নিজস্ব প্রতিবেদক : কাঁটাতারের বেড়া দুই দেশের সীমাšত্ম রেখাকে পৃথক করলেও দুই বাংলার শিল্প-সংস্কৃতিতে ছেদ ঘটাতে পারেনি। যশোরে দুই বাংলার শতাধিক শিল্পীর দু’টি চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে যশোর শিল্পকলা একাডেমিতে ও বিকেলে প্রাচ্যসংঘে এ দু’টি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়।
যশোর শিল্পকলা একাডেমিতে ভাষার মাসে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশে আয়োজন করা হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশের শিল্পীদের আঁকা ছবির যৌথ প্রদর্শনী ‘রিদম অফ লাইফ’।
এতে প্রাধান্য পেয়েছে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। রঙ তুলির আঁচড়ে শিল্প-সংস্কৃতির আবেগ, ভালবাসা ফুটিয়ে তুলছেন দুই বাংলার শিল্পীরা। এই উদ্যোগ দুই দেশের শিল্পচর্চা ও বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন সংশিস্নষ্টরা।
মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি ভাস্কর্য ফাউন্ডেশন, স্বনাধীতি ও এস্থেটিক আর্ট ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে যশোর শিল্পকলা একাডেমির আর্ট গ্যালারিতে দুদিনের যৌথ কর্মকশালা ও চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে উদ্বোধন করেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য।
বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কর্মশালা ও চিত্র প্রদর্শনীতে দুই দেশের ২৪জন চিত্রশিল্পী অংশ নিয়েছেন। তাদের শিল্পকর্মে প্রাধান্য পেয়েছে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। দুই বাংলার মানুষের ভাষা, সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাসের তেমন কোন পার্থক্য নেই।
কাঁটাতারের বেড়া দুই দেশকে বিভক্তি করলেও আতি¥ক সম্পর্কে ছেদ ঘটেনি। দুই বাংলার সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে এই উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন ভারতীয় শিল্পীরা।
ছবির প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া তপন কুমার দাস নামে কলকাতার এক শিল্প শিল্পী বলেন, ভাষার মাসে এমন আয়োজনে অংশ নিতে পেরে খুশি দুই বাংলার শিল্পীরা। দুই দেশের শিল্পীদের মিলনমেলায় শিল্প ও সংস্কৃতি চর্চার আরও বেগবান হবে।
এই ছবির প্রদর্শনীর মূলউদ্যোক্তা চিত্রশিল্পী আশরাফ হোসেন বলেন, দুই বাংলার মানুষের ভাষা একই। তাই ভাষার মাসে দুই বাংলার শিল্পীদের অংশগ্রহণে এই যৌথ কর্মশালা ও চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলা ভাষার চর্চা আরও সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে এই যৌথ চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজন নিয়ে যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, সংস্কৃতি চর্চার অগ্রসর জেলা যশোর। দুই বাংলার শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত যৌথ কর্মশালা ও চিত্রপ্রদর্শনী সংস্কৃতি বিকাশের গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি মনে করি।
এদিকে, এদিন বিকালে চারদিন ব্যাপী যশোরের প্রাচ্যসংঘের গ্যালারিতে সর্বভারতীয় সঙ্গীত ও সংস্কৃতি পরিষদের তৃতীয় আšত্মর্জাতিক চিত্র প্রদর্শনী ও শিল্প শিবির ‘মৈত্রী চিত্রভাস’ উদ্বোধন করা হয়েছে। মৈত্রী চিত্রভাস’ উদ্বোধন করেন খ্যাতিমান তরম্নণ শিল্পী অকালপ্রয়াত সোহেল প্রাণনের মা সালেহা বেগম।
আšত্মর্জাতিক এই চিত্র প্রদর্শনী ও শিল্প শিবিরে ভারত ও বাংলাদেশের ৮০ জন শিল্পী তাদের চিত্রকর্মসহ অংশ নিয়েছেন। প্রাচ্যসংঘের প্রতিষ্ঠাতা বেনজীন খান জানান, এ প্রদর্শনীর মূল আয়োজক সর্বভারতীয় সঙ্গীত ও সংস্কৃতি পরিষদ। আর এটা তাদের তৃতীয় আšত্মর্জাতিক চিত্র প্রদর্শনী।
যশোরে এ আয়োজনকে সর্বাত¥ক সহযোগিতা দিচ্ছে প্রাচ্যসংঘ। চারদিনের চিত্র প্রদর্শনী ও শিল্প শিবির প্রাচ্য আকাদেমির প্রাচ্য গ্যালারি, ওবায়দুল বারী হল (প্রাচ্য অডিটোরিয়াম) ও পুরো প্রাচ্যসংঘ ক্যাম্পাসজুড়ে চলবে। আšত্মর্জাতিক এ প্রদর্শনীটিও সোহেল প্রাণনের নামেই উৎসর্গ করা হয়েছে।