিয়ত যশোরে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটছে। ৬/৭জন প্রতিদিনই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এবাদেও প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন গড়ে ৪/৫জন। তিনি আরও জানিয়েছেন মঙ্গলবার ২০ঘণ্টা শহরে নতুন করে আরও ৪জন ছুরিকাঘাতে জখম হয়ে ভর্তি হয়েছেন। এসময় ৪/৫ জন জরুরি বিভাগ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে গিয়েছে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার পার্থ প্রতিম চক্রর্বতী জানান, যশোরে ছুরিকাঘাতের ঘটনা আগের তুলনায় বেড়েছে। হাসপাতালের সাজারি বিভাগের চিকিৎসকরা প্রতিদিন ৪/৫জন রোগীকে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। এবাদেও জরুরি বিভাগ থেকে অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন।