আবুল আহসান টিটু, ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: হঠাৎ শীতে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছে সরকারি—বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর ভিড় লক্ষ করা গেছে হাসপাতালের ফ্লু সেন্টারে। হাসপাতালের বেডে ঠান্ডা জনিত শ্বাসকষ্টে অসুস্থ শিশুদের নেবুলাইজার ওষুধ নিতে দেখা গেছে।
ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের পরিসংখ্যানবিদ সুকুমার ভট্টাচার্যের দেওয়া তথ্য মতে, গত এক সপ্তাহে এ হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে প্রায় আড়াই হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন, যার অধিকাংশ বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছেন। ভর্তি রোগীদের মধ্যে অনেকে ঠান্ডাজনিত ডায়রিয়া, সর্দি—কাশি, জ্বর, ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া, হাঁপানি জটিলতা নিয়ে এসেছেন।
এ ছাড়া উপজেলার ৮টি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ১৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক, ব্রাকসহ বিভিন্ন এনজিওর স্বাস্থ্য কেন্দ্র, বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে প্রায় দেড় হাজার রোগী ফ্লুজনিত রোগের চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে অনেক রোগী হাসপাতাল বা ক্লিনিকে না গিয়ে ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছেন। ফলে প্রকৃত রোগীর সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের শিশু বিভাগের ৭ নম্বর বেডে গত ৭ দিন ধরে চিকিৎসা নিচ্ছে বাহিরদিয়া থেকে আসা ৯ মাস বয়সী শিশু রাইসা আক্তার। সকাল—দুপুর—বিকেল নেবুলাইজার দিচ্ছেন। চলছে অন্যান্য ওষুধ। আশে পাশের বেড়ে প্রায় একই বয়সী আব্দুর রহমান, সায়লা, তাসপিয়া সহ অনেক শিশু এখানে চিকিৎসাধীন।
স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, হঠাৎ শীত বেড়ে যাওয়ায় ঠান্ডাজনিত রোগির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সামনে হয়তো আরো অনেক রোগী আসবে হাসপাতালে। বর্তমানে প্যারাসিটামল, সেট্রিজিন, মন্টিলুকাস্ট, এমোক্সিসিলিন, এজিথ্রোমাইসিনসহ ঠান্ডাজনিত রোগের ওষুধের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়েছে। আমরা যতটা পারি হাসপাতাল থেকে দিচ্ছি, বাকিটা ফার্মেসি থেকে রোগীরা কিনে নেয়।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সাদাত মো. মফিদুল ইসলাম জানান, ‘আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এখন ঠান্ডাজনিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাতাসে প্রচুর ধুলোবালি, রাতে ঠান্ডা ও দিনে তুলনামূলক গরমের জন্য সর্দি—কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়ার প্রকোপ রয়েছে। তবে বেশির ভাগ রোগীই বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েই সুস্থ হয়ে যান। শিশুদের ক্ষেত্রে তিন দিনের বেশি সর্দি জ্বর থাকলে বা অসুস্থ হলে অপেক্ষা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে বলেন তিনি। এ ছাড়া বৃদ্ধ ও যাদের এলার্জি আছে তাদের তিনি বাড়তি যত্ন নিতে বলেন।