২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
হাসপাতালে শিশু রোগী বাড়ছেই

এস হাসমী সাজু: যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে হঠাৎ শিশু রোগী বেড়েছে। বর্তমানে শিশু ওয়ার্ডে মাত্র ২৪টি শয্যার বিপরীতে রোগী রয়েছে ৮৭জন। এর মধ্যে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু রয়েছে ৮জন। শুধু গতকাল বুধবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হাসপাতালের শিশু বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছে মোট ২১৮জন শিশু। এর মধ্যে বহিঃবিভাগেই চিকিৎসা নিয়েছে ১৯৫ জন। চলতি মাসের ১৮ দিনে মোট ৪হাজার ১২৯জন শিশু চিকিৎসা নিয়েছে।

তবে চিকিৎসকরা বলছেন আবহাওয়া পরির্বতনের কারণে শিশুরা এখন জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শুধু যশোর নয়, নড়াইল, মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলার রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসছে।

হাসপাতালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি মাসের ১তারিখ থেকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত ১৮ দিনে শিশু বিভাগ থেকে মোট ৪হাজার ১২৯জন শিশু চিকিৎসা নিয়েছে। এ সময়ে অন্তঃবিভাগে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ৩৯২জন এবং বহিঃবিভাগে তিনজন চিকিৎসকের চেম্বার থেকে চিকিৎসা নিয়েছে মোট ২হাজার ৭৩৭জন শিশু।

হাসপাতালে বহির্বিভাগে একদিকে যেমন শিশু রোগীর ভিড় বাড়ছে, তেমনি ওয়ার্ডে ঠাঁই হচ্ছে না শিশুদের। বেডের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি রোগী হওয়ায় শিশুরা শয্যা না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে।

হাসপাতালের শিশু বহির্বিভাগে সদর উপজেলার তালবাড়িয়া গ্রামের আসাদুজ্জামান ১০ মাস বয়সী মেয়ে তাবাসসুমকে চিকিৎসা করাতে আসেন। তিনি জানান, এক সপ্তাহ ধরে জ্বরে আক্রান্ত তার সন্তান। একই উপজেলার হামিদপুর গ্রামের স্বপন হোসেনের ৫দিন বয়সী নবজাতক ইয়াসমিনকে আনা হয় বহিঃবিভাগে। তিনি জানান, তার মেয়ের ঠন্ডা লেগেছে। তাই চিকিৎসকের কাছে এনেছেন। শুধু ওই দুই শিশু নয়, ১৯৫জন শিশুকে হাসপাতালের শিশু বহিঃর্বিভাগ থেকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। কোনো কোনো দিন এ বহির্বিভাগ থেকে আরো বেশি শিশুকে চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে।

<< আরও পড়ুন >> হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী বেড়েছে

চলতি অক্টোবর মাসে ১৮দিনে বহিঃবিভাগ থেকে ২ হাজার ৭৩৭ জন শিশু চিকিৎসা নিয়েছে। শিশুরা অনেকেই জ্বর, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। যাকে বলা হচ্ছে ‘ভাইরাস ফ্লু’। অনুরূপভাবে হাসপাতালের আন্তঃবিভাগ শিশু ওয়ার্ডে রোগী কানায় কানায় ভর্তি। ২৪টি শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছে ৮৭জন শিশু। তারা সবাই ‘ভাইরাল ফ্লু’তে আক্রান্ত। বেডে জায়গা না হওয়ায় অতিরিক্ত শিশু ওয়ার্ডে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে। রোগীর ভিড়ে শিশু ওয়ার্ডে চলাফেরা করা দায় হয়ে পড়েছে।

সারাক্ষণ শিশুদের কান্না আর চিৎকারে পরিবেশ ভারী হয়ে পড়েছে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, মাত্র একটি নেবুলাইজার মেশিনে সব শিশুর চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। নেবুলাইজারের সুবিধা দেয়ার জন্যে শিশুদের নিয়ে অভিভাবকরা দীর্ঘ সময় লাইনে অপেক্ষা করছেন। ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্ট হলেই শিশুদের নেবুলাইজার দেয়া হয়।

সূত্র জানিয়েছে, শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলার বিষয়টি নিয়ে খোদ চিকিৎসকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, পরিস্থিতি ভাইরাল ফ্লুতে রূপ নিয়েছে।

হাসপাতালের বহির্বিভাগের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আব্দুস সামাদ বলেন, শিশু বহির্বিভাগে এত বেশি রোগী আসছে যে তাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শিশু ও তাদের অভিভাবকদের ভিড়ে অনেক সময় হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। শিশুরা জ্বর—শ্বাসকষ্ট, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

যশোর মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান জানান, এখন শিশুরা ভাইরাল ফ্লুতে আক্রান্ত হচ্ছে। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি। এখন যে আবহাওয়া তা শিশুদের জন্য প্রতিকূল। এ পরিস্থিতিতে শিশুদের সুস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য অভিভাবকদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেছেন, ঠান্ডা কিংবা গরম পরিবেশে শিশুদের রাখা যাবে না। সময় উপযোগী জামাকাপড় ব্যবহার করতে হবে।

এ ব্যাপারে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হারুন অর রশিদ জানান, আমাদের হাসপাতালে বর্তমানে শিশু রোগীর ভর্তির হার বেড়েছে। আমরা নিবিড়ভাবে শিশুদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে গড়ে শতাধিক রোগী ভর্তি থাকছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram