২রা ডিসেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
রঙ্গিন সুতোয় সাদাকালো জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালীগঞ্জ: তাঁত শিল্পের সাথে বহু পুরনো সম্পর্ক ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের হেলাই, বলিদাপড়া, মনোহরপুর, অনুপমপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের। একসময় এসব গ্রামের তাঁতি স¤প্রদায়ের লোকেরা ছিল বেশ সচ্ছল, সমৃদ্ধ ও স্বাবলম্বী। তখন তাঁতের কাপড়ের চাহিদা ছিল।

কিন্তু এখন বাস্তবতা হচ্ছে তাঁত বস্ত্রের চাহিদা আগের মতো নেই তাই আদি পেশা ত্যাগ করছে এই এলাকার তাঁতিদের বেশিরভাগ মানুষের। তাদের ব্যবহার্য সুতা রঙ্গিন হলেও জীবন সাদাকালোয় মোড়া। কালীগঞ্জ শহর থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার পথ গেলেই অনুপমপুর গ্রাম। সেখানে আজও মুখরিত হয় সেই তাঁত বুননের শব্দে।

কালীগঞ্জ উপজেলার অনুপমপুর গ্রামের এক সময়কার সচ্ছল তাঁত মালিক জামাত আলির অধীনে চলতো ১০টি তাঁত। পরিবারের সদস্যসহ আশেপাশের লোকজন নিয়ে এখানেই বুনন হতো শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা, ধুতিসহ নানান ধরনের পরিধেয় বস্ত্র। বর্তমানে এখন মাত্র ৪টি তাঁত নিয়ে চলছে তার ব্যবসা। পরিবারের অনেকেই তাঁতের ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন।

অনুপমপুরে এখন ১৮টি পরিবার চরকার চাকা ঘুরিয়ে ভাগ্যের চাকা সচল রাখতে ব্যস্ত। রফিকুল ইসলাম নামের আরেকজন তাঁতি জানান, তিনি ২টা তাঁত নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। পারিবারিক ভাবে স্ত্রী, পুত্র ও পুত্রবধূ নিয়ে এই কাজই করছেন, এ কাজেই জীবন জীবিকা নির্ভর করছে।

একটি তাঁতে প্রতিদিন ৪ থানে গামছা হয় ৮টা, পাইকারি মূল্য ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা তার দাম। এই গামছা তৈরির সুতা আনতে হয় কুষ্টিয়ার বিত্তীপাড়া থেকে। নিজেদের পরিশ্রম, সুতা, রং, চরকা, মাকুর খরচ দিয়ে পোষানো অনেক কষ্টের। তিনি আরও বলেন, তাঁতের সংখ্যা দিন দিন ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে।

তাজুল ইসলাম জানান, এখন শাড়ির কাজ হয়না বললেই চলে, কারণ শাড়ির খরচ পুষিয়ে মূল্য পাওয়া কষ্ট। তাঁতের একটি শাড়ি তৈরিতে সময় লাগে প্রকার ভেদে এক থেকে দুই দিন। শুধু কাঁচামালেই খরচ হয় ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। অথচ বিক্রি হয় ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা। তাঁতের শাড়ি থেকে মেশিনে তৈরি শাড়ির চাকচিক্য থাকে বেশি।

কালীগঞ্জ পৌর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আশাদুল ইসলাম বলেন, তাঁত শ্রমিকদের সময়োপযোগী কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় গতানুগতিক সনাতন পদ্ধতিতে পোশাক তৈরির ধারার বাইরে এসে আধুনিক রুচিসম্মত পোশাক তৈরি করতে কষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া মূলধনের সমস্যা তো রয়েছেই। তিনি আরও বলেন, তাঁত শিল্প রক্ষায় এ শিল্পের জন্যে সুতাসহ সব উপকরণের সহজলভ্যতা ও পর্যাপ্ত ঋণের ব্যবস্থা করা জরুরি। একই সাথে তাঁত শ্রমিকদের জন্যে প্রশিক্ষণ এবং এই শিল্পের অসুবিধাগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
Fri Sat Sun Mon Tue Wed Thu
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram