সমাজের কথা ডেস্ক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর—১ (লালপুর—বাগাতিপাড়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী চৌকিদার (গ্রাম পুলিশ) এসকেন আলীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়েই অঝোরে কাঁদলেন জমি বেচে মনোনয়ন কেনা এসকেন।
৪ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু নাছের ভূঁঞা মনোনয়ন বাতিল বলে ঘোষণা করেন। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ফরম পূরণ না করায় মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী এক শতাংশ ভোটারের (৩৪৯৪ জন) স্বাক্ষর পূরণ করতে বলা হয়েছে। সেখানে এসকেন শুধু ৯৮০ জন ভোটারের স্বাক্ষর দাখিল করেছেন। তাই নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী শর্ত পূরণ করতে না পারায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
তার মনোনয়ন বাতিল হওয়ার খবরে কাঁদতে থাকা এসকেন বলেন, ‘আমার ফরম ঠিকঠাকভাবে পূরণ করা হয়েছে। কিন্তু কি কারণে আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে তা জানি না।’
সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচন করতে জমি বিক্রি করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নফরম তুলেছিলেন এসকেন আলী নামের ওই চৌকিদার (গ্রাম পুলিশ)। এ ঘটনায় লালপুরে জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। চৌকিদার এসকেন লালপুর উপজেলার বালিতিতা ইসলামপুর গ্রামের মৃত আকবর আলীর ছেলে।
তিনি গত ২০ বছর ধরে দেখা স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতেই এমপি নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জানান।
এসকেন আলী জানান, লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চৌকিদার পদে তিনি ২৭ বছর ধরে কর্তব্যরত আছেন। স্থানীয় নির্বাচনেও তিনি ইউপি সদস্য পদে নির্বাচন করেছেন দুইবার। অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে গেলেও আশা ছাড়েননি। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে টাকার অভাবে নির্বাচন করতে পারেনি তিনি। নির্বাচনে জিতলে গরীব—অসহায় মানুষের জন্য কাজ করবেন তিনি।
তার স্ত্রী শাহনাজ বেগম জানান, এসকানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে ২০ বছর আগে। তিনি যা বেতন পান, তা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে। ইউনিয়ন পরিষদে থাকায় অনেক মানুষের সঙ্গে তার চেনাজানা। এর আগেও তিনি স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে হেরে গেছেন। এবার শেষ সম্বল এক কাঠা জমি বিক্রি করে এ আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে আবেদন ফরম তুলেছেন। টানাটানির সংসার হলেও স্বামীর এমন আশা পুরণ করতে বাধা দেননি তিনি।