নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ৩২ মামলার আসামি নিহত রমজান হত্যা মামলার প্রধান ২১ মামলার আসামি রাজা ওরফে পিচ্চি রাজাকে (২৫) আটক করেছে র্যাব—৬ যশোর। সেই সাথে রমজান হত্যা মামলা আরো ৪ আসামিকে আটক করা হয়েছে। আটক পিচ্চি রাজা শহরের রেলগেট কলাবাগানপাড়ার মুজিবর ওরফে জাহাঙ্গীরের ছেলে। তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান স্যুটারগান, ৪ রাউন্ড গুলি, তিনটি চাইনিজ কুড়াল, একটি টিপ চাকু, একটি সাধারণ চাকু এবং একটি দা উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিশোধ নিতে আটককৃতরা রমজানকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
আটক অন্য চারজন হলো, ৯টি মামলার আসামি বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক মোড়ের কানা বাবুর ছেলে সুমন ওরফে ট্যাটু সুমন (২৮), ৪টি মামলার আসামি চোরমারা দিঘিরপাড় এলাকার শাহ আলম মৃধার ছেলে শাওন ওরফে পটকে শাওন (২২), ৪টি মামলার আসামি খড়কী এলাকার কুদ্দুসের ছেলে ইবাদুল (২৫) এবং ৪টি মামলার আসামি রেলগেট কলাবাগান পাড়ার কানা বাসারের ছেলে তুহিন (২৮)।
র্যাব—৬ যশোর ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, গত ৮ মার্চ যশোরের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী রমজান হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়ার পর র্যাব আসামি আটকের তৎপর হয়। সে মোতাবেক রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে শহরের রায়পাড়া ইসমাইল কলোনি এলাকা থেকে শাওন ওরফে পটকে শাওন এবং ইবাদুলকে আটক করা হয়। রাত পৌনে তিনটার দিকে শংকরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলা অন্যতম আসামি এবং আরেক চিহ্নিত সন্ত্রাসী সুমন ওরফে ট্যাটু সুমনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে সোমবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে বাঘারপাড়া উপজেলার চাড়াভিটা নামক স্থান থেকে আসামি তুহিনকে আটক করা হয়।
তিনি জানিয়েছেন, এই চারজনের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে সোমবার বিকেল তিনটার দিকে সন্ত্রাসী রাজা ওরফে পিচ্চি রাজাকে শার্শা উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম দাদখালী এলাকা থেকে আটক করা হয়। যদিও অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই এলাকার লোকজন পিচ্চি রাজার পরিচয় পেয়ে স্থানীয় বিজিবি সদস্যদের হাতে তুলে দেয়। পরবর্তীতে র্যাব সদস্যরা সংবাদ পেয়ে সেখানে গিয়ে রাজাকে হেফাজতে নিয়েছে।
মেজর সাবিক হোসেন জানিয়েছেন, আটক রাজাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তার দেখানো মতে চোরমারা দিঘিরপাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই আগ্নেয়ান্ত্র—গুলি ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। মূলত রাজা রেলগেট পশ্চিমপাড়াসহ আশেপাশের এলাকায় নানা অপকর্ম করে বেড়াতো। তাকে সেল্টার দিতো নিহত রমজান শেখ।
তারা একসাথে মাদকের ব্যবসা করতো। কয়েকদিন আগে মাদক ব্যবসা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এছাড়া চাঁদাবাজি ও আধিপত্য নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ তৈরী হয়। কিছু দিন আগে পিচ্চি রাজার স্ত্রী পুলিশের হাতে ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক হয়। তার ধারণা রমজান পুলিশে সংবাদ দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছে। সে কারণে রমজানের ওপর ক্ষোভ তৈরী হয়। প্রতিশোধ নিতে সুযোগ খঁুজতে থাকে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পিচ্চি রাজাকে আটকের জন্য তৎপর হয়ে উঠে। রাজার ধারণা রমজান তাকে ধরিয়ে দিতে পারে।
এছাড়া তুহিনের পিতা কানা বাসার মাদকসহ আটক হয় পুলিশের হাতে। তুহিনের ধারণা তার বাবাকে রমজান ধরিয়ে দিয়েছে। এই কারণে রাজা ও তুহিন প্রতিশোধ নিতে সুযোগ খুজতে থাকে। তারা অন্য আসামিদের সাথে একত্রিত হয়ে রমজানকে তার শ্বশুর বাড়ির সামনে পেয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। র্যাব জানিয়েছে, আটক ৫জনকে থানা পুলিশের হাতে রাতেই সোপর্দ করা হচ্ছে। এছাড়া পিচ্চি রাজার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে আরো একটি মামলা দেয়া হয়েছে।