২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আদালত
যশোরে প্রথম ‘হেফাজতে মৃত্যু নিবারন’ আইনের ব্যবহার
319 বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : অবৈধভাবে আটকে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করে নেয়ার অভিযোগে বাঘারপাড়া থানার ওসি, বন্দবিলা ইউপি চেয়ারম্যান ও খাজুরা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। বাঘারপাড়া উপজেলার তেলিধান্যপুড়া গ্রামের বৃদ্ধ আব্দুল হাই গতকাল এই মামলাটি করেছেন।

যশোর আদালতে ‘হেফাজতে মৃত্যু নিবারন’ আইনে প্রথম দায়ের মামলায় বিচারক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অবন্তিকা রায় সিভিল সার্জনকে নির্যাতনের চিহ্ন উল্লেখ পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল এবং পুলিশ সুপারকে মামলা গ্রহণপূর্বক আদালতকে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী মীর্জা সাহেদ আলী চঞ্চল।


মামলার আসামিরা হলেন, বাঘারপাড়া থানার ওসি শাহাদৎ হোসেন, খাজুরা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই অভিজিৎ সিংহ রায়, বন্দবিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সবদুল হোসেন খান ও ফরিদুপুরের সদরপুর গ্রামের মৃত হাজী রোকনুদ্দিন শরীফের ছেলে সাওয়ার শরীফ।


এজহারে উল্লেখ রয়েছে, বাদী বৃদ্ধ আব্দুল হাই এজমা, মেরুদন্ড, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিকসের রোগী। গত ২১ জুন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খাজুরা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ আব্দুল হাইয়ের মোবাইল ফোনে রিং করে জানান, বাঘারপাড়া থানার ওসি তাকে বন্দবিলা ইউনিয়ন পরিষদের দ্রুত গিয়ে দেখা করতে বলেছেন। এরপর আব্দুল হাই বন্দবিলা ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখেন চেয়ারম্যান সবদুল হোসেন খান, ওসি শাহাদৎ হোসেন, খাজুরা ক্যাম্পের এসআই অভিজিৎ রায় এবং অপরিচিত এক ব্যক্তি সেখানে বসে আছেন।

ওসির আত্মীয় সারওয়ার শরীফ আব্দুল হাইয়ের ছেলে ইফতেখারের কাছে ৫ লাখ টাকা পাবে বলে তাৎক্ষণিক টাকা পরিশোধ করতে বলেন। এরমধ্যে ওসি ও এসআই অভিজিৎ ভয়ভীতি দেখিয়ে হয়রানি মূলক মিথ্যা মামলা দেয়া হবে বলে হুমকি দিতে থাকেন। একই সাথে তারা আব্দুল হাইকে আটকে রেখে মানসিক নির্যাতন করে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করেন।

পাশাপাশি চেয়ারম্যানের প্যাডে আগে থেকে লেখা থাকে আব্দুল হাইয়ের ছেলে ইফতেখারের কাছে ৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা পাবে বলে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করানোর চেষ্টা করেন। আর ওই অঙ্গীকার নামায় লেখা ছিল ৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আগামি ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরিশোধ না করলে আব্দুল হাই ও তার ছেলে ইফতেখারের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন।


বাদির অভিযোগ, আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে হেফাজতে মৃত্যু নিশ্চিত এবং টাকা আদায়ের জন্য অপকৌশল অবলম্বন করে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এরপর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি বাড়ি এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ মুশফিকুর রহমানের চিকিৎসা গ্রহণ করেন। বিষয়টি তিনি স্বাক্ষীদের জানিয়ে আদালতে এই মামলাটি করেছেন।
হেফাজতে মৃত্যু নিবারন আইন ২০১৩ এ যশোর আদালতের এটি প্রথম মামলা।


বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে বাদী আব্দুল হাইকে হেফাজতে মৃত্যু নিবারন আইন ২০১৩ এর ৪ (১)(খ) বিধানমতে একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসক দ্বারা অভিযোগকারীর দেহে নির্যাতন এবং জখমের চিহ্ন পরীক্ষা পূর্বক সম্ভাব্য সময় উল্লেখ পূর্বক একই ধারায় ৪ (২) ধারামতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে রিপোর্ট প্রস্তুত করার জন্য সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি সেই প্রতিবেদনের কপি অভিযোগকারী অথবা তার মনোনীত ব্যক্তিকে প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।


এছাড়া নির্যাতনের ঘটনার পর তার কোন চিকিৎসার প্রয়োজন হলে সাথে সাথে হাসপাতালে ভর্তি করে নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। সিভিল সার্জনের প্রতিবেদন অনতিবিলম্বে পুলিশ সুপারকে প্রেরণ করার আদেশ দিয়েছেন। প্রতিবেদন পেয়ে পুলিশ সুপার হেফাজতে মৃত্যু নিবারন আইন ২০১৩ এর ৫ এর (১) ধারামতে মামলা রুজু করে আদালতে অবহিত করবেন বলে আদেশ দেয়া হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram