নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরে ১৭ দিনব্যাপী দ্বিতীয় দক্ষিণ এশীয় নাট্যোৎসবের উদ্বোধন হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যশোর শহরের টাউন হল মাঠে উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট নাট্যজন ও অভিনেতা সালাউদ্দীন লাভলু ও মাসুম রেজা। যশোরের থিয়েটার ক্যানভাস আয়োজিত উৎসবের উদ্বোধক মাসুম রেজা বলেন, আপনার সন্তানদের থিয়েটারে যোগ দিতে দিন। আপনার সন্তান বিকশিত হবে; মানুষ হয়ে উঠবে। এই আয়োজনের জন্যে থিয়েটার ক্যানভাসকে টুপিখোলা সম্মান জানান তিনি।
আরেকজন উদ্বোধক সালাউদ্দীন লাভলু বলেন, আমরা ঢাকার লোকজনও ১৭ দিনব্যাপী নাট্যোৎসব আয়োজনের কথা ভাবতে পারি না। সেখানে যশোরের নবীবতম একটি নাট্যদল থিয়েটার ক্যানভাস সেই সাহস দেখাচ্ছে। নাটকের মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাজ বিনির্মাণের যে উদ্যোগ তারা নিয়েছে তারজন্যে আমি আপ্লুত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নাট্যোৎসব উদযাপন পর্ষদের সদস্য সচিব কামরুল হাসান রিপন বলেন, ‘সংস্কৃতি জাগরূক প্রাণ— থিয়েটার শিখা অনির্বাণ’ ে¯¬াগানকে সামনে রেখে এ নাট্যোৎসবে প্রতিদিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের প্রথিতযশা ১৬টি নাট্যদল তাদের নাটক মঞ্চস্থ করবে। জেলা শিল্পকলা একাডেমি মঞ্চে প্রতিদিন সন্ধ্যায় এই নাটক মঞ্চস্থ হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর টাউন হল মাঠে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের পরিবেশনায় মঞ্চস্থ হয় যাত্রাপালা ‘বিদ্রোহী মাইকেল মধুসূদন’।
এরআগে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার। আবৃত্তি শিল্পী ও মঞ্চ অভিনেতা আবদুল আফফান ভিক্টরের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকার নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাফিসা সুলতানা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কামাল উদ্দীন কবির, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বুলু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দীপংকর দাস রতন, সাংবাদিক সাজেদ রহমান প্রমুখ।
বিকালে টাউন হল ময়দান থেকে অতিথিবৃন্দ শোভাযাত্রা বের করেন। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে যেয়ে শেষ হয়।
শুক্রবার জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে ঢাকা নাটুকে থিয়েটার গ্রুপের প্রযোজনায় ‘ঠাকুর ঘরে কে রে’, পরদিন ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশ নাটক ঢাকার প্রযোজনায় ‘পারাপার’, ২৬ ফেব্রুয়ারি শব্দ থিয়েটার যশোরের প্রযোজনায় ‘শয়তান’, ২৭ ফেব্রুয়ারি— থিয়েটার ক্যানভাস যশোরের প্রযোজনায় ‘ওথেলো রিটার্নস’, ২৮ ফেব্রুয়ারি— বিবর্তন যশোরের প্রযোজনায় মাতব্রিং, ২৯ ফেব্রুয়ারি— শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্র ঢাকার প্রযোজনায় ‘কী চাহ শঙ্খচিল’, ১ মার্চ বাতিঘর থিয়েটার ঢাকার প্রযোজনায় ‘মাংকি ট্রায়াল’, ২ মার্চ প্রাচ্যনাট্য ঢাকার প্রযোজনায় ‘কইন্যা’, ৩ মার্চ— ভারতের মধ্যমগ্রামের নৃত্যবিতানের প্রযোজনায় ‘ওয়ান ফ্রাইডে মর্নিং’, ৪ মার্চ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের অভিমুখ’র প্রযোজনায় ‘অনাগত’, ৫ মার্চ তির্যক যশোরের প্রযোজনায় ‘মহাকবি মাইকেল’, ৬ মার্চ— ফেইম স্কুল অব ডান্স, ড্রামা অ্যান্ড মিউজিক চট্টগ্রামের প্রযোজনায় ‘ইডিপাস’, ৭ মার্চ— কথাঘেরা নেপালের প্রযোজনায় ‘উলঝান’ ৮ মার্চ— জাগরনী থিয়েটার ঢাকার প্রযোজনায় ‘রাজার চিঠি' এবং সমাপনী দিন ৯ মার্চ মঞ্চস্থ হবে জেলা শিল্পকলা একাডেমি যশোরের প্রযোজনায় নাটক ‘শর্মিষ্ঠা’।