১১ই ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মাগুরার শ্রীপুরে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে সফলতা
শ্রীপুরে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে সফলতা
258 বার পঠিত

নওয়াব আলী, মাগুরা : মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার কৃষকরা গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে। কৃষি অফিসের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় পরীক্ষামূলকভাবে ভারতীয় নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করে এ সফলতা পেয়েছেন কৃষকরা। তাদের এবার প্রতি হেক্টরে গড়ে ১৮ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে ফলন বেশি হওয়ায় আশাবাদী হয়েছে কৃষি বিভাগ এবং কৃষকরা।
এবার বর্ষা মৌসুমে উপজেলার ৩০ হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ভারতীয় নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। এই পেঁয়াজের বীজ, সার, বীজতলা করার পলিথিনসহ সকল উপকরণ চাষিদের বিনামূল্যে দিয়েছে কৃষি বিভাগ।


সূত্র মতে, দেশে উৎপাদিত শীতকালীন পেঁয়াজ ফুরিয়ে যাওয়ার পর হু-হু করে বাড়তে থাকে অতিপ্রয়োজনীয় এই ভোগ্য পণ্যটির দাম। তখন এ চাহিদা মেটানোর জন্য ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। পেঁয়াজ আমদানিতে ব্যয় হয় বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক ডলার। এ কারণেই দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে উদ্যোগ নেয় কৃষি বিভাগ। গত সেপ্টেম্বরে চাষিরা বীজতলা করেন। এরপর বীজতলা থেকে চারা তুলে জমিতে রোপণ করেছেন। এখন পেঁয়াজ উঠতে শুরম্ন করেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে উপজেলার ২২৫ জন চাষিকে এক কেজি বীজসহ সার ও বিভিন্ন উপকরণ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছিল। চলতি মৌসুমে ৫৪০ মেট্রিক টন পেঁয়াজের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আশা করা যায় লড়্গ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে এ উৎপাদন।


ডিসেম্বরে প্রথম সপ্তাহ থেকে এই পেঁয়াজ উঠতে শুরম্ন করেছে। বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ মণ। লাল রঙের প্রায় প্রতিটি পেঁয়াজের ওজন হয়েছে ২৫০ থেকে ৩৫০ গ্রাম। বাজারে পেঁয়াজের দাম এখন কম হলেও ফলন ভাল হওয়ায় লাভের আশা করছেন কৃষকরা। অসময়ে চাষ এবং ফলন ভাল হওয়ায় অনেক কৃষক নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আগামী বছর এ পেঁয়াজ চাষ আরো বৃদ্ধির সম্ভবনা রয়েছে।
উপজেলার আমলসার ইউনিয়নের কুদলা গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, এই পেঁয়াজের চাষ করে লাভবান হয়েছেন। এক একটি পেঁয়াজের ওজন ৩থেকে ৪শত গ্রাম হয়েছে। এই পেঁয়াজ তোলার পর এই জমিতে আবারো পেঁয়াজ লাগানো হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বীজ, সারসহ সব জিনিস বিনামূল্যে দিয়েছে। বিভিন্ন সময় কৃষি উপ-সহকারী অফিসাররা খোঁজ-খবর নিয়েছে এবং পরামর্শ দিয়েছেন। আগামী বছর এ পেঁয়াজ আরো বেশি লাগাবো।


উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের কৃষক মোকাদ্দেশ হোসেন বলেন, আশেপাশের কৃষকেরা পেঁয়াজ দেখে অবাক হচ্ছেন এবং এ পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ফলন ভালো হয়েছে। পাট কিংবা আউশ ধান তোলার পরে জমিটা আগে পতিত পড়ে থাকতো। কৃষি বিভাগের পরামর্শে এবার নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করে বাড়তি আয় হলো। আগামী বছরও এই পেঁয়াজ চাষ করবো।


শ্রীপুর উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী মেহেদি হাসান জানান, শীতকালে তাদের এলাকায় স্থানীয় ‘মুড়িকাটা’ নামের একটি জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়। বর্ষাকালে দেশে বারি পেঁয়াজ-৫ চাষ হয়। কিন্তু এই পেঁয়াজের বীজের খুব সংকট। এ জন্য বর্ষাকালে কোনো পেঁয়াজই চাষ হতো না। এবার নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন চাষ হয়েছে। পতিত পড়ে থাকা জমিতে এই পেঁয়াজ চাষ করে কৃষকেরা বাড়তি টাকা আয় করেছেন।


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সালমা জাহান নিপা জানান, দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ানো এবং আমদানি নির্ভরতা কমানোর উদ্দেশ্যে নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে প্রত্যাশার চেয়েও ভালে ফলাফল পাওয়া গেছে। আগামীতে চাষ আরও বাড়বে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram