১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সাকিবদের হারিয়ে আবারও চ্যাম্পিয়ন আবাহনী
সাকিবদের হারিয়ে আবারও চ্যাম্পিয়ন আবাহনী
143 বার পঠিত

ক্রীড়া ডেস্ক : শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে দারুণ দুশ্চিন্তায় ছিলেন আবাহনী কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। তার দলের ১০জন ক্রিকেটারকেই যে ডেকে নিয়ে গেলো জাতীয় দল। নিরুপায় হয়ে ক্রিকেট অপারেশন্সের কাছে আবেদন করতে হলো কয়েকজন খেলোয়াড়কে ছাড় দেয়ার জন্য।

 

ক্রিকেট অপারেশন্স বিভাগ থেকে ৩জন ক্রিকেটারকে ছাড় দেয়া হয়েছিলো। তাদের মধ্যে ছিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জাতীয় দলে ডাক পাওয়া এই ক্রিকেটারের ব্যাটে দুর্দান্ত এক ইনিংস দেখা গেলো বিকেএসপির ৪ নম্বর গ্রাউন্ডে। ৮৮ বলে তিনি খেললেন ৮৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস।

 

ধ্রুর সঙ্গে জ্বলে উঠলো এনামুল হক বিজয় এবং অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ব্যাটও। বিজয়ের ৮০ বলে ৬৭ এবং মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ৫৪ বলে ৫৩ রানের ওপর ভর করেই সাকিব আল হাসানের শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ৪ উইকেটে হারিয়ে আবারও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট পরে নিলো আবাহনী ক্লাব।

 

প্রথমে ব্যাট করে সাকিবের ৪৯ এবং জিয়াউর রহমানের ৮৫ রানের ওপর ভর করে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৬৭ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েছিলো শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। জবাবে ৪৯.৫ ওভারে (১ বল হাতে রেখে) ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আবাহনী।

 

বিকেএসপি ৪ ও ৩ নম্বর মাঠে তখন তুমুল উত্তেজনা। ২ মাঠেই তখন বলের চেয়ে রান বেশি ছিল। ৩ নম্বর মাঠে মোহামেডান ২৫৫ রানকে ডিফেন্ড করার লড়াইয়ে ব্যস্ত।

 

তবে বেশিরভাগ দর্শক ও মিডিয়া কর্মীর চোখ স্থির ছিল আবাহনী ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ম্যাচে। কারণ এই ম্যাচটা অঘোষিত শিরোপা লড়াইয়ে পরিণত হয়েছিল। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ বলা হয়তো ঠিক হবে না। তবে আবাহনীর চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিতের ম্যাচ ছিল অবশ্যই।

 

কোনো জটিল হিসেব নিকেশ ছিল না। এ ম্যাচ জিতলেই চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত হবে আবাহনীর। শেখ জামাল ধানমন্ডির ২৬৭ রান তাড়া করতে শেষ ওভারে আবাহনীর দরকার ছিল ৯ রান।

 

শেষ ২ বলে ১ রান প্রয়োজন থাকা অবস্থায় শেখ জামাল ধানমন্ডি পেসার শফিকুলকে সোজা ব্যাটে তুলে মারলেন আবাহনী অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। বল গিয়ে আছড়ে পড়লো বিকেএসপি ৪ নম্বর মাঠের পশ্চিম উত্তর দিকের সাইট স্ক্রিনে। ছক্কা।

 

সেই বিশাল ছক্কার সঙ্গে সঙ্গে উৎসবে মেতে উঠলো আকাশী-হলুদ শিবির। এ উৎসব, এ আনন্দ শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ৪ উইকেটে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। এ উল্লাস লিগ ও সুপার লিগ মিলিয়ে টানা ১৪ নম্বর ম্যাচে প্রতিপক্ষকে হারানোর আনন্দ। এ জয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জাতীয় দলের বহরে থাকা ৭ শীর্ষ ক্রিকেটারকে ছাড়া প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার।

 

মঙ্গলবার বিকেএসপি ৪ নম্বর মাঠে আবাহনীর সামনে রীতিমত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। আজকের (মঙ্গলবার) রেকর্ড গরমে সূর্য যখন মধ্য আকাশে, ঠিক তখন বিকেএসপি মাঠে ছক্কা বৃষ্টির অনুপম প্রদর্শনীতে (৮ ছক্কা ও ৬ বাউন্ডারিতে) ৮৫ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস উপহার দিয়ে আবাহনীর হিসেবটা কঠিন করে দিয়েছিলেন শেখ জামালের অলরাউন্ডার জিয়াউর রহমান।

আবাহনীর সামনে জয়ের টার্গেট ছিল ২৬৮ রান। লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলী অনিকের মত ব্যাটার ছাড়া এই প্রচন্ড গরমে ২৬৮ যেন প্রায় সাড়ে ৩০০’র মত বিশাল এক লক্ষ্য।

 

কাগজে কলমে এ ম্যাচে আবাহনীর ব্যাটার ছিলেন মাত্র ৫ জন- নাইম শেখ, এনামুল হক বিজয়, সাব্বির হোসেন, আফিফ হোসেন ধ্রুব এবং অধিনায়ক মোসাদ্দেক। একেতো প্রচণ্ড গরমে ৫০ ওভার ফিল্ডিং করে তারপর ভর দুপুরে ব্যাটিংয়ে নামা, তারওপর ২৬৮ রানের বড়সড় রানের চ্যালেঞ্জ।

 

কিন্তু দলে থাকা ৫ ব্যাটারের ৩ জন, এনামুল হক বিজয় (৮০ বলে ৬৭), আফিফ হোসেন ধ্রুব (৮৮ বলে ৮৩) আর অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (৫৪ বলে ৫৩*) ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলে আকাশী-হলুদ শিবির পায় ১ বল আগে অবিস্মরনীয় এক জয়।

ওপেনার বিজয় শুরুতে বেশ আস্থার সাথে খেলে পঞ্চাশের ঘরে পা রাখেন। বিজয় ৩৩ নম্বর ওভারে আউট হওয়ার পর আবাহনীর হয়ে ম্যাচের লাগাম ধরেন আফিফ ও মোসাদ্দেক। আফিফ ২০০ পার করে যখন সাজঘরে পা বাড়ান তখনো আবাহনী জয় থেকে ৫৫ রান দুরে। তখনো আবাহনীর হাতে ছিল ৬ উইকেট। বল বাকি ছিল ৪১টি।

 

ওই গুরুত্বপূর্ণ অংশে মোসাদ্দেক ছাড়া আর কোন স্পেশালিস্ট ব্যাটারও ছিলেন না। আবাহনী ক্যাপ্টেন মোসাদ্দেক এতটুকু ঘাবড়ে না গিয়ে অবিচল আস্থায় অফস্পিনার নাহিদুল (১৯ বলে ২৪), পেসার তানজিম সাকিব (৫) ও স্পিনার রাকিবুলকে (৪*) সাথে নিয়ে দলকে জিতিয়ে সাজঘরে ফেরেন রাজ্যজয়ী বীরের মত।

 

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram