১০ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
হরতাল—অবরোধের বিকল্প কর্মসূচি গ্রহণ বাঞ্ছনীয়
103 বার পঠিত

সাম্প্রতিক হরতাল—অবরোধ এবং আগুন সন্ত্রাসের কবলে পড়ে দিশাহারা দেশের বিভিন্ন এলাকার অনেক যানবাহনচালক, যাত্রী ও সাধারণ মানুষ। জীবিকার প্রয়োজনে অবরোধের মধ্যেই যানবাহন চালাতে গিয়ে আগুনে দগ্ধ হয়ে অনেকে দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সেই সঙ্গে তারা মানবেতর জীবন পার করছেন ঘর ভাড়া, নিত্যপ্রয়োজনীয় সাংসারিক ব্যয় ও ঋণের কিস্তি পরিশোধের দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে। এসব ভুক্তভোগী পরিবারের প্রশ্ন, রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকা সত্ত্বেও তারা কেন এই নির্মম সহিংসতার শিকার? এখন তাদের সংসার কিভাবে চলবে, কেইবা চালাবে?

দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আগুন সন্ত্রাসের ঘটনা নতুন নয়। ক্ষমতাবঞ্চিত কিছু রাজনৈতিক কর্মী, অতি উৎসাহী সমর্থক এবং কেউ কেউ টাকার প্রলোভনে এসব নাশকতা কার্যক্রম চালাচ্ছে। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে দফায় দফায় বিএনপি—জামায়াতের ডাকা হরতাল—অবরোধে নাশকতার আগুনে যেসব যানবাহন পুড়েছে, সেগুলোর অধিকাংশই বাস। এছাড়াও ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, পিকআপ, অটোরিকশা, নছিমন, লেগুনা, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িসহ পুলিশের গাড়িও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বাদ যায়নি ট্রেন ও অ্যাম্বুলেন্সও। এসব ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। পাইকারি ও খুচরা বাজারে কমেছে পণ্যদ্রব্য কেনাবেচা। দেশের পোশাক খাতসহ রপ্তানিমুখী খাতগুলোয় শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এফবিসিসিআই সভাপতির মতে, হরতাল—অবরোধে প্রতিদিন ক্ষতি হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি।

পাশাপাশি এ ধরনের রাজনৈতিক সহিংস কর্মকা— বিদেশী ক্রেতা ও বিনিয়োগকারীদের কাছে দেশ সম্পর্কে ভুল বার্তাও দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ধ্বংসাÍক রাজনৈতিক কর্মসূচি পরিহারের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ী—অর্থনীতিবিদসহ সর্বস্তরের মানুষ। চলছে বিজয়ের মাস। এই গৌরবের মাসে কিছুটা অস্বস্তি নিয়ে এবারের বিজয় দিবস উদ্যাপন করতে যাচ্ছে জাতি, যা সত্যিই দুঃখজনক। বিষয়টি সংশি¬ষ্ট সকল রাজনৈতিক দল ও নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত।

মূল্যস্ফীতির চাপ এবং বৈশ্বিক সংকটের অভিঘাতে বিপর্যস্ত জনজীবন। তার ওপর সহিংস আন্দোলনের উৎকণ্ঠায় তটস্থ শান্তিপ্রিয় সাধারণ নিরীহ মানুষও। প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে মানবাধিকার। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় কোনো দেশের জনগণের ন্যায্য দাবির প্রেক্ষিতে অধিকার আদায়ের আন্দোলন যুক্তিযুক্ত। তাই বলে অগ্নিসংযোগ কিংবা সহিংসতার মাধ্যমে আন্দোলনের নামে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা কখনোই কাম্য নয়। হরতাল—অবরোধ—অগ্নিসন্ত্রাস একটি অগণতান্ত্রিক, অসাংবিধানিক ও সন্ত্রাসী কর্মকা—। এসব অসাংবিধানিক কর্মকাে—র বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন। দেশের জনজীবনের স্বস্তি ফেরানোর লক্ষ্যে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এক্ষেত্রে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলেরও অহিংস আন্দোলনের পন্থা অবলম্বন এবং হরতাল—অবরোধের বিকল্প কর্মসূচি গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতা মানুষের জীবনযাত্রায় যে নেতিবাচক প্রভাব ও আতঙ্ক তৈরি করছে, তা সংশি¬ষ্ট নীতিনির্ধারকদের সদিচ্ছা—শ্রদ্ধাবোধ ও গণতান্ত্রিক রীতিনীতির প্রতি আস্থার মাধ্যমে দূর হোক, জনমনে স্বস্তি ফিরুক— এটাই প্রত্যাশা।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram