নিজস্ব প্রতিবেদক : বিক্ষোভের মুখে যশোরে হরিজন পল্লীর বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করে দিলো যশোর পৌরসভা। বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে পৌর কর্তৃপক্ষ যশোর পুরানো পৌরসভার হরিজন কলোনির বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেয়। পরে হরিজন কলোনীবাসী এমকে রোডে ময়লা—আবর্জনা ফেলে এবং আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে বিদ্যুত সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়।
বিক্ষোভকারী মুক্তা হরিজন বলেন, বর্তমান মেয়র তাদের কোনো সুযোগ—সুবিধা দেয় না। আবার তারা বিদ্যুৎ লাইন কেটে দিয়েছে। তাদের যে বেতন—ভাতা দেওয়া হয় এতে তাদের সংসার চলে না। বিদ্যুৎ বিল দেবো কিভাবে।
সাধু হরিজন বলেন, দিন একশো টাকা বেতনে আমরা খাবো কি আর বিদ্যুৎ বিল দিবো কি? এ মেয়র আমাদের কোনো খেঁাজ রাখে না। আবার যখন মন চায় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়। স্বাধীন হওয়ায় পর থেকে আমার বাপ—দাদারা এখানে থাকে—খায়। আমাদের বাসা ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল দেয়া লাগবে না এ শর্তে এখানে রাখা হয়েছে ওই সময় থেকে। তিনি আরও বলেন, যদি বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়। তাহালে বেতন বাড়িয়ে দিক পৌরকতৃর্পক্ষ। আমার পৌরসভার সকল বিল পরিশোধ করবো।
হরিজনদের নেতা মতিলাল হরিজন বলেন, আমাদের তিন হাজার টাকা বেতন দেয়। আমরা কিভাবে বিদ্যুৎ বিল দিবো আর আমাদের ছেলে—মেয়ে পরিবার নিয়ে কিভাবে চলবো। তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের মুখে আমাদের বিদ্যুৎ লাইন সচল করে দিয়েছে। আপাতত আমরা আন্দোলন স্থগিত করেছি।
যশোর পৌরসভার মেয়র হায়দার গণি খান পলাশ বলেন, অবৈধভাবে যশোরে তিনটি হরিজন কলোনিবাসী পৌরসভার জমিতে বসবাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। এ তিন কলোনি থেকে প্রায় ২০ কোটি টাকার মতো বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। এই হরিজনদের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, তোমরা বিদ্যুৎ মিটার লাগিয়ে তোমাদের মতো করে ব্যবহার করো।
আর পৌরসভার পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ বিভাগের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে দেবো। তারা এ প্রস্তাবে রাজি হয়েছিল। এবং সেই অনুযায়ী যশোর পৌরসভা কাজ এগিয়ে নিচ্ছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে কয়েক দিন আগে তারা জানান, এ প্রস্তাবে রাজি না। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করায় তাদের লাইন কেটে দেয়া হয়।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যশোর পুরোন পৌরসভার হরিজন কলোনির বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেয় পৌরকর্তৃপক্ষ। পরে হরিজন কলোনিবাসী এমকে রোডে ময়লা—আবর্জনা ফেলে এবং আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করেন। পুলিশ প্রশাসন গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।