২০শে জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে ৯৬ মৃতদেহ

সমাজের কথা ডেস্ক : শান্তি ফিরছেই না ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিগত দাঙ্গা শুরু হওয়ার পর থেকে রাজ্যের তিনটি বড় হাসপাতালের মর্গে ৯৬টি মৃতদেহ পড়ে আছে।

এসব মৃতদেহ নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ভয়ে লোকজন হাসপাতাল থেকে স্বজনদের মৃতদেহ নিয়ে যাচ্ছেন না। এমন পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক গঠিত সাবেক বিচারপতিদের একটি কমিটি রাজ্য সরকারকে মৃতদের একটি তালিকা প্রকাশ্যে প্রকাশ করার পরামর্শ দিয়েছেন। এর মাধ্যমে যেন মৃতদের সনাক্ত করা যায় এবং মৃতদেহগুলি তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা যায়।

তবে এতেও যদি কোনো মৃতদেহের দাবিদার এগিয়ে না আসেন, তাহলে সসম্মানে অন্তিম সংস্কার করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এ কমিটি।

ভারতের সরকারি পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত মণিপুরে জাতিগত সহিংসতায় ১৭৫ জন নিহত হয়েছেন। মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলের সিনিয়র সাংবাদিক ওয়াহেংবাম টেকেন্দর সিং বিবিসিকে বলেন, জাতিগত সহিংসতায় নিহত ৯৬ জনের মরদেহ ইম্ফলের দুটি হাসপাতালে রাখা হয়েছে— রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস, জওহরলাল নেহেরু ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস এবং চুড়াচাঁদপুরের রিজিওনাল মেডিকেল কলেজ।

<< আরও পড়ুন >> মণিপুরে কারফিউ, মানছে না কেউ

ইম্ফল উপত্যকায় মেইতেই গোষ্ঠীর আধিপত্য। এখানকার দুটি হাসপাতালে রাখা মৃতদেহগুলি কুকি নৃগোষ্ঠীর অন্তর্গত। চুড়াচাঁদপুরের জেলা মেডিকেল হাসপাতালে যে মৃতদেহগুলি রাখা হয়েছে তার মধ্যে কুকি এবং মেইতেই উভয় গোষ্ঠীরই দেহ রয়েছে, যদিও তাদের মধ্যে কুকিদের মৃতদেহের সংখ্যা বেশি।

টেকেন্দর সিং বলেন, সমস্যা হলো দাঙ্গার পরে কুকিরা মেইতেইর এলাকায় যেতে পারে না এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের লোকেরা কুকিদের এলাকায় যেতে পারে না।

মণিপুরের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায় হিন্দু মেইতেই জনগোষ্ঠীর। এদের অনেকেই বৈষ্ণব। রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশ তারাই। অন্যদিকে পাহাড়ি অঞ্চলে বাস করেন যেসব নাগা এবং কুকি উপজাতির মানুষ, তাদের একটা বড় অংশ খ্রিস্টান। এরকম ৩৩ টি উপজাতি গোষ্ঠীর বসবাস রাজ্যের ৯০ শতাংশ পাহাড়ি অঞ্চলে। গত কয়েক বছর ধরেই মেইতেইরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন যে তাদের তপশিলি উপজাতি (এসটি) হিসেবে শ্রেণীভুক্ত করার জন্য। ভারতে যে সব সম্প্রদায় ঐতিহাসিকভাবে সমান সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে— তাদেরকে এসটি শ্রেণীভুক্ত করে তাদের জন্য সরকারি চাকরি, কলেজে ভর্তি ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির আসন সংরক্ষণ করা হয়।

এরপর মে মাসে মণিপুর হাই কোর্ট রাজ্য সরকারকে মেইতেই সম্প্রদায়ের দাবি বিবেচনার নির্দেশ দেয়। কিন্তু রাজ্যের অন্য উপজাতিগুলোর মধ্যে এতে উদ্বেগ সৃষ্টি হয় যে মেইতেইদেরকে এসটি মর্যাদা দেওয়া হলে তাদের চাকরির জন্য তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হবে। এর পরেই সেখানে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। আর তা এখনো চলছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram