নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোরের সভাপতি সুকুমার দাস (৬৬) আর নেই।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গত সপ্তাহে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে খুলনায় নিয়ে হার্টে রিং স্থাপন করা হয়। কিন্তু এরপর আবার অসুস্থ হয়ে বুধবার তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অঙ্গণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এদিকে তার মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে যান যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু, যশোর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ, যশোর ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু, শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বুলু, সহসভাপতি ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোরের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খান দুলুসহ বিভিন্ন রাজননৈতিক, সমাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
যশোর শিল্পকলা একাডেমির সহসভাপতি ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল জানান, সপ্তাহ খানেক আগে তার হার্টে ব্লক ধরা পড়ায় খুলনার একটি হাসপাতালে নিয়ে রিং স্থাপন করা হয়। এরপর তিনি বাসায় ছিলেন। বুধবার রাত ৯টার দিকে বাড়িতে পড়ে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়েন। তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক শুভাশীষ রায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
সুকুমার দাসের বন্ধু সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোরের সাবেক সভাপতি হারুন অর রশীদ বলেন, ডাক্তাররা জানিয়েছেন হার্টে রিং পরানোর পর বিশ্রাম না হওয়ায় এক ধরনের হাইপোর শিকার হন। রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্বজনরা হাসপাতালে ভর্তি করার কিছুক্ষণ পরে আইসিইউতে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি একটিমাত্র কন্যা সন্তান, স্ত্রীসহ আত্মীয় স্বজন রেখে গেছেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে সুকুমার দাসের মরদেহ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সুকুমার দাস যশোরের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব। প্রায় চার দশক ধরে তিনি যশোরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি উদীচী যশোরের নেতৃত্বে ছিলেন। পরে পুনশ্চ যশোর নামে আরেকটি সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।
হাসপাতালে শোক প্রকাশ করে পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার বলেন, ‘সুকুমার দা’র এভাবে চলে যাওয়া মেনে নেওয়া যায়না। তার মৃত্যুর কথা শুনে হাসপাতালে ছুটে এসেছি। তার চলে যাওয়ায় সাংস্কৃতিক অঙ্গন অপূরণীয় ক্ষতি শিকার হলো। তার শূন্যস্থান কেউ পূরণ করতে পারবে না। আমি তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।
জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতন হয়েছে। সকল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্রভাগে থেকে সকল ক্ষেত্রে তিনি বিজয় এনে দিয়েছেন। আমি তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি।