নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরের ৬টি সংসদীয় আসনের চারটিতে নৌকা ও দু’টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। বিজয়ীরা হলেন, যশোর—১ (শার্শা) আসনে শেখ আফিল উদ্দিন (নৌকা), যশোর—২ (ঝিকরগাছা—চৌগাছা) আসনে ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন (নৌকা), যশোর—৩ (সদর) আসনে কাজী নাবিল আহমেদ (নৌকা), যশোর—৪ (অভয়নগর—বাঘারপাড়া) আসনে এনামুল হক বাবুল (নৌকা), যশোর—৫ (মণিরামপুর) আসনে ইয়াকুব আলী ( আ’লীগ স্বতন্ত্র) ও যশোর—৬ (কেশবপুর) আসনে আজিজুল ইসলাম (আ’লীগ স্বতন্ত্র)।
রোববার ভোটগ্রহণের পর গণনা শেষে রাত ১০টার দিকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, যশোর—১ শার্শা আসনে নৌকার প্রার্থী শেখ আফিল উদ্দিন এক লাখ ৫ হাজার ৪৬৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। আফিল উদ্দিনের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বেনাপোলের সাবেক মেয়র আশরাফুল আলম লিটন পেয়েছেন ১৯ হাজার ৪৭৭ ভোট। এই আসনের অপর প্রার্থী জাতীয় পার্টির মো. আক্তারুজ্জামান লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন দুই হাজার ১৫১ ভোট। যদিও রোববার সকাল ১১টায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন ৫৫টি কেন্দ্রে অনিয়ম, পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ এনে সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
যশোর—২ চৌগাছা—ঝিকরগাছা আসনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৬ হাজার ৩৫৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিন্দ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী অ্যাড. মনিরুল ইসলাম মনির পেয়েছেন ৭৫ হাজার ৮৮২ ভোট। এই আসনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা এস এম হাবিব ঈগল প্রতীকে ২২২ ভোট, জাতীয় পার্টির ফিরোজ শাহ লাঙ্গল প্রতীকে এক হাজার ৯৫০ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আব্দুল আওয়াল ডাব প্রতীকে এক হাজার ২৪৫ ভোট ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট—বিএনএফের শামছুল হক টেলিভিশন প্রতীকে ১২ শ’ ভোট পেয়েছেন।
যশোর—৩ সদর আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কাজী নাবিল আহমেদ এমপি পেয়েছেন এক লাখ ২১ হাজার ৭২০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী মোহিত কুমার নাথ পেয়েছেন ৬৪ হাজার ৫১১ ভোট। এই আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মারুফ হাসান কাজল কুলা প্রতীকে পেয়েছেন ৫৫৫ ভোট, জাতীয় পার্টির মাহবুব আলম লাঙ্গল প্রতীকে ৩ হাজার ৭১০ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির অ্যাড. সুমন কুমার রায় আম প্রতীকে ৬৩৩ ভোট, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. তৌহিদুজ্জামান বটগাছ প্রতীকে এক হাজার ২৪৬ ভোট, তৃণমূল বিএনপির মো. কামরুজ্জামান সোনালী অঁাশ প্রতীকে ৩৮৯ ভোট ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের শেখ নুরুজ্জামান নোঙর প্রতীকে ২২৪ ভোট পেয়েছেন।
যশোর—৪ (বাঘারপাড়া অভয়নগর বসুন্দিয়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত এনামুল হক বাবুল নৌকা প্রতীক নিয়ে এক লাখ ৮১ হাজার ২৯৫ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাতীয় পার্টির জহুরুল হক লাঙ্গল প্রতীকে ১০ হাজার ৩৪৬ ভোট পেয়েছেন। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে বর্তমান এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী রণজিৎ কুমার রায় ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ৫৮৬ ভোট। এছাড়া এই আসনে তৃণমূল বিএনপির অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল এম শাব্বির আহমেদ সোনালি আঁশ প্রতীকে এক হাজার ৬৬৬ ভোট, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সুকৃতি কুমার মন্ডল নোঙ্গর প্রতীকে ৪২৩ ভোট, ইসলামী ঐক্যজোটের ইউনুস আলী মিনার প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ১৫৩ ভোট।
যশোর—৫ (মণিরামপুর) আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াকুব আলী ঈগল প্রতীকে নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি ভোট পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৪৬৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচায্যর্ নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৭২ হাজার ৪৬৮ ভোট। এছাড়া এই আসনে সরে দাঁড়ানো তৃণমূল বিএনপির আবু নসর মোহাম্মদ মোস্তফা সোনালি অঁাশ প্রতীকে ২৩৬ ভোট, ইসলামী ঐক্যজোটের হাফেজ মাওলানা নুরুল¬াহ আব্বাসী মিনার প্রতীকে ৮০৬ ভোট ও জাতীয় পার্টির এম এ হালিম লাঙ্গল প্রতীকে ৬২৪ ভোট পেয়েছেন।
যশোর—৬ (কেশবপুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আজিজুল ইসলাম ঈগল প্রতীকে ৪৮ হাজার ৯৪৭ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহীন চাকলাদার নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯ হাজার ২৬৯ ভোট। এখানে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী এইচ এম আমির হোসেন কাঁচি প্রতীকে পেয়েছেন ১৭ হাজার ২০৯ ভোট। এছাড়া অপর প্রার্থী জাতীয় পার্টির জি এম হাসান লাঙ্গল প্রতীকে ৬৪০ ভোট পেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোরের ৬টি সংসদীয় আসনে ভোটযুদ্ধে নামেন ৩২ জন প্রার্থী। নৌকার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র ৮ প্রার্থী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।