বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোল¬াহাটে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধু কুলসুমকে (২০) মারপিটের পর বিষ খাইয়ে হত্যা করার অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে পিবিআই। গত ১৭ অক্টোবর উপজেলার মোল¬ারকুল গ্রামে শশুর বাড়িতে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে বলে আদালতে অভিযোগ করা হয়। আদালতের আদেশে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন এটি তদন্ত করছে। এদিকে বিষয়টি ভিন্নভাবে ধামাচাপা দিতে ওই পরিবার ও তাদের নিকটজনরা উঠে পড়ে লেগেছে বলেও বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে।
অভিযোগ ও কুলসুমের পরিবার সুত্রে প্রকাশ, প্রায় আড়াই বছর পূর্বে উপজেলার সরসপুর গ্রামের মো. আলমগীর শেখের মেয়ে কুলসুমের বিয়ে হয় মোল¬ারকুল গ্রামের ফিরোজ কাজীর ছেলে সজিব কাজীর সাথে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুক দাবিতে কুলসুমকে শারীরিক নির্যাতন চালায় তার স্বামী সহ শশুর বাড়ির লোকেরা। নিরুপায় হয়ে মেয়ের সুখের আশায় কয়েকবার নগদ টাকা ও বিভিন্ন আসবাবপত্র দেয়া হয়েছে। তবু তাদের চাহিদা না মেটায় আবারো যৌতুক দাবিতে নির্যাতন চালায়। এঘটনায় কয়েক মাস আগে কুলসুমকে তার শ্বশুর বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে আনতে যায় পিতা আলমগীর শেখ। তখন আলমগীর শেখকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয় কুলসুমের স্বামী, শশুর ও দাদা শশুর। এরপর পুলিশের সহযোগিতায় কুলসুমকে উদ্ধার করে বাড়িতে নেয় তার পিতা। এর কয়েকদিন পর আর কোন নির্যাতন না করার শর্তে আবারো কুলসুমকে নিয়ে যায় তার শশুর বাড়ির লোকজন। এরপর আবারো ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবিতে নির্যাতন চালায়।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ঘটনার দিন গত ১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে ও বিকেলে দুই দফায় যৌতুক দাবিতে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা কুলসুমকে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে সীমাহীন নির্যাতন চালায় তার স্বামী সজিব কাজী, শ্বশুর ফিরোজ কাজী, শাশুড়ি স্বপ্না বেগম, দাদা শশুর দুর্লভ কাজী, দেবর রাজীব কাজী ও আরিফ কাজী। পরে জোর পূর্বক বিষ খাইয়ে হত্যা নিশ্চিত করে।
মোল¬ারকুল গ্রামের কাছেদ আলী মীর বলেন, গোপন নয়, যা দেখছি তাই প্রকাশ্যে কবো, ওরা সবাই মিলে মারছে (শশুর বাড়ির সকলে হত্যা করছে)। তখন চিৎকার শুনে আমি আইছিলাম, নিজে দেখছি, ওগে আপন যারা তারাও আইছিলো (কুলসুমের স্বামীর প্রতিবেশী আপনজনরা), এন্যে বাঁচানোর জন্যি তারা সত্যি কথা নাও কথি পারে। আমি সব যায়গায় সত্যি কথা কবো। এর বিচার না হলে খুন খারাপি বাড়বে’।
আরেক প্রতিবেশী রেহানা জানান, ‘কুলসুম চিৎকার করে বলছিলো ওরে আল¬াহ আমারে মারে ফ্যাললো, কিডা কোহানে আছেন বাচান। এমন চিৎকার শুনে আমি সহ অনেকে আসি। ততক্ষণে কুলসুমের জব বন্ধ হয়ে গেছে। তখন তারে ভ্যানে করে হাসপাতালের কথা বলে নিয়ে গেছে। এর কিছু সময় পর শুনি কুলসুম বেচে নেই।’
তদন্ত কর্মকর্তা বাগেরহাট পিবিআই'র ওসি জানান, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় সত্যতা উদঘাটন করা হবে।