সাইফুল ইসলাম : স্বাস্থ্য সচেতন শহরবাসীর শরীরচর্চার নিরাপদ স্থান যশোর পৌরপার্ক। এ পার্কে ভোর নামে সচেতন মানুষের শরীরচর্চায়। কেউ হাটে, কেউ দৌঁড়ায়, কেউবা করে শরীরের ব্যায়াম। কোন দলকে দেখা যায় প্রাণভরে শ্বাস নিতে, উচ্চস্বরে হাঁসতে। তবে স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তির একটি বড় অংশ থাকেন ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের রোগী।
তাদের জন্য গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা কেন্দ্র। একটি ছাতার নিচে টেবিল চেয়ার সর্বস্ব চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র থেকে ডায়াবেটিস পরীক্ষা, প্রেসার মাপা, রক্তচাপ পরিমাপ, ওজন মাপা, সরিষার তেল ও মধু বিক্রি করছেন এক ব্যক্তি।
ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা সেবা প্রদানকারীদের একজন সরকারি এম এম কলেজ পাড়ার আনিসুর রহমান কবির। তিনি জানান, একটি ফুড কোম্পানি চাকরির পাশাপাশি প্রতিদিন ভোরে পৌর পার্কে আসেন। এভাবে সাত বছরের বেশি সময় ধরে আসছেন। এখান থেকে একটা বাড়তি আয়ও হয়।
আবার মানুষকে সেবাও দেওয়া যায়। তার সব পণ্যই খাঁটি। এই কারণে বেশিরভাগই নিয়মিত কাস্টমার। যারা একবার সেবা নেন, তারা বারবার নেন। তিনি আরও জানান, যশোর আসার আগে যখন ঢাকাতে থাকতেন তখনও যে এলাকায় থাকতেন তার পাশে একটা পার্কে সকাল বেলা তিনি ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা সেবা দিতেন। তিনি জানান, ব্যবসা তার মূল উদ্দেশ্য নয় মূলত মানুষের সেবার জন্য এ কাজ করা।
<< আরও পড়ুন >> অবাক ঘড়ি, কাটা ঘোরে উল্টো দিকে!
অপরজন শহরের খড়কি এলাকার আব্দুস ছাত্তার। তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর যখন যশোরে চলে আসেন, তখন অবসরে কী করবেন সেই ভাবনা থেকে কেনেন ওজন মেশিন ও পেশার মাপার যাবতীয় যন্ত্র। এরপর প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর চলে আসেন পৌর পার্কে।
পার্কের গেটের এক পাশে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ দোকান। সেখানে প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ১০ টা ও বিকেলে এ ব্যবসা করছেন। তিনি জানান, অবসর সময় কাজে লাগিয়ে বাড়তি কিছু আয়ের জন্য মূলত এ ব্যবসা শুরু করা।
এখান থেকে যে আয় হয় তা দিয়ে মোটামুটি ভালো চলে। আব্দুস ছাত্তার আরও জানান, দিনের অন্য সময় ইনকাম কম হলেও সকালে ভালো হয়।
পৌর পার্কে হাঁটতে আসা হাদিউজ্জামান জানান, হাঁটতে এসে মাঝে মাঝে এখান থেকে নিজের ওজন ও পেশার মাপা হয়। এ সেবা পেয়ে আমরা খুশি। তিনি আরও জানান, এখানে ওজন ও ডায়াবেটিস চেক করতে অল্প কিছু টাকা দিতে হয়। ভোরবেলা যারা হাঁটতে আসে, তাদের অনেকেই এই চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন।
স্কুল শিক্ষক আলমগীর হুসাইন জানান, যারা স্বাস্থ্য সচেতন, তারাই সাধারণত পার্কে হাঁটতে আসে। তারা অনেকেই এসব ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা সেবা নেন। এরমাধ্যমে আমাদের আয়োজন করে হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যাওয়া লাড়ছে না। হাটতে হাটতেই জেনে নেয়া যাচ্ছে মরীরের অবস্থা কী।