সীমান্ত হাসান : যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ম্যানসেলের নেতৃত্বে সরকারি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের হামলা ও মারপিটের অভিযোগ উঠছে। রোববার দুপুরে শহরের মুজিব সড়কের প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
হামলাকারীরা এক কর্মচারীকে মারপিটের পর জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সন্ত্রাসী ম্যানসেল ও তার তিন সহযোগীকে আটক করেছে। এ ঘটনায় জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিণ থানায় মামলা করেছেন। আটক সন্ত্রাসী ম্যানসেল হত্যা, অস্ত্র, ডাকাতি ও চাঁদাবাজিসহ দেড় ডজন মামলার আসামি।
এ ঘটনায় আটককৃতরা হলেন, শহরেরর ষষ্ঠীতলাপাড়া এলাকার ফারহাদুর রহমান ওরফে আলমাস হোসেনের ছেলে মেহেবুব রহমান ম্যানসেল, তার সহযোগী ষষ্ঠীতলা এলাকার সলেমান মীরের ছেলে আরেক রাকিব হাসান, রেলবাজার এলাকার আলী হোসেনের ছেলে অনিক হাসান মেহেদী ও ষষ্ঠীতলা মুজিব সড়কের এলাকার মীর শওকত আলীর ছেলে মীর সাদি।
যশোর প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের ফিজিওথেরাপি কনসালট্যান্ট ডা. বাপ্পি কবি শেখর জানান, রোববার দুপুরে ম্যানসেল নামে একজন তাদের কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসেন। রেজিস্ট্রেশন করার পর জরম্নরি বিভাগে তাকে কিছু ব্যায়াম দেখানো হয়।
ব্যায়ামের পর একটি মেশিনে তার থেরাপি নেওয়ার কথা। প্রতিষ্ঠানের জরুরী বিভাগের কর্মী আল আমিন ওই মেশিনটি প্রস্তুত করে দেন। এ সময় অফিসের প্রধান জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিণ কর্মী আল আমিনকে ডাক দিলে তিনি রুমের বাইরে যান। থেরাপি মেশিন চালু না করে রুমের বাইরে আসায় ম্যানসেল ও তার সাথে থাকা লোকজন আল আমিনকে ডেকে নিয়ে মারপিট শুরু করেন। তার চিৎকার শুনে মুনা আফরিণ নিচে নেমে এলে তাকেও গালিগালাজ করে তাকে মারতে উদ্যত হয় সন্ত্রাসীরা।
একপর্যায়ে তাকে লাঞ্ছিত করে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয়। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত ) শফিকুল আলম চৌধুরীসহ পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে যায়। সেখানর থেকে পুলিশ ম্যানসেলসহ চারজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিণ আটক চারজনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
মামলার পর সন্ধ্যায় পুলিশ ওই চারজনকে আদালতে প্রেরণ করে। আদালতে হাজির করা হলে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট মারুফ আহমেদ তাদের জামিন নামনজুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এদিন ঘটনার সময় ম্যানসেলের দেহরক্ষী জাফরসহ কয়েকজন পুলিশ দেখে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিণ বলেন, আমরা চাকরি জীবনে এমন পরিস্থিতিতে কখনো পড়িনি। অফিসে কর্মরত অবস্থায় এভাবে লাঞ্ছিত হতে হবো কখনো ভাবতে পারিনি।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) শফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, সরকারি অফিসে ঢুকে কাজে বাধা দেওয়া, কর্মকর্তাকে শস্নীলতাহানি, কর্মচারীতে মারপিট ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। আটককৃতদের আদালতে নিলে বিচারক কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃতরা সবাই পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। এদের নামে বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, হত্যাসহ মামলা রয়েছে
।
বিষয়টি নিশ্চিত করে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক-সার্কেল জুয়েল ইমরান জানিয়েছেন, আটক হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী ম্যানসেলের বিরম্নদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, অস্ত্র, চাঁদাবাজি ও মারামারিসহ দেড় ডজন মামলা রয়েছে।
.