নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরের ঝিকরগাছায় বিপ্লব হত্যাকাণ্ড ও মিলন হত্যাচেষ্টা মামলায় দু’জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও চারজনকে ২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছে যশোরের আদালত। সোমাবর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (তৃতীয় আদালত) তাজুল ইসলাম এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো ঝিকরগাছার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার ইমামুল ইসলাম ও আক্তাফুর। অপর সাজাপ্রাপ্তরা হলো ইছহাক আলী, মালেক ও তোফায়েল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্তি পিপি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ঝিকরগাছার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কালু ছেলে বিপ্লব হোসেন ও তার ভাইরা ভাইয়ের ছেলে মিলনের সাথে আসামিদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।
২০১৪ সালের ১৭ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা ঝিকরগাছা বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিল। পথিমধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কায়েম আলীর বাড়ির সামনে পেঁৗছালে আসামিরা বিপ্লব ও মিলনের গতিরোধ করে গালিগালাজ করে। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে বিপ্লবকে আসামি আক্তাফুর ঝাপটে ধরলে ইমামুল ইসলাম ছুরিকাঘাত করে।
বিপ্লবকে উদ্ধার করতে গেলে অপর আসামিরা মিলনকে মারপিট ও ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম করে। চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত বিপ্লব ও মিলনকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ১৮ জুন আহত বিপ্লবের পিতা কালু বাদী হয়ে ৪ জনের নামউল্লেখসহ অপরিচিত কয়েকজনকে আসামি করে ঝিকরগাছা থানায় হত্যার চেষ্টার মামলা করেন। বিপ্লবের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ১৬ দিন পর বিপ্লব মারা যায়।
মামলার তদন্ত শেষে আটক আসামিদের দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে হত্যার সাথে জড়িত থাকায় ওই ছয়জনকে অভিযুক্ত ও এজাহারনামীয় আসামি কুরবান আলীর অব্যহতি চেয়ে ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মককর্তা এসআই মাহামুদ আল ফরিদ ভূইয়া।
দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিপ্লবকে হত্যার দায়ে আসামি ইমামুল ইসলাম ও আক্তাফুরকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ মাস করে কারাদণ্ড এবং বিপ্লব হত্যায় সহযোগিতা ও মিলনকে হত্যাচেষ্টার দায়ে ইসহাক, মালেক, মিজানুর ও তোফায়েকে ২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও একমাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
সাজাপ্রাপ্ত ইমামুল ও আক্তাফুর পলাতক রয়েছে।