২১শে জানুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সিরিয়াল কিলার রসু খাঁর মৃত্যুদণ্ড হাইকোর্টে বহাল
সিরিয়াল কিলার রসু খাঁর মৃত্যুদণ্ড হাইকোর্টে বহাল

সমাজের কথা ডেস্ক : চাঁদপুরের পারভীন হত্যা মামলায় সিরিয়াল কিলার রসু খাঁর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একই মামলায় অপর দুই আসামি রসু খাঁর ভাগনে জহিরুল ইসলাম (৩৫) ও তার সহযোগী মো. ইউনুছকে (৩৮) মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিচারপতি সৈয়দ মো. জিয়াউল করিম ও বিচারপতি কে এম ইমরুল কায়েশের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আয়েশা ফ্লোরা, মো. রবিউল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম ও বেলজীস নাফিসা হক। অপরদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. সফি উল্লাহ।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, গত ৪ জুলাই রসু খাঁসহ তিন জনের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষ হয়েছে। শুনানিতে সিরিয়াল কিলার রসু খাঁসহ তিন আসামির অপরাধের ভয়াবহতা তুলে ধরেছি। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার আর্জি জানিয়েছিলাম।

এর আগে চাঁদপুর সদর উপজেলার মদনা গ্রামের ছিঁচকে চোর রসু খাঁ মসজিদের ফ্যান চুরির ঘটনায় কমিউনিটি পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে একে একে বেরিয়ে আসে লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের তথ্য। সে নিজের মুখে স্বীকার করে ১১ জন নারীকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা। ভালোবাসায় ব্যর্থ হয়ে একসময় সিরিয়াল কিলারে পরিণত হয় রসু খাঁ। টার্গেট ছিল ১০১টি হত্যাকাণ্ড ঘটানোর। আটকের আড়াই মাস আগে পারভীনকে হত্যা করে রসু খাঁ। রসু যাদের হত্যা করেছে তারা সবাই ছিল গার্মেন্টস কর্মী। পরে তাকে এবং তার দুই সহযোগীকে পারভীন হত্যা মামলায় আসামি করা হয়।

ওই হত্যা মামলায় সিরিয়াল কিলার রসু খাঁসহ (৪৫) তিন জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আদালত। অপর দুই জন হলেন রসু খাঁর ভাগনে জহিরুল ইসলাম (৩৫) ও তার সহযোগী মো. ইউনুছ (৩৮)।

২০১৮ সালের ৬ মার্চ চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুল মান্নান এ রায় দেন। এরপর মামলার নথিসহ ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। একইসঙ্গে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে আসামিরা।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রসু খাঁ চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের মদনা গ্রামের মুন খাঁ ওরফে আবু খাঁর ছেলে। জহিরুল পার্শ্ববর্তী ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের ছৈয়াল বাড়ির মো. মোস্তাফার ছেলে। আর ইউনুস একই গ্রামের মৃত মিসির আলীর ছেলে।

হত্যার শিকার পারভীন আক্তার ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা ইউনিয়নের পালতালুক গ্রামের আবুল কালামের স্ত্রী। তার বাবার নাম মৃত কাজল খান।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২০ জুলাই রাতে রসু খাঁ ও অপর আসামিরা ফরিদগঞ্জ উপজেলার মধ্য হাঁসা গ্রামের মাঠে পারভীন আক্তারকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে। এ ঘটনার পরদিন ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।

ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, পারভীনের বাম স্তনে ও দুই পায়ের উরুতে ২০টি সিগারেটের ছেঁকার দাগ ছিল। ওই সময়ে পারভীন অজ্ঞাত হওয়ার কারণে ২০০৯ সালের ২১ জুলাই ফরিদগঞ্জ থানার এসআই মীর কাশেম আলী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন এসআই মোশফিকুর রহমান একই বছরের ১৩ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

সে সময় চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হাবিবুল ইসলাম তালুকদার জানান, মামলাটি ৯ বছর চলমান থাকা অবস্থায় আদালত ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। পাশাপাশি আসামিরা তাদের অপরাধ স্বীকার করায় আদালত এই রায় দেন। রসু খাঁর বিরুদ্ধে এটি ছাড়াও আদালতে আরও সাতটি মামলা রয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram