নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরের বাঘারপাড়ায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে এক যুবকের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নাজমুল হক ওরফে বান্দা আলী (৩৫) যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার দোহাকুলা ইউনিয়নের ঠাকুরকাঠি গ্রামের নওশের আলীর ছেলে।
ঘটনার ১৫ মাসের মাথায় রোববার যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক গোলাম কবির এই ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেন। একই সাথে একলাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার রিক্তা খানম (৬) একই গ্রামের মুক্তার হোসেনের মেয়ে।
শিশুটি স্থানীয় ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত মক্তবভিত্তিক শিশু শ্রেণির ছাত্রী ছিল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশিস্নষ্ট আদালতের পিপি অ্যাড. সেতারা খাতুন।
আদালত সূত্র জানায়, যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার দোহাকুলা ইউনিয়নের ঠাকুরকাঠি গ্রামের মুক্তার হোসেনের মেয়ে রিক্তা খানমকে (৬) ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর সকাল থেকে খুঁজে পাচ্ছিল না তার পরিবার। বিভিন্ন স্থানে খোজাখুজির এক পর্যায় পুকুরেও সন্ধান করা হয়।
তাদের সাথে প্রতিবেশি নওশের আলীর ছেলে নাজমুলও খোঁজাখুজি করতে থাকে। এরমাঝে নাজমুলকে তার বাড়ির পাশের একটি ফাঁকা স্থানে গর্ত খুড়তে দেখতে পান প্রতিবেশীরা। সেখানেই রিক্তার একটি স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখে তাদের সন্দেহ হয়।
পরে নাজমুলকে জিজ্ঞাসা করলে সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে প্রতিবেশীরা তাকে ধরে ফেলে। এক পর্যায়ে সে স্বীকার করে রিক্তার লাশ তার নিজের ঘরের খাটের নিচে রাখা আছে। নাজমুল আরও জানায়, রিক্তাকে প্রথমে ধর্ষণ করে পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। এরপর লাশ পুতে রাখার জন্য গর্ত করছিল। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে একই সাথে নাজমুলকে আটক করে।
এ ঘটনায় রিক্তার বাবা মুক্তার আলী বিশ্বাস বাঘারপাড়া থানায় মামলা করেন। আটকের পর আদালতে সোপর্দ করা হলে হত্যা ও ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দেন নাজমুল। সেই থেকেই কারাগারে আটক রয়েছেন নাজমুল। এরমাঝে মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ১৭ মে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আওয়াল হোসেন।
এ মামলায় ১৬ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রোববার আদালত বাদী ও আসামির উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পর আদালত নাজমুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। মামলার বাদীসহ তার পরিবারের সদস্যরা এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। একই সাথে দ্রম্নত ফাঁসি কার্যকারের দাবি জানান।
আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। আসামি পড়্গ এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।