নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতির মাধ্যমে বিএডিসির সার আত্মসাতের মামলায় সাবেক ভান্ডার কর্মকর্তা আজগর আলীকে বিভিন্ন মেয়াদে ১৪ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে ৩ কোটি ৭৪ লাখ ৮১ হাজার ১৬ টাকা রাষ্টের অনুকুলে ফেরত প্রদানের আদেশ দেয়া হয়েছে। তবে মৃত্যুবরণকারী অপর দুইজনকে এই মামলায় দায় থেকে খালাস দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার যশোরের স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক এই রায় দিয়েছেন। দন্ডপ্রাপ্ত আজগর আলী বাঘারপাড়া উপজেলার আরাজী সিলিমপুর গ্রামের মৃত আরশাদ আলী মোল্যার ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, আসামি আজগর আলী বিএডিসির সহকারী পরিচালক (সার) পদে ভান্ডার কর্মকর্তা হিসেবে ২০১১ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। বিএডিসির এক নম্বর গুদামে সার কম মনে হওয়ায় একটি কমিটি বিষয়টি তদন্ত করে। তদন্তে ৩২০ মেট্রিক টন এমওপি সার কম পাওয়া যায়। যার মূল্য ৭৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৬০ টাকা। এ ঘটনায় ৬ সেপ্টেম্বর যশোর বিএডিসির যুগ্ম পরিচালক (সার) রতন কুমার মন্ডল কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। দুর্দীতি দমন কমিশন মামলাটি তদন্ত করে।
তদন্ত সূত্রে জানসা গেছে, খুলনা থেকে যশোর বিএডিসির গোডাউনে বিভিন্ন প্রকারের সার আনার সময় ভান্ডার কর্মকর্তা আজগর আলী ও উপসহকারী পরিচালক ফাহাদ আল মামুন ব্যবসায়ী এমএ রাশেদ ও মমিনন উদ্দিনের কাছে ৯৪৪ মেট্রিক টন সার বিক্রি করে। এরমধ্যে মামলার তদন্তকালে ভান্ডার কর্মকর্তা আজগর আলী একশ’ মেট্রিক টন সারের দাম পরিশোধ করে। বিএডিসির স্টক রেজিস্ট্রার ও গোডাউনের সারের হিসাব মিলিয়ে আরো ৮৪৪ মেট্রিক টন সার দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছে বলে তদন্তে উঠে আসে। ফলে মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৬ সারের ১৪ নভেম্বর ওই চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী।
সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি আজগর আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় ৪০৯ ধারায় ৭ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়। ৪২০ ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরো ৪ মাসের কারাদণ্ড। দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২ হাজার টাকা জরিমানা।
অনাদায়ে আরো ২ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই সাথে উপসহকারী পরিচালক ফাহাদ আল মামুন, মোমিন উদ্দিন এবং এমএ রাশেদের মৃত্যু হওয়ায় তাদের খালাস দেয়া হয়েছে। রায়ে সব সাজা একই সাথে চলবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ হিসেবে তাকে ৭ বছর কারাবাস করতে হবে। রায় ঘোষণা শেষে আজগর আলীকে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেয়া হয়েছে।