নিজস্ব প্রতিবেদক : বাড়ির ফ্যান, লাইট, টিভি, ফ্রিজ সবই চলছে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিল ওঠে না। কারণ বিদ্যুতের মিটারের তার টেম্পারিং করে সংযোগ বাইপাস করা হয়েছে। যশোরে এমন অভিনব বিদ্যুৎ চুরির চিত্র ধরা পড়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের অভিযানে। মঙ্গলবার যশোর শহরের দুটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনটি বাড়ি থেকে এমন ১৭টি মিটার জব্দ করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে ১৪ লক্ষাধিক টাকা। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, ‘সার্ভিস বাইপাস’র এই বিদ্যুৎ চুরিরোধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্প্রতি ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি. (ওজোপাডিকো) এ অভিযোগ আসে কিছু এলাকায় মিটার টেম্পারিং করে বিদ্যুৎ চুরি করা হচ্ছে। এই অভিযোগের সূত্র ধরে মঙ্গলবার বিদ্যুৎ বিভাগ যশোর শহরের ষষ্ঠীতলাপাড়া ও বেজপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ওই এলাকার বিভিন্ন বাড়ির মিটার পরীক্ষা করা হয়।
মিটার পরীক্ষাকালে দেখা যায়, বিদ্যুতের খুঁটি থেকে তার বাড়ির মিটারে সংযুক্ত হয়েছে। কিন্তু মিটারের প্রান্তের তারের আবরণ খুলে তার সংযুক্ত করে বাড়ির মধ্যে নেয়া হয়েছে। এই তারের বিদ্যুতেই চলছে বাড়ির ফ্যান, লাইট, টিভি, ফ্রিজসহ সবকিছু। বিদ্যুৎ বিভাগের ভাষায় এটিকে বলা হয় ‘সার্ভিস বাইপাস’। আর এই সার্ভিস বাইপাসে বাড়ির সবকিছু চললেও মিটারে বিদ্যুৎ বিল উঠছে না।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে শহরের ষষ্ঠীতলাপাড়ার বসন্ত কুমার সড়কের নওরোজ আলী ও টিংকু এবং রেলরোড এলাকার শাহবুদ্দিন খানের বাড়িতে এমন ১৭টি মিটার পাওয়া গেছে। যেগুলোর মিটারের তারে টেম্পারিং করা হয়েছে। একটি মিটার থেকে চারটি অবৈধ সংযোগের চিত্রও পেয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আদালতের অভিযান টের পেয়ে বাাড়ির পুরুষ সদস্যদের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
অভিযানকালে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা ওই তিন বাড়ির ১৭টি মিটারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে জব্দ করে। আর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তিন মালিককে ১৪ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা আক্তার মৌসুমীর নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে আরো উপস্থিত ছিলেন, ওজোপাডিকো’ লি. এর সহকারী প্রকৌশলী শামসুজ্জোহা, উপসহকারী প্রকৌশলী মিল্টন হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন, মুরারী মোহন ও সঞ্জয় কুমারসহ প্রশাসন এবং ওজোপাডিকোর কর্মকর্তা কর্মচারীগণ।
এ ব্যাপারে ওজোপাডিকো’ লি. এর সহকারী প্রকৌশলী শামসুজ্জোহা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ওই গ্রাহকরা ‘সার্ভিস বাইপাস’ করে বিদ্যুৎ চুরি করে আসছিলেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে সেটি ধরা পড়েছে। এ কারণে তিনটি বাড়ি থেকে ১৭টি মিটার জব্দ ও ১৪ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।