নিজস্ব প্রতিবেদক : সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মহাসড়কের সাথে ফিডাররোডের সংযোগস্থলে স্পিডব্রেকার বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যশোর প্রশাসন। এছাড়াও মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো চিহ্নত করে সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুর্ঘটনারোধে মহাসড়কে ইজিবাইক, নসিমন করিমন থ্রিহুইলার চলাচল বন্ধে বিশেষ অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
গতকাল রোববার সকালে যশোর জেলা কালেক্টরেট ভবনের অমিত্রাক্ষর সভাকক্ষে জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় যশোর জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সভায় সিদ্ধান্ত হয় মহাসড়কে চলাচলকারী বাস ও অন্যান্য যানবাহন বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে গতি পরিমাপে অভিযান চালানো হবে। চালকদের জন্য বিশেষ কাউন্সিলিং করা হবে। একই সাথে জনসচেতনা বাড়ানো হবে।
সভায় আলোচকরা জানান, যশোরের ডেঙ্গু পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। এর জন্যে অতিদ্রুত সদর ও অভয়নগর এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে। সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস.এম শাহীন, ৪৯ বিজিবির সহকারী পরিচালক মেজর মো. সেলিমুজ্জামান, র্যাব-৬ এর যশোর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. সাকিব হোসেন, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. নাজমুস সাকিব রাসেল, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. ইসহক, মণিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খাতুন প্রমুখ।
সভার শুরুতে জেলা প্রশাসক ও জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি জানান, প্রশাসনের সার্বিক উদ্যোগের কারণে যশোরে ঈদে সড়ক যাত্রা অপেক্ষাকৃত স্বস্তির ছিল। যত্রতত্র মাদকের ভয়াবহ বিস্তার না ঘটায় ভেজাল মাদকের কারণে মৃত্যুর ভয়াবহতাও রোধ করা সম্ভব হয়। সড়কের নিরাপত্তায় সবাই সার্বিকভাবে কাজ করেছে ফলে বড় কোনো দুর্ঘটনার খবর ছিল না, শহরের বিভিন্ন প্রান্তের যানজট কমাতে সংশ্লিষ্টরা কাজ করেছে। অইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয়তায় মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালিত হওয়ায় ঈদের সময় মাদকের ভয়াবহতাও তেমন ছিল না।
এ সময় জানানো হয়, প্রশাসনের বার বার অভিযানের ফলে বন্ধন এক্সপ্রেসের মাদক ও অবৈধ পণ্য আনার প্রবণতা কমেছে। ইতোমধ্যে ১০জন তৃতীয় লিঙ্গের যাত্রী প্রশাসন শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে যারা মাসে ৪/৫ বার ট্রেনে যাওয়া আসা করে ভারতে এবং অবৈধ পণ্য অনা নেওয়া করে। প্রশাসন অভিযান চালালে তারা অশালীন আচরণ করে। খুব শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত পদক্ষেপও নেওয়া হবে।
এ সময় ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়, স্বাস্থ্য বিভাগ ও পৌরসভাকে আরও জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিক রাখতে ক্লিনিকের বিরুদ্ধে জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয় সভায়। এ সময় সিভিল সার্জন অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত মাসে অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অণিমের কারণে ২টি ক্লিনিক বন্ধ করা হয়েছে, আগামীতেও অভিযান চলবে।
এছাড়া সভায় দলিল লেখা রেজিস্ট্রি করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে হয়রানি বন্ধ করার পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যে জেলা রেজিস্ট্রারকে বলা হয়। এ সময়, দীর্ঘ দিন যশোরে রেজিস্ট্রি অফিসে নির্ধারিত ফিস এর বাইরে কারণে অকারণে বিভিন্নভাবে দলিলকারী ও গ্রহীতাদের ভোগান্তির বিষয় সভায় আলোচিত হয়। তাছাড়া বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে নিকাহ রেজিস্ট্রার হোসাইন বার বার আইন ভঙ্গ করে অপরাধ করছেন উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার বিষয় নিয়েও আলোচিত হয়।
এর আগে জেলার বিআরটিএর পক্ষ থেকে সভায় যশোরের বিভিন্ন সড়কের দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকাগুলোর ভিডিও ও ড্রোন চিত্র প্রদর্শন করা হয়। সে এলাকাগুলো অধিকতরভাবে চিহ্নিত করে এবং বেশি বেশি জন সচেতনতা তৈরি করতে স্থানীয় পর্যায়ে কাজ করতে বিআরটিএ, সড়ক সংস্থা ও স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়।