এস হাসমী সাজু : দীর্ঘ ৫ বছর পর মারচুয়ারি কুলার (মরদেহ রাখার ফ্রিজ) পেয়েছে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল। সোমবার রাতে হাসপাতালের মর্গে পৌছায় সরকারি বরাদ্দের এ কুলারটি। গতকাল মঙ্গলবার মর্গে স্থাপনের শুরু হয়েছে। আগামী ১৩ এপ্রিল স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এটি উদ্বোধন করতে পারেন। এটি চালু হলে ৪টি মরদেহ সংরক্ষের সুযোগ থাকবে।
হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে হাসপাতালের জন্য সরকারিভাবে একটি মরচুয়ারি বরাদ্দ হয়। এ মেশিনের মাইনাস ডিগ্রি তাপমাত্রায় মরদেহ সংরক্ষণ করা যায়। ওই বছরের শেষ নাগাদ কোটি টাকা মূল্যের জাপানি অত্যাধুনিক মেশিনটি চালু হয়। ৯শ টাকায় রাখা শুরু হয় লাশ। এতে ছয়টি র্যাকে ছয়জনের মরদেহ সংরক্ষণ করা যেতো। মরচুয়ারিটি হাসপাতালের মর্গের পাশের কক্ষে স্থাপন করা হয়। যার মাধ্যমে যশোরাঞ্চলের মানুষ ভীষণ ভাবে উপকৃত হতো।
অজ্ঞাত পরিচয়ের মরদেহও এখানে সংরক্ষণ করতেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । টানা তিন বছর মেশিনটি ভালো সার্ভিস দিলেও পরবর্তীতে নানা সমস্যা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে ২০১০ সালে মেশিনটি নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তীতে এটি মেরামত করা হলেও সম্পূর্ণভাবে চালু হয়নি। ফ্রিজিং মেশিনটি ২০১৮ সালে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। সচলের চেষ্টাকালে জানা যায়, গ্যাস পাইপ লাইন ছিদ্র হয়ে গেছে। এর যন্ত্রাংশ দেশে পাওয়া যায় না। এ কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে মরচুয়ারি স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করেন। এরপরে আর কোন মরদেহ সেখানে রাখা হয়নি। গত পাঁচ বছর যাবত মেশিনটি অকেজো অবস্থায় মর্গের পাশের কক্ষে পড়ে আছে। বিষয়টি নিয়ে দৈনিক সমাজের কথায় একাধিকবার বিপোর্ট প্রকাশ হলে।
সদ্য সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার আখতারুজ্জামান নতুন মারচুয়ারি কুলার (মরদেহ রাখার ফ্রিজ) প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। তার প্রেক্ষিতে জার্মানী তৈরি ৪টি মৃত দেহ সংরক্ষণে জন্য আধুনিক ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী মারচুয়ারি কুলার (মরদেহ রাখার ফ্রিজ) সোমবার রাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওর্য়াকসপ থেকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এসে পৌছায়। মঙ্গলবার থেকে এই মেশিনটি স্থাপনের কাজ চলছে।
হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের ডাক্তার আহম্মেদ তারেক শামস্ জানান, সরকারি ভাবে দেওয়া মরচুয়ারিটিতে ৪টি মরদেহ রাখা যাবে। এ বিষয়ে হাসপাতালের মরচুয়ারির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী শাহজাহান বলেন, সোমবার রাতে মারচুয়ারি কুলার (মরদেহ রাখার ফ্রিজ) টি হাতে পেয়েছি।
এ ব্যাপারে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুণ অর রশিদ জানান, সোমবার রাতে মারচুয়ারি কুলার (মরদেহ রাখার ফ্রিজ) হাসপাতালে এসেছে। মঙ্গলবার তা স্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্থাপনের কাজ শেষ হলে আগামী ১৩ এপ্রিল স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। তখন আবার লাশ সংরক্ষনের সুবিধা মিলবে।