নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের শেষদিন বৃহস্পতিবার রাতে যশোরে বিআরটিসি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে শহরের মণিহার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
আগুনে পুরো বাসটি পুড়ে গেছে। তবে পার্কিং করে রাখা বাসটিতে যাত্রী না থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিক নেতারা জানান, বিআরটিসির এই যাত্রীবাহী বাসটি শুক্রবার সকাল ৭টায় মণিহার থেকে ভোলার চরফ্যাশানের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে বাসটি শহরের মণিহার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এনে পার্কিং করে রাখেন চালক।
এরপর গাড়িটিতে মোটরপার্টস তোলা হয়। এরপর চালক ও হেলপার গাড়ি থেকে নেমে যান। রাত পৌনে ১১টার দিকে হঠাৎ করে গাড়ির পেছনের অংশে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখেন আশপাশের লোকজন। দ্রুত আগুন পুরো বাসে ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে দ্রম্নত ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। কিন্তু এরই মধ্যে বাসের সিংহভাগই পুড়ে যায়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এদিকে, বাসে আগুনের খবর পেয়ে পুলিশ, ডিবি, র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারা বাসের চালক, হেলপার, প্রত্যক্ষদর্শীসহ স্থানীয় শ্রমিকনেতাদের সাথে কথা বলেন।
বাসটির চালক মিলন হাওলাদার জানান, তিনি গাড়িটি পার্কিং করে রেখে গোছল করতে গিয়েছিলেন। এরই মধ্যে আগুনের খবর পেয়ে ছুটে আসেন। এসে দেখেন গাড়ির পেছন ও উপরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।
গাড়ির হেলপার মাসুম বিল্লাহ বলেন, ভোলায় নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়িতে পার্টসপাতি তোলার পর তিনি সামনের দিকে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে লোকজনের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে তিনি ফিরে এসে দেখেন বাসে আগুন জ্বলছে। কারা আগুন দিলো, বা কিভাবে আগুন ধরলো তা তিনি দেখেননি।
যশোর জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের কয়েকজন নেতা জানান, বিআরটিসি বাসটি কাউন্টার থেকে একটু দূরে বিপরীত দিকে পার্ক করে রাখা ছিল। সেখানে তেমন লোকজনের উপস্থিতি ছিল না। এরই মধ্যে বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
তিনি দাবি করেন, বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের মধ্যে মণিহার এলাকায় যাতে কোনো নাশকতা না হয় সেদিকে শ্রমিক কড়া অবস্থান ছিল। এ কারণে যশোরে অবরোধের তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। এজন্য মরিয়া হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি জামায়াত ক্যাডাররা এ ঘটনা ঘটাতে পারে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন বলেন, বিআরটিসি বাসে আগুন দেয়ার খবর পেয়ে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তারা বাসের চালক, হেলপারসহ প্রত্যড়্গদর্শীদের সাথে কথা বলেছেন। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
যারা এই নাশকতার সাথে জড়িত তাদের চিহ্নিত করতে পুলিশ, ডিবি, র্যাব সবাই একযোগে কাজ শুরু করেছে। দ্রুতই তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।