সমাজের কথা ডেস্ক : চট্টগ্রামের রাউজানে কলেজছাত্র শিবলী সাদিক হৃদয়কে (১৯) গলা কেটে হত্যা করেন উচিংথোয়াই মারমা। তখন হৃদয়ের দুই পা চেপে ধরে সহযোগিতা করেন ক্যাসাই অং চৌধুরী। হৃদয়কে হত্যার পর লাশ কলাপাতা দিয়ে ঢেকে রাখে হত্যাকারীরা। শুধু তাই নয়, লাশ যাতে শনাক্ত করতে না পারে সেজন্য ছুরি দিয়ে শরীর থেকে মাংসও আলাদা করে ফেলে তারা।
আজ পহেলা অক্টোবর সকালে চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব—৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলম। এর আগে, গত ১১ সেপ্টেম্বর অপহরণের ১৪ দিন পর পাহাড়ের গহীন অরণ্যে একটি গর্ত থেকে শিবলী সাদিক হৃদয় নামে ওই কলেজছাত্রের খণ্ড—বিখণ্ড মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনার পর গণপিটুনিতে উমংচিং মারমা নামে একজন নিহত হন। আটক হয় আরও দুইজন। পলাতক ছিল এ ঘটনায় জড়িত আরও দুই আসামি। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া যুবক উচিংথোয়াই মারমা ও তার অন্যতম সহযোগী ক্যাসাই অং চৌধুরীকে শনিবার গ্রেপ্তারের পর তারা র্যাবকে পুরো ঘটনার বর্ণনা দেয়।
র্যাব—৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহবুব আলম বলেন, ‘হৃদয়কে হত্যায় সরাসরি অংশ নেওয়া দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে উচিংথোয়াই মারমাকে পতেঙ্গা থানা এলাকা থেকে ও তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ক্যাসাই অং চৌধুরীকে নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
তিনি বলেন, মুরগিকে পর্যাপ্ত খাবার না দিয়ে বিক্রি করে দিত খামারে কর্মরত শ্রমিকরা। এ নিয়ে প্রতিবাদ করে পোল্টি্র খামারের ম্যানেজার হৃদয়। এ কারণে খামারে কর্মরত ওই শ্রমিকদের সঙ্গে তার কয়েক দফা বাগবিতণ্ডাও হয়। তখন থেকে শ্রমিকরা সিদ্ধান্ত নেয়— হৃদয়কে উচিত শিক্ষা দেবে। এজন্য তাকে খামার থেকে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যায়।
গ্রেপ্তার উচিংথোয়াই মারমা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, হৃদয়কে অপহরণের একদিন পর ২৯ আগস্ট বিকেলে রঙিন পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে হত্যা করা হয়। উচিংথোয়াই মারমা নিজেই ছুরি দিয়ে হৃদয়ের গলা কাটে। তার সহযোগী ক্যাসাই অং চৌধুরীসহ আরও চারজন হৃদয়ের হাত—পা এবং মুখ চেপে ধরে। অপহরণের সঙ্গে জড়িত ছিল শুধুমাত্র যারা খামারে কাজ করতো—তারাই। এদের মধ্যে উমংচিং মারমা ও অং থুই মারমা হৃদয়কে অপহরণের পরিকল্পনা করে। উচিংথোয়াই মারমা তার অন্যতম সহযোগী ক্যাসাই অং চৌধুরীকে বান্দরবান থেকে চট্টগ্রামে কাজ আছে বলে ডেকে আনে। তাদের দিয়ে হৃদয়কে হত্যা করা হয়। এরপর মাথাসহ শরীর বিচ্ছিন্ন করা হয়।