সাইফুল ইসলাম : তীব্র গরমে প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্ত যশোরে পুরোপুরি মানা হয়নি। সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও বেসরকারিভাবে পরিচালিত বেশ কয়েকটি শিশু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলেছে স্বাভাবিকভাবে। শহর ঘুরে দেখা গেছে, গরমের কারণে শিশুদের স্কুল বন্ধ থাকলেও খোলা ছিল কোচিং সেন্টার। ‘লেখাপড়ার ক্ষতি’ এড়াতে অভিভাবকরা শিশুসন্তানদের কোচিংয়ে পাঠাতে ভুল করেননি।
গতকাল সোমবার (৫ জুন) থেকে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একই সময়ে মাধ্যমিকের প্রাথমিক শাখাও বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এছাড়া মাধ্যমিকের ছাত্রদের সমাবেশ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর। কিন্তু সরকারের সিদ্ধান্ত না মেনে যশোরের বেশ কয়েকটি বেসরকারি স্কুল ও কোচিং সেন্টার গতকাল খোলা ছিল।
সরজমিনে দেখা গেছে শহরের বিভিন্ন এলাকায় বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্ডারগার্টেন ও কোচিং সেন্টারগুলো খোলা ছিল। সরেজমিনে দেখা যায়, নিউমার্কেট এলাকায় শিশুস্বর্গ প্রাথমিক বিদ্যালয়, অপরাজিতা স্কুল, স্বপ্নচারী আইডিয়াল স্কুল, নিত্য অনুশীলন একাডেমিক, কেয়ার, উদ্দিপন কোচিং, পলাশ স্যারের কোচিং, ঘোপের বনফুল প্রাথমিক বিদ্যালয়, জিরো পয়েন্ট মোড়ে মেধা বিকাশ কোচিং সেন্টার, এমদাদ স্যারের কোচিং, বাপ্পী স্যারের কোচিং, আলমাস একাডেমিক কেয়ার, স্টার কোচিং, এডুকেয়ার একাডেমি, অক্ষর শিশু শিক্ষালয়, নবদূতসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় বেসরকারি প্রাথমিক স্কুল ও কোচিং সেন্টারগুলো খোলা ছিলো।
বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বনফুলের প্রধান শিক্ষিকা নাসিমা আক্তার বলেন, তাদের শিক্ষার্থীদের নোটিশ না দিতে পারার কারণে আজ স্কুল খোলা রেখেছেন এবং আগামীকাল থেকে স্কুল ছুটি দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, তাদের স্কুল বেসরকারি এনজিওর অর্থায়নে চলার কারণে তারা সরকারের সব নির্দেশনা মেনে চলতে পারেন না।
জাহাঙ্গীর স্যারের কোচিংয়ের বাপ্পী সরকার বলেন, চলতি মাসের ১১ তারিখ থেকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা হওয়ায় তারা কোচিং সেন্টার খোলা রেখেছেন। তিনি আরও বলেন, গরমে তারাও টিকতে পারছেন না। তাই তারা চিন্তা করছেন গরমের ভেতর কোচিং বন্ধ রাখবেন।
এডুকেয়ার কোচিং সেন্টারের তৌহিদুজ্জামান জানান, কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত সরকার দেয়নি, আর এই কারণে আমরা কোচিং খোলা রেখেছি। তিনি আরও জানান, তাদের যেহেতু প্রাইভেট কোচিং সেন্টার তাই অনেক সময় নির্দেশনা মানতে পারেন না। কোচিংয়ে সর্বোচ্চ আলো বাতাসের ব্যবস্থা আছে এই কারণে শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
এক অভিভাবক জানান, এতো গরম পড়ছে যে তারা নিজেরাই দিশেহারা হয়ে যাচ্ছেন। সেখানে কোচিং খোলা থাকায় তারা আসতে বাধ্য হয়েছেন। তীব্র গরমে কোচিং বন্ধ রাখলে তাদের জন্য ভালো হতো।
ফুয়াদ নামে এক শিক্ষার্থী জানায়, ‘গরমে কষ্ট হলেও কোচিংয়ে না আসলে পিছিয়ে পড়তে হবে তাই এসেছি। তাছাড়া কয়েকদিন পর যেহেতু পরীক্ষা এখন কোচিংয়ে না আসলে পড়া ভাল হবে না।’ এই শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানায়, ‘কোচিং খোলা থাকলে আমরা আসতে বাধ্য, না আসলে আমার বাচ্চা পিছিয়ে পড়বে।’