৪ঠা অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
‘স্যার’ সম্মোধন না করায় কারাগারে রোগীর পিতা
‘স্যার’ সম্মোধন না করায় কারাগারে রোগীর পিতা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ১০৪ ডিগ্রি জ্বর নিয়ে দু’বছরের শিশু সাইয়ানকে গতকাল যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন নানী হালিমা বেগম। জরুরি বিভাগ থেকে ভর্তি নিয়ে তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় শিশু ওয়ার্ডে। ওয়ার্ডে নেয়ার পর সেবিকাদের পরামর্শে রোগীর স্বজনরা সহকারী রেজিস্ট্রারের কক্ষে যান। কক্ষে সহকারী রেজিস্ট্রার ছিলেন না, বসে ছিলেন ইন্টার্ন ডাক্তার রবিউল ইসলাম। শিশুর নানী ডাক্তারকে ‘তুমি’ করে সম্মোধন করে নাতির চিকিৎসার অনুরোধ করেন। রোগীর খোঁজ না নিয়ে ক্ষেপে ওঠেন ইন্টার্ন ডাক্তার রবিউল। দরজায় নক করে না ঢোকা, ‘স্যার’ না বলে তুমি বলায় রীতিমত উত্তেজিত হয়ে ওঠেন তিনি। ওই মহিলাকে ‘অসভ্য’ বলে গালি দেন। ডাক্তারের উত্তেজিত আচরণে কক্ষে ঢোকেন শিশুর পিতা আবু বক্কর। তিনি শাশুড়ির সাথে অসৌজন্য আচরণের প্রতিবাদ করেন। বেঁধে যায় হট্টগোল।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ৪তলা শিশু ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। মুহূর্তে ঘটনাস্থলে পৌছায় ইন্টার্ন চিকিৎসক নেতারা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ বাৎচিতের পর মামলা দিয়ে শিশুর পিতাকে গারদে পাঠিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অবশ্য মামলার বাদী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার পার্থ প্রতীম চক্রবর্তী স্বীকার করেছেন ইন্টার্নদের অন্দোলনের ভয়ে তারা এ ব্যবস্থা নিয়েছেন।

শিশুটির নানি হালিমা বেগম জানান, ওয়ার্ডে নিয়ে সেবা দেওয়ার জন্য সেবিকাকে বললে তিনি ডাক্তারের চেম্বারে পাঠিয়ে দেন। দরজা নক না করে চিকিৎসকের চেম্বারে প্রবেশ করেন। তখন রুমে বসে অন্যান্য শিশু রোগীদের টিকিটে ব্যবস্থাপত্র লিখছিলেন ডাক্তার। তিনি (হালিমা বেগম) চিকিৎসককে তুমি বলে সম্মোধন করে দ্রুত সেবা প্রদানের অনুরোধ জানান। কিন্তু চিকিৎসক রোগীকে সেবা না দিয়ে ‘স্যার’ বলে না ডাকার কারণে গালি দেন। এ সময় তার জামাই আবু বক্কর চিকিৎসককে ক্ষমা চেতে বলেন। তখন কথা কাটাকাটি হয়।


এক পর্যায়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ এক হয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে জানালে তিনি রোগীর স্বজন ও ডাক্তারদের নিয়ে আরএমও রুমে শালিস বৈঠকের আয়োজন করেন। এ সময় তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশিদ শিশুর বাবাকে ক্ষমা চাইতে বললে তিনি অপরাধ না করার কারণে ক্ষমা চাননি। ওয়ার্ডের অন্যান্য রোগীর স্বজনদের অনুরোধে সেবিকারা শিশুটিকে প্রাথমিক সেবা প্রদান করেন। পরে শিশুর বাবাকে আসামি করে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার পার্থ প্রতীম চক্রবর্তী কোতোয়ালি থানায় মামলা দিয়ে শিশুর বাবাকে জেল হাজতে পাঠানএ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশিদ কেনো বক্তব্য না দিয়ে সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান।


হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার পার্থ প্রতীম চক্রবর্তী বলেন, ‘শিশু সাইয়ানকে প্রোপারলি চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সৃষ্ট ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মীমাংসার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ইন্টার্নরা শিশুর পিতার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে কর্ম বিরতি পালনের হুমকি প্রদান করে। ফলে হাসপাতাল পরিচালনার স্বার্থে শিশুটির বাবার নামে মামলা দিয়ে পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখন থেকে হাসপাতালে সেবা নিতে এসে কোন হট্টগোল করা যাবে না। করলে একই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram