সমাজের কথা ডেস্ক : নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। সেদিন বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ ব্যাট করতে না নামতে পারলেও এদিন খেলা হয়েছে পুরোপুরি। আফগানিস্তান সিরিজের সময় নাটকীয় অবসরের পর এই প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে ব্যাট করতে নেমেছিলেন তামিম ইকবাল। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তো অনেক দিন পর। ইংল্যান্ড সিরিজে খেলার পর আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তান সিরিজে বাদ পড়েছেন। সুযোগ হয়নি এশিয়া কাপেও। দীর্ঘদিন পর মাঠে নেমে এই দুজনের ব্যাটেই (মাহমুদউল্লাহ ৪৯, তামিম ৪৪) এসেছে দলের সর্বোচ্চ রান। তবে তাতেও বাংলাদেশের শেষরক্ষা হয়নি। ইশ সোধির ৬ উইকেটে রীতিমতো উড়ে গেছে বাংলাদেশ।
নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ২৫৫ রানের লক্ষ্যে ১৬৮ রানের বেশি করতে পারলো না টাইগাররা। নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৫৩ বল বাকি থাকতেই হার দেখতে হয় ৮৬ রানের।
নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ২৫৫ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যে প্রথমে নড়বড়ে দেখাচ্ছিল বাংলাদেশকে। ১৯ রানের মাথায় কাইল জেমিসনের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক লিটন দাস। তবে দারুণ জুটি গড়ে দলকে পথ দেখাচ্ছিলেন তামিম ইকবাল ও তানজিদ হাসান তামিম। তবে একই ওভারে জুনিয়র তামিম ও চারে নামা সৌম্য সরকারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলেন ইশ সোধি। ৬০ রানের মাথায় এই দুই ব্যাটারের বিদায়ের পর টিকতে পারেননি তাওহীদ হৃদয়ও। দলীয় ৭০ রানের মাথায় এই সোধির বলেই ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হন হৃদয়।
৯২ রানের মাথায় দারুণ খেলতে থাকা তামিম ফিরলে বিপদ বাড়ে বাংলাদেশের। অনেকদিন পর ফিরে এসে ৫৮ বলে ৭ চারে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন তামিম। এরপর শেখ মেহেদিকে নিয়ে ৪২ রানের জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ। ১৩৪ রানের মাথায় আবার সোধির আঘাত। ১৭ রান করা মেহেদিকে সরাসরি বোল্ড করেন এই লেগ স্পিনার। আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে এই প্রথমবার ৫ উইকেট শিকার করলেন তিনি। ১৪৯ রানের মাথায় মাহমুদউল্লাহ ফিরলে সব আশা শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫ হাজার পূর্ণ করতে মাত্র ১ রান দরকার ছিল তার। সেটির আক্ষেপ নিয়েই মাঠ ছাড়লেন তিনি। মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর বাংলাদেশের প্রায় নিশ্চিত হয়ে পড়ে। শেষদিকে ২১ রান করে নাসুম আহমেদ কেবল পরাজয়ের ব্যবধান কমান। ৪১.১ ওভারেই ১৬৮ রানে গুটিয়ে যায় লিটন দাসের দল।
মিরপুর শের—ই—বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ২৫৪ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। সিরিজের প্রথম ওয়ানডের মতো এদিনও শুরুতেই কিউই শিবিরে আঘাত হানেন পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। দলীয় ১৫ রানে উইল ইয়ংকে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের ক্যাচ বানান তিনি। ২৬ রানে ফেরান আরেক ওপেনার ফিন অ্যালেনকে।
পাওয়ার প্লেতে মোস্তাফিজের সঙ্গে উইকেটশিকারে নামেন অভিষিক্ত পেসার খালেদ আহমেদও। কিউিইদের দলীয় ৩৪ রানের মাথায় তিনি ফেরান চাদ বোয়েজকে। পাওয়ার প্লেতে ওই ৩ উইকেট হারিয়েই ৪১ রান করে নিউজিল্যান্ড।
পাওয়ার প্লেতে গল্প বাংলাদেশের পক্ষে থাকলেও, এর পরে আলো ছড়াতে শুরু করেন নিউজিল্যান্ডের দুই মিডল অর্ডার ব্যাটার হেনরি নিকোলস এবং টম ব্লান্ডেল। উইকেটে জমে থাকার পাশাপাশি রানও তোলেন দারুণ গতিতে। ১৩১ রানের মাথায় সেই খালেদের আঘাতেই ভাঙে ৯৫ রানের এই জুটি।
দলীয় রান দুইশর আগেই ফেরেন রাচিন রবীন্দ্র, টম ব্লান্ডেল এবং কোলে ম্যাককোনি। তবে শেষদিকে ইশ সোধি (৩৫) ও কাইল জেমিসনের (২০) দৃঢ়তায় দলের রান আড়াইশ পাড় হয়। শেষ পর্যন্ত নির্ধাতি ৫০ ওভারের ৪ বল আগে থাকতেই ২৫৪ রানে অলআউট হয় কিউইরা। সর্বোচ্চ ৬৮ রান আসে টম ব্লান্ডেলের ব্যাট থেকে।
অভিষেকেই ৩ উইকেট নিয়েছেন খালেদ। যদিও রান দিয়েছে ওভারপ্রতি ছয়ের বেশি করে। ১০ ওভারে মাত্র ৪৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন শেখ মেহেদি। ২ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ।