কামরুজ্জামান,বাগেরহাট প্রতিনধি : ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যভুক্ত স্থাপনা বাগেরহাটের খানজাহান আলী (রহ) এর বসত ভিটা খননে মিলেছে সাড়ে ৬শ’ বছরের পুরোনো টাইলস ও আলংকৃত ইট। একই সাথে মিলেছে পয়োানিষ্কাশন প্রণালির নালা, পোড়ামাটির তৈরি পাইপসহ প্রদীপদানি, পোড়ামাটির পুঁতি, লাল, কালো ও ধূসর বর্ণের মৃৎমাত্র, প্লেট, গ্লাস, পিরিচ পভৃতি।
গতকাল মঙ্গলবার প্রাপ্ত এসব প্রত্নতত্বের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। বাগেরহাট সদর উপজেলার ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের সুন্দরঘোনা গ্রামে বসত ভিটার ঢিবিতে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের আয়োজনে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান।
এসময় বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া তাসনিম, প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক লাভলী ইয়াসমিন, সহকারী পরিচালক গোলাম ফেরদৌস, ষাটগম্বুজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আখতারুজ্জামান বাচ্চু, বাগেরহাট জাদুঘরের কাস্টডিয়ান মোহাম্মাদ যায়েদ, আল আমীন, প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের ফিল্ড অফিসার মোসাঃ আইরীন পারভীন, হাসানুজ্জামানসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে প্রত্নতত্বর প্রদর্শনী খবরে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা খানজাহান আলী (রহ) এর বসত ভিটায় ভীড় জমান। খননে প্রাপ্ত প্রতœতাত্তিক নিদর্শন দেখে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
ষাটগম্বুজ খানজাহানিয়া-জব্বারিয়া আদর্শ আলিম মাদরাসার ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত ফারিয়া বলেন, বাগেরহাট মানেই খানজাহান আলী (রহ)। খানজাহানের বসত ভিটায় এসে যেসব পুরোনো ব্যবহার্য্য পাত্র ও পাথর দেখলাম। তা দেখে আমি অভিভুত। সাড়ে ৬‘শ বছর আগেও যে মানুষ আধুনিক ছিল, তা এখানের নির্মাণ শৈলি দেখলে বোঝা যায়।
প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক লাভভি ইয়াসমিন বলেন, ‘খান জাহানের বসতভিটা হিসেবে সংরক্ষিত এই প্রত্নতত্ব স্থলটিতে বেশ কয়েকবার খনন করা হয়েছে। এবারের খননে প্রাচীন দেয়াল, মেঝে, পয়োানিষ্কাশন প্রণালির নালা, পোড়ামাটির তৈরি পাইপসহ বিভিন্ন স্থাপত্য নিদর্শন প্রদীপদানি, পোড়ামাটির পুঁতি, লাল, কালো ও ধূসর বর্ণের মৃৎমাত্র, প্লেট, গ্লাস, পিরিচ, নল, জালের গুটি, টাইলস, অলংকৃত ইটসহ বিভিন্ন প্রতœবস্তু পাওয়া গেছে। এই প্রদর্শনী শেষে প্রতœবস্তুগুলো বাগেরহাট যাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে। পরবর্তীতে এই গবেষনাপত্র প্রকাশেরও ইচ্ছে পোষণ করেন বিভাগীয় এই কর্মকর্তা।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, পৃথিবীর প্রাচীন শহরের মধ্যে খলিফাতাবাদ অন্যতম। যা কালের বিবর্তনে বাগেরহাট নাম ধারণ করেছে। বাগেরহাটের ইতিহাস, ঐহিত্য অনেক প্রাচীন ও সম্মৃদ্ধ। প্রত্মসম্পদে ভরপুর এই জেলা। এই জেলাকে পর্যটকদের জন্য আরও বেশি আকর্ষনীয় করতে প্রত্মসম্পদ বিষয়ে গবেষণা বৃদ্ধি করতে হবে। এ জন্য প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তরকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের আহবান জানান জেলার এই শীর্ষ কর্মকর্তা।