নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরে জমজ সন্তানের জন্ম দেয়া মানসিক ভারসাম্যহীন নারী ও দুই নবজাতককে আজ বৃহস্পতিবার যশোর থেকে স্থানান্তর করা হবে। মানসিক ভারসাম্যহীন মা’কে পাঠানো হবে গাজীপুরে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে; আর জমজ দুই সন্তানকে পাঠানো হবে খুলনার ছোটমনি নিবাসে। আদালতের নির্দেশনায় জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মা ও জমজ সন্তানকে এই আশ্রয়ে প্রেরণ করা হচ্ছে।
জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সদস্য সচিব সমাজ সেবা অধিদপ্তর যশোরের উপ পরিচালক অসীত কুমার সাহা বলেন, যশোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভারসাম্যহীন মা’কে গাজীপুরের কাশিমপুর সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে এবং জমজ দুই সন্তানকে পাঠানো হবে খুলনা ছোট মণি নিবাসে। বৃহস্পতিবার সকালে আলাদা অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদেরকে প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার দুপুরে যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভায় মা ও সন্তানদের এই দুই আশ্রয়কেন্দ্রে প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর গত বৃহস্পতিবার পুলিশের আবেদনের শুনানিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত—১ এর বিচারক মানসিক ভারসাম্যহীন নারী ও দুই নবজাতকের বিষয়টি নিষ্পত্তি করার বিষয়ে জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডকে দায়িত্ব দেন।
এদিকে, ১৭ দিন ধরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে জমজ সন্তান ও তাদের মা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা সুস্থ আছেন। কিন্তু তাদের দায়িত্ব স্বজনদের কেউ নিতে রাজি হননি। এতে ওই মা ও তার দুই সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়েন প্রশাসন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, গত ৩ সেপ্টেম্বর যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ধলগ্রাম ইউনিয়নের নতুন গ্রামের জামিরুল ইসলামের বিছালির (খড়) ঘরে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী জমজ সন্তান প্রসব করেন। পরে গৃহকর্তা জামিরুল ওই নারীকে বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এরপর থেকে মা ও দুই নবজাতক যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাসপাতালে ভর্তির সময় ওই নারীর পরিচয় অজ্ঞাত থাকলেও পরবর্তীতে পিবিআই ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। জানা যায়, ওই নারীর নাম মোসাম্মৎ মাহিনুর। তিনি খুলনার তেরখাদা উপজেলার বারাসাত গ্রামের চান্দু মিয়ার মেয়ে।
পিবিআেই মাহিনুরের মা ও ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা মাহিনুর ও তার সন্তানদের নিতে রাজী হয়নি। এই অবস্থায় হাসপাতাল কতৃর্পক্ষের সহযোগিতায় হাসপাতালের সমাজসেবা অফিস, জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রসূতি মা ও দুই নবজাতকের তত্ত্বাবধায়ন করছেন। আর দু’জন আনসার ভিডিপি সদস্য সার্বক্ষণিক তাদের দেখভাল করছেন।