নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোর শহরের গুরুত্বপূর্ণ লোকালয়ে ২০টি বীজ ব্যাংক বুথ স্থাপন করা হয়েছে। ব্যতিক্রমী এই বুথের মাধ্যমে ফল খাওয়ার পর ফেলে দেয়া আঁটি সংগ্রহ করা হবে। পরবর্তীতে তা চারা উৎপাদন করে রোপন করা হবে। এমনই পরিকল্পনায় ‘আইডিয়া বীজ ব্যাংক’ স্থাপন করেছে যশোরের শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন-আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থা। বুধবার দুপুরে এই বীজ ব্যাংকের উদ্বোধনের পর ২০টি বুথ স্থাপন করা হয়।
‘আপনার ফেলে দেওয়া ফলের বীজ, আগামী দিনের অক্সিজেন ফ্যাক্টরি’-এ ¯ে¬াগান নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে ‘আইডিয়া বীজ ব্যাংক’। এই বীজ ব্যাংকের মাধ্যমে ফলের উচ্ছিষ্ট বীজ সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে সেগুলো রোপণ করা হবে। বুধবার দুপুরে ভোলা ট্যাঙ্ক রোডে (যশোর জিলা স্কুল এর সামনে) বীজ ব্যাংকের বুথ স্থাপনের মধ্য দিয়ে এই প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা হয়।
আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থার প্রধান উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক হামিদুল হক জানান, প্রাথমিকভাবে তারা যশোর শহরের গুরুত্বপূর্ণ লোকালয়ে পাইলটিং হিসেবে ২০টি বীজ ব্যাংক বুথ স্থাপন করেছেন। মানুষের আগ্রহ সাপেক্ষে শতাধিক এমন বীজ ব্যাংক বুধ তৈরির পরিকল্পনা তাদের রয়েছে। আইডিয়া বীজ ব্যাংকের বুথে জমা হওয়া বীজ আইডিয়ান’রা নিজ উদ্যোগে বপনের পাশাপাশি কোনো নার্সারি মালিক কিংবা বৃক্ষপ্রেমী বপনে আগ্রহী হলে তাদের কাছে বিনামূল্যে পৌঁছে দেবে।
মো. হামিদুল হক আরও বলেন, “আইডিয়া বীজ ব্যাংক জনসচেতনতা তৈরী করার জন্য শিক্ষার্থীদের ক্ষুদ্র একটি প্রচেষ্টা । ফল খেয়ে আঁটি যত্রতত্র ফেলে না দিয়ে বপন করলেই পরবর্তীতে তা গাছে রূপ নেবে; এভাবে আমাদের প্রত্যেকের বাড়ির আঙিনায় যদি বীজ বপন করা হয় তাহলে প্রকৃতি হয়ে উঠবে বাসযোগ্য। আর যাদের বাড়ির আঙিনায় করার সুযোগ নেই তাদের জন্য আইডিয়ার এই বীজ ব্যাংক। মূলত বীজকে বাঁচাতে হবে নিজেদের স্বার্থে, এটিই পারবে আমাদের পরিবেশের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে ও পরবর্তীতে অক্সিজেন সরবরাহ করবে।’
আইডিয়া বীজ ব্যাংকের সমন্বয়ক দীপ্ত সিংহ জানান, ‘বিশুদ্ধ বাতাসের অভাব এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে প্রতিনিয়ত। অথচ আমরা-ই পারি এ থেকে নিজেদের মুক্তি দিতে। আমাদের এই ছোট্ট উদ্যোগ দেখে প্রত্যেকে যদি তাদের নিজ এলাকা কিংবা বসতবাড়িতে এই বীজ ব্যাংক গড়ে তোলে তাহলে আমাদের প্রকৃতি সবুজে ছেয়ে যাবে!’
আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি সোমা খান বলেন, ‘আনন্দ হচ্ছে আমার সংগঠন এমন একটি কাজ করছে ভেবে! না বুঝে প্রতিদিন আমরা কতো আঁটি ফেলে দিই, অথচ বিনামূল্যে ওই আঁটিই হতে পারে ভবিষ্যতে আমাদের অক্সিজেন ব্যাংক। সকল স্বেচ্ছাসেবীসংগঠনের কাছে আহবান, তারাও এই কাজে অংশ নিয়ে পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসুক।’