সোমেল রানা, মেহেরপুর : মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি—মদনাডাঙ্গা—শ্যামপুর সড়কে সংস্কার কাজ শেষ হবার তিনমাসের মাথায় ওই সড়কে ফের সংস্কার কাজের দরপত্র আহবান করা করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। বিধান রয়েছে সড়ক সংস্কারের একবছর পর পুনঃসংস্কার কাজ করা যাবে। অথচ আইন উপেক্ষা করে তিনমাসের মাথায় দরপত্র আহবান করা হয়েছে। যা নিয়ে কানাঘুষা চলছে সংস্কার কাজের বিলের টাকা পুরোটা গিলে খাবে সওজের কর্মকর্তা ও চুক্তিবদ্ধ ঠিকাদার।
মেহেরপুর মুজিবনগর সড়কেও ৯ কোটি টাকার প্রিয়ডিক মেইনটেনেন্স ওয়ার্কের (পিএমপি মেজর) কাজে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। অনিয়ম প্রসঙ্গে সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ‘এই দেশে এই নিয়মেই কাজ করতে হয়’ বলে মন্তব্য করেন।
গত জুনে শেষ হয় মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি মদনাডাঙ্গা সড়কে প্রায় ১১ হাজার মিটার রাস্তার নির্মাণ কাজ। ওই সড়ক নির্মাণ শেষ হবার দুই মাসের মাথায় গত ৬ আগস্ট ২০২৩ প্রাক্কলন দাখিল করে উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শাহীন মিয়া ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান। প্রাক্কলনে ‘রিপিয়ারিং পটহোলস কার্পেটিং ও অয়ারিংকোর্স’, কাজের দরপত্র আহবান করে ২৮ আগস্ট ২০২৩। ৬ কোটি ৮১ লাখ টাকার এই কাজ দেয়া হয় জহুরুল লিমিটেড ও মো. আমিনুল হক লিমিটেডকে। একই দরপত্রে জেলা শহরের ওয়াবদা মোড় থেকে কালিবাড়ি পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তায় গত জুনে ২শ রোডস্ট্যাড, সাইন সিগনাল ও ক্যান্টিলিভার সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়। ওই একই রাস্তায় তিনমাসের মাথায় ফের ৬শ পিস রোডস্ট্যাড, ১০টি সাইন সিগনাল ও ৪টি ক্যান্টিলিভার সাইনবোর্ড স্থাপন কাজের দরপত্র আহবান করা।
এর আগে গত জুনে ওই সড়কে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪ হাজার মিটার মেসার্স সেলিনা এন্টার প্রাইজ, ৭৪ লাখ ৮২ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪ হাজার ৫শ মিটার মো. আমিনুল হক লিমিটেড ও ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৮শ মিটার জনি এন্টার প্রাইজ দায়সারাভাবে সংস্কার কাজ করে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মেহেরপুরের মুজিবনগর সড়কেও ৯ কোটি টাকার মেইনটেনেন্স কাজে ব্যাপক অনিয়ম করা হচ্ছে। কাজ শেষ না হতেই পাথর উঠে যাচ্ছে। রাস্তার পাশে সোলডারে কোন মাটি ব্যবহার করা হচ্ছেনা। কোদাল দিয়ে চেছে ছিলে দেখানো হচ্ছে মাটি ভরাট করা হয়েছে বলে। হাড র্সোলডারে লেভেলিংয়ে পুরুত্ব কম করা হচ্ছে। ওই সড়কে মোনাখালী ব্রিজের ৯৩ মিটার কার্পেটিংকাজে ১ কোটি ১২ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। কিন্তু কোন কাজ করা হয়নি। ১০ কিলোমিটারে ২০০ পিস ট্রাফিক সাইন বাবদ ধরা হয়েছে ১১ লাখ ১১৬০০ টাকা ধরা হয়েছে। অথচ সেখানে আগেই ট্রাফিক সাইন বসানো আছে।
মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের মো. শাহিন মিয়া বলেন— আগে পিএমপি মাইনর (প্রিওডিক মেনটেন্যান্স) কাজ করা হয়েছে। এবার পিএমপি মেজর কাজ করা হচ্ছে। এই কারণেই তিনমাসের মাথায় ফের দরপত্র আহবানের মাধ্যমে কাজ করা হচ্ছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী মঞ্জুরুল করিম এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
মেহেরপুর সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) সুজাত আলী বলেন— ‘আমরা আপনারা কোন দেশে বসবাস করছি জানেন না। নেতাদের মাধ্যমে কাজ করতে হয়। যা ইচ্ছে লিখুন।’