নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরে হত্যাকা-ের শিকার দুবাই প্রবাসি সোহেল রানার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তবে হত্যাকা-ের ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। পুলিশ জড়িত অভিযোগে কাউকে আটক করতে পারেনি। এই হত্যাকা-ের অভিযোগের তীর এখন তার স্ত্রী খুশি মীম ও তার প্রেমিক ফারাবির দিকে। যদিও ঘটনার পর থেকেই এলাকা ছেলে পালিয়েছে ফারাবি। আর নিহতের স্ত্রী খুশি মীমকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
তবে এই ব্যাপারে এখনো থানায় কোন মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি আরো জানিয়েছেন, আসামি আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গত ১২ এপ্রিল সন্ধ্যায় সদর উপজেলার চান্দুটিয়া-মঠবাড়ি গ্রামের মাঝে বুকভরা বাওড়ের পাশে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে সোহেল রানাকে। গতকাল বৃহস্পতিবার যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নিহত সোহেল রানা একই উপজেলার হালসা গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছয় বছর আগে থেকেই সোহেল রানা দুবাইতে চাকরি করেন। চার বছর আগে পার্শ্ববর্তী আলমনগর গ্রামের আব্দুল আলিমের মেয়ে খুশি মীমকে বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের বোরহান মাহির (২) নামে একটি ছেলের জন্ম হয়। কিন্তু স্বামী বিদেশে থাকার সুযোগে খুশি মীম আলমনগর গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে ফারাবির সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি জানতে পেরে মীমকে নজরদারিতে রাখে সোহেলের পরিবার।
এরই মধ্যে গত দুই রমজানে দুবাই থেকে বাড়িতে এসেছে সোহেল রানা। এতে আরো ক্ষিপ্ত হয় ফারাবি। দেশে ফেরায় সোহেলকে ফারাবি মোবাইল ফোনে হুমকিও দিয়েছে। এরই মধ্যে ৪/৫দিন আগে সোহেল স্ত্রী মীমকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন। স্ত্রীকে রেখে বাড়িতে আসার পরে সোহেলকে খুন করতে সুযোগ খুঁজতে থাকে ফারাবি। বুধবার সন্ধ্যায় নিজের মোটরসাইকেলে ভাইপো জিসানকে সাথে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছিলেন তিনি।
চান্দুটিয়া-মঠবাড়ি গ্রামের মাঝে বুকভরা বাওড়ের পাশে পৌঁছানো মাত্র ফারাবির নেতৃত্বে আরো ৪/৫জন এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে যায় সোহেলকে। সাথে থাকা ভাইপো মোবাইল ফোনে বাড়িতে সংবাদ দেয়। তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে এই হত্যাকা-ে তার স্ত্রী খুশি মীমের ইন্ধন রয়েছে বলে দাবি করেছে সোহেলের পরিবার। অবশ্য খুশি মীম এই অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেছেন, বেশ কিছুদিন ধরে ফারাবি তাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। বিষয়টি ফারাবির পরিবারের অভিযোগ করা হয়েছিল। তবে ফারাবিই সোহেলকে খুন করেছে এমন বিষয়টি উভয় পরিবারের পক্ষ থেকে স্বীকার করেছে। পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও ফারাবিকে সন্দেহ করে আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন, কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম চৌধুরী।